দুসপ্তাহের লড়াই শেষ। মৃত্যু হল উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে গণধর্ষণ এবং নৃশংস শারীরিক নির্যাতনের শিকার দলিত যুবতীর। মঙ্গলবার সকালে দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে লড়াই শেষ হয় তাঁর।
ওই ঘটনা মনে করিয়ে দিয়েছে আট বছর আগে দিল্লিতে নির্ভয়া গণধর্ষণের স্মৃতি। হাথরসের যুবতীকেও গণধর্ষণের পাশাপাশি তাঁর উপর নৃশংস অত্যাচার চালায় দুষ্কৃতীরা। আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (জেএনএমসি)-এ চিকিৎসা চলছিল তাঁর। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় সোমবার স্থানান্তরিত করা হয় দিল্লির সফদর জং হাসপাতালে। সেখানেই মঙ্গলবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। দলিত সম্প্রদায়ের ওই মহিলাকে ধর্ষণের ঘটনায় চার অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃত চার জনই উচ্চবর্ণের।
Hathras gang-rape victim was admitted at Safdarjung hospital for better healthcare facilities. She died today morning. More details are awaited: Safdarjung hospital official https://t.co/B67W9ceOlA
— ANI (@ANI) September 29, 2020
আরও পড়ুন: কেন্দ্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা! কংগ্রেস শাসিত রাজ্যে নয়া কৃষি আইন উপেক্ষার ডাক সোনিয়ার
জেএনএমসি হাসপাতালের চিকিৎসকদের সূত্রে খবর, ধর্ষণে বাধা দেওয়ায় নির্মম অত্যাচার চালানো হয়েছে মহিলার উপর। প্রচণ্ড মারধর করা হয়েছে। শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টাও করে দুষ্কৃতীরা। মুখমণ্ডলে একাধিক জায়গা, জিভে কামড়ের গভীর ক্ষত। শিরদাঁড়া ও ঘাড় মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। অসাড় ছিল দুই পা এবং একটি হাত। আইসিইউ-তে রেখে সব রকম চেষ্টা চালানো হচ্ছিল। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় সিদ্ধান্ত হয় দিল্লির হাসাপাতালে পাঠানোর।
নির্যাতিতার ভাই বলেন, ‘‘গত ১৪ সেপ্টেম্বর হাথরস এলাকায় বাড়ির কাছেই একটি জমিতে মা ও আমার সঙ্গে জমিতে ঘাস কাটতে গিয়েছিলেন দিদি। বিকেলের দিকে আমি বাড়িতে চলে আসি। মায়ের থেকে কিছুটা দূরে ছিলেন দিদি। সেই সময় পিছন থেকে দিদিকে আক্রমণ করে কয়েক জন দুষ্কৃতী। গলায় ওড়না পেঁচিয়ে টানতে টানতে একটি বাজরা খেতের মধ্যে নিয়ে গিয়ে নৃশংস অত্যাচার চালায় ও গণধর্ষণ করে। পরে মা খুঁজতে খুঁজতে দিদিকে উদ্ধার করেন অচৈতন্য অবস্থায়।’’
পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছে নিহত যুবতীর পরিবার। যুবতীর ভাই বলেন, ‘‘পুলিশ প্রথমে আমাদের কোনও কথাই শুনতে চায়নি। দ্রুত পদক্ষেপ করেনি। ঘটনার চার-পাঁচ দিন পর তদন্ত শুরু করেছে।’’ যদিও হাথরসের পুলিশ অফিসার প্রকাশ কুমার বলেন, ‘‘ঘটনার পরে পরেই প্রথমে গ্রেফতার করা হয় এক জনকে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বাকি তিন জনের নাম জানার পর দ্রুত তাদেরও ধরা হয়েছে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ, খুনের চেষ্টা, তফসিলি জাতি ও জনজাতি আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। সমস্ত তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করে চলছে চার্জশিট তৈরির প্রক্রিয়া। তবে যুবতীর মৃত্যুর পর এ বার খুনের চেষ্টার বদলে খুনের মামলা দায়ের করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
আরও পড়ুন: রামলীলা হবে, তবে প্যান্ডেল করে দুর্গাপুজো নয়, যোগীর ঘোষণা ঘিরে বিতর্ক