মেহবুবা মুফতি ছাড়া পাওয়ার দুই দিনের মধ্যেই ৩৭০ ধারা ফেরানোর দাবিতে এক ছাতার তলায় এল পিডিপি, এনসি ও অন্যান্য বড় দল। জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে আনতে ও ৩৭০ ধারা ফেরানোর লক্ষ্যে পিডিপির সঙ্গে জোট বাঁধার কথা ঘোষণা করলেন ফারুক আবদুল্লা। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন সাজ্জাদ লোন ও অন্যান্য গোষ্ঠীগুলিও।এই জোটের নাম হয়েছে পিপলস অ্যালায়েন্স ফর গাপকার ডিক্লারেশন।
We have named this alliance as People's Alliance for Gupkar Declaration. Our battle is a constitutional battle, we want the government of India to return to the people of the State the rights they held before 5th Aug 2019: National Conference president Farooq Abdullah https://t.co/UuctoN13Km pic.twitter.com/6ADqSsxYrz
— ANI (@ANI) October 15, 2020
বৃহস্পতিবার ফারুক আবদুল্লা সংবাদমাধ্যমে বলেন, আমাদের এই জোটের নাম হবে ‘পিপিলস অ্যালায়েন্স ফর গাপকার ডিক্লিয়ারেশন’। কেন্দ্রের সঙ্গে আমাদের লড়াই হবে সাংবিধানিক লড়াই। আমার চাই ২০১৯ সালের ৫ অগাস্টের আগে আমাদের যে অধিকার ছিল তা ফিরিয়ে দিক কেন্দ্র।
আরও পড়ুন : ‘অনুদান কি শুধু দুর্গাপুজোতে? ঈদে দিয়েছিলেন?’ রাজ্য সরকারকে প্রশ্ন আদালতের
এক সময়ে বিজেপির হাত ধরায় মেহবুবার কট্টর সমালোচক ছিলেন ফারুক আবদুল্লা। এখন আর তা নেই। এবার জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা ফেরাতে লড়বে জোট।
কাশ্মীরিদের সম্পর্কে সমতলের মানুষ সর্বদায় উদাসীন। তাদের কাছে কাশ্মীর মানে স্বর্গীয় সৌন্দর্য দুচোখ ভোরে দেখা। এই মানুষগুলোর অধিকাংশের ভাবখানা হল কাশ্মীর আমাদের, কিন্তু কাশ্মীরিরা নন।কাশ্মীরি মানে যেন জঙ্গি। তারা পাকপন্থী ! তারা বন্দুক ছাড়া কিছু বোঝে না। সেই কোন কাল থেকে সমতলের মিডিয়া দিনের দিনের পর এমন প্রচার করেছে। কাশ্মীর মানে মুসলিমদের জায়গা। মুসলিমদের আধিপত্য। সেখানে হিন্দুদের জায়গা নেই। অথচ এটা হিন্দুস্থান। কিন্তু কেন কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা ছিল, তা মিডিয়া কোনওকালে প্রচার করেনি। কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের ছককষা হয়েছিল বহু আগে থেকেই। তা কেবল মোদী সরকারের আধিপত্যবাদের ফসল নয়। হিন্দুত্বের আধিপত্য প্রবণতা কংগ্রেস আমলেই ছিল। অধিকাংশ অপপ্রচার তখনই হয়েছে।
কংগ্রেস বিজ বুনেছিল। বিজেপি কেটেছে। ওই জিএসটির মত। আধার কার্ড টাইপ। কংগ্রেস শুরু করেছিল। বিজেপি শেষ করেছে। দিনের পর দিন সমতলের মানুষকে বোঝানো হয়েছে কাশ্মীরে মুসলিমরা দখল করে রয়েছে। এত সুন্দর একটা জায়গা ওদের দখলে। না ঠিক এইভাবে লেখা হয়নি কোনও প্রতিবেদন। কিন্তু বিদ্বেষের সুপ্ত প্রচার ও ইঙ্গিত বুঝতে অনেকেরই অসুবিধা হয় না। সে কারণেই কাশ্মীরিদের সমস্যা আমাদের কাছে ফিলিস্তিনিদের সমস্যার সমতুল্য। তারা যেন অন্য দেশের বাসিন্দা।
কাশ্মীরের এই অবস্থার পিছনে ফারুক কিংবা মেহবুবাদের ভূমিকাও কম নয় । বিজেপির মত একটা দলকে সঙ্গে নিয়ে সরকার চালাতে নেমেছিলেন মেহবুবা। তাঁর বাবার প্রতি কংগ্রেস কি আচরণ করেছিল তা বেমালুম ভুলে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধেছিলেন ফারুক। সেই শাপমোচন তো করতেই হবে! এই লড়াই ছাড়া তাদের হাতে আর কোনও উপায় নেই। ওদের অবস্থা মোদী জমানার বাতিল হওয়া নোটের মতই। নিজেদের অস্তিত্বের জন্য ওঁরা হয়তো আরও একবার চেষ্টা করবেন।
কিন্তু তাতে সাফল্য আসা কার্যত অসম্ভব। বরং এই নেতৃত্ব সামনে আসার পর সাময়িকভাবে কাশ্মীরের অশান্ত রূপ আর একবার মিডিয়া সামনে আনবে। বলা হবে এতদিন কাশ্মীর ঠান্ডা ছিল। মেহবুবার মুক্তির পর তা আবার উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। পাকিস্তানের ভূমিকা ফের একবার জুড়ে যাবে। পরিশেষে চীন, পাকিস্তান, কাশ্মীর এবং মেহবুবা-ফারুক নিয়ে একটা নতুন প্লট তৈরী হবে। কিছুদিনের মধ্যে হয়ত তা নিয়ে মেতে যাবে মিডিয়া। এমনটাই মনে করছেন রিজার্ভ বেঞ্চে ঝিমোনো বহু পুরোনো সাংবাদিক।