কি আর করা। উপায় নেই। কমাতে হবে খরচ। ফলে এক ধাক্কায় একাধিক শাখা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল ইয়েস ব্যাঙ্ক।ব্যাঙ্কের নয়া ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রশান্ত কুমার সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, দেশজুড়ে ইয়েস ব্যাঙ্কের ৫০টি শাখা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া কোনও উপায় ছিল না।
গত মার্চ মাসে ব্যাঙ্কের দায়িত্ব নেন প্রশান্ত কুমার। সূত্রের খবর তারপরেই ব্যাঙ্ক পরিচালনার খরচ ২১ শতাংশ কম করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।সেন্ট্রাল মুম্বইয়ের ইন্ডিয়াবুলস ফাইনান্স সেন্টারে সদর দফতর রয়েছে ব্যাঙ্কের। খরচ কমাতে সেখানে ইতিমধ্য়েই দুটি ফ্লোর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও দেশের ১১০০ শাখার ভাড়া কম করার ব্যাপারে কথাবার্তা শুরু করা হয়েছে।
আরও পড়ুন : এক আংটিতে হীরের সংখ্যা ৭৮০১! গিনেস বুকে ভারতীয় ডিজাইনার, দেখে নিন ভিডিও
প্রশান্ত কুমার জানিয়েছেন, ব্যাঙ্কের শাখাগুলির মাসিক ভাড়া কম করার চেষ্টা চলছে। অনেকক্ষেত্রে দুটি শাখা খুব কাছাকাছি রয়েছে। তাদের একটি বন্ধ করে দেওয়া হবে।
নব্বইয়ের দশকের সূচনালগ্ন থেকে বাজার অর্থনীতির মুক্তকচ্ছ সর্মথকরা আমাদের অর্থনীতির যে পাঠ দিতে শুরু করেন তার মূল কথা ছিল যা কিছুই ব্যক্তিগত তাই পবিত্র। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা (তা শিল্পই হোক বা ব্যাংক) মানেই তা অদক্ষ, লাল ফিতের বাঁধনে জড়িয়ে থাকা জনগণের টাকায় চলা সাদা হাতি যেখানে রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি বাসা বেঁধে আছে। আর বেসরকারি সংস্থা মানেই দক্ষতা, স্বচ্ছতা কে সাথে নিয়ে এক স্বপ্নের উড়ান যেখানে যোগ্যতাই একমাত্র মাপকাঠি। আর এই অর্থনীতির পাঠ কে আমাদের গেলানোর জন্য আমলা, রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও কর্পোরেট জগতের কেষ্ট-বিষ্টুরা গড়ে তুলেছিল সহমতের রাজনীতির এক অসাধু আখ্যান (reform or perish)।
সহমতের রাজনীতির ও অর্থনীতির উপর আমআদমি বিশেষ করে শিক্ষিত মধ্যবিত্তরা যাতে ভরসা রাখতে পারে তার জন্য বশম্বদ মিডিয়া দায়িত্ব নেয় মিথ নির্মাণের, তৈরি করে সাফল্যের পোস্টার বয়। অসামরিক বিমান পরিবহন ব্যবসার ক্ষেত্রে বিজয় মাল্য, টেলিকম শিল্পে অনিল আম্বানি, আর ব্যাংকিং ক্ষেত্রে ছন্দা কোচার বা রানা কাপুর সেই তালিকারই কয়েকটি নাম। কিন্তু আজ যখন তারা খলনায়ক এ রূপান্তরিত তখন মূল ব্যাবস্থা যে ঠিক তা বোঝানোর জন্য সক্রিয় বাজার অর্থনীতির দালালেরা।
ইয়েস ব্যাংক এর ঘটনা যখন সামনে এল তখন পৃথিবীর বৃহত্তম বিমা সংস্থা রাষ্ট্রায়ত্ত ভারতীয় জীবন বীমা নিগমের বিলগ্নীকরণ এর নীল নকশা তৈরি করে ফেলেছে মোদি সরকার। তাই ইয়েস ব্যাংক এর মধ্য দিয়ে দুর্নীতি, অস্বচ্ছতা ও আর্থিক অপরাধের যে কাহিনী সামনে আসছে তাকে আমাদের আলোচনার অন্তর্ভুক্ত করতেই হবে। যেমন করতে হবে স্টেট ব্যাংকের টাকায় ইয়েস ব্যাংকের কালি ধোয়ার (পুনরুজ্জীবন প্রকল্প) কার্যকারিতা নিয়ে।
বাজার অর্থনীতির ঘোষিত এজেন্ডাগুলোও যে আদতে মুক্ত অর্থনীতির শ্লোগানগুলিকে অস্বীকার করে এক বিকৃত পুঁজিবাদের জন্ম দেয় (ক্রোনি ক্যাপিটালিজম) তার স্বীকৃতি ইয়েস ব্যাংকের অভিজ্ঞতায় মেলে। ইয়েস ব্যাংকের ঋণগ্রহীতাদের আর্থিক দিকটি দেখলে সেই সম্পর্কে সন্দেহের অবকাশ থাকে না বললেই চলে।
আরও পড়ুন : শুভ বিজয়া দশমীর শুভেচ্ছা বার্তা, পাঠাতে পারবেন প্রিয়জনদের