Site icon The News Nest

মুসলিম ভোটে সিঁধ কাটবেন আব্বাস, খুশিতে গোঁপে তা সুজন-অধীরের

brigade

সৈয়দ আলি মাসুদ

কত রঙ্গ দেখাবি টিয়ে তুলসী তলায় শুয়ে শুয়ে। বাম-কং ও ভাইজানের রঙ্গ দেখে সে কথায় মনে হচ্ছে। এই কিছুদিন আগেও বাম কংগ্রেস সমর্থক ও নেতার চিৎকার করে বলছিলেন, মিম নাকি বিজেপিকে সুবিধা করে দিতে বঙ্গে আসছে। মিম ভোট কাটবে তৃণমূলের। আর তাতেই সুবিধা হবে বিজেপির। কয়েকদিন যেতে না যেতেই সব ছবি বদলে গেল। মিম আসেনি। মুসলিম ভোট কাটতে ভাইজানকে ‘নির্লজ্জের’ মত কাজে লাগাচ্ছে সিপিএম এবং বিজেপি। ভাইজান ভাবছেন আমি কি ‘হনু’।

কমিউনিস্ট পার্টির  ডিএনএ এই বাংলার জল হাওয়ায় বহুদিন বদলে গিয়েছে। এখন কমিউনিস্ট পার্টি বলে এ বাংলায় সেই অর্থে কিছু নেই। যা আছে তা হল সিপিএম। যার সঙ্গে কমিউনিস্ট পার্টির নীতি ও আদর্শের কোনও সম্পর্ক নেই। সুজন চক্রবর্তীদের দলের লক্ষ্য একটাই। তৃণমূলকে শেষ করা। বিজেপি এলে তাদের কোনও সমস্যা নেই। ইতিমধ্যেই তাদের ভোটাররা পদ্মে চলে গিয়েছেন। আজও সিপিএমের যে ভোট ব্যাঙ্ক অটুট রয়েছে, তার একটা বড় অংশ মুসলিম। তারা কেন সিপিএম তা তারা অনেকেই জানে না। জিজ্ঞাসা করলে বলে, তার বাবা সিপিএম ছিলেন। প্রয়াত বাবার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই তারা নাকি সিপিএম। মুসলমানদের মধ্যে এই ‘আহম্মকের’ সংখ্যা যে বেশি তাতে সন্দেহ নেই।

আরও পড়ুন: ঘোষিত হল IPL সূচি, দেখে নিন কবে, কোথায়, কোন ম্যাচ…

নিজের নাক কেটে তৃণমূলের যাত্রাভঙ্গের চেষ্টার মধ্যে রাজনীতি নেই। অসহায়তা রয়েছে। সিপিএম ও কংগ্রেসের অসহায়তায় নেতা হয়ে উঠেছেন আব্বাস সিদ্দিকী। তার বয়স কম। সম্ভবত শিক্ষাও। ঘোর কাটলে তিনি বুঝতে পারবেন কিভাবে  সিপিএম ও কংগ্রেস তাঁকে ব্যবহার করছে। পীরজাদাকে দিয়ে মুসলিম ভোট কেটে বিজেপিকে জায়গা করে দেওয়াটাই সুজনদের পবিত্র কর্তব্য। যে অপপ্রচার সিপিএম করত, এখন তারা তা আব্বাসকে দিয়ে করাবে। সুজন-সূর্যদের আত্মবিশ্বাস তলানিতে। তাই নিজেদের কথা তারা আব্বাসকে দিয়ে বলিয়ে নিচ্ছে। পীরজাদার কথা মুসলমানরা বিশ্বাস করলেও করতে পারে। এই ভাবনা থেকেই তরুণ আব্বাসের ওপর এমন ভরসা তিন দশক রাজ্য চালানো পক্ককেশ সিপিএম নেতাদের।

‘মজবুরি’ জোটের অপর পার্টনার অধীর চৌধুরীও মুসলমানদের ভোটেই সিঁধ কাটতে চান। এ বঙ্গে ভোট কাটুয়া তার দলও। মিমের আগমনের আশংকায় তাঁর দলও কাঁটা হয়ে ছিল। কংগ্রেস যেখানে আজও পা ঠুকে সেগুলি সবই মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা। এখানকার বহু মুসলিম ভোটার ‘জন্মগত কংগ্রেস’। কেন তারা কংগ্রেস, তা তারা জানে না। লজিক সেই মুসলিম সিপিএম ভোটারদের মতই। বাপ -দাদু কংগ্রেস ছিল। অতএব ভোট দিতে হবে কাটা হাতেই। এই ‘আহাম্মকদের’ একটা বড় অংশই মুসলিম ভোটার।

সুজন এবং অধীরদের সমস্যা হল এই যে তাদের দলের আর ‘ফেসভ্যালু’ নেই। কংগ্রেস ও  সিপিএম যেদিন জোট গড়েছে, সেদিনই দুই দলের ফেসভ্যালু শেষ হয়ে গিয়েছে । তারা এখন না ‘ঘরকা না ঘাটকা’ এখন যা বেঁচে রয়েছে তা দুই দলের অসহায়তা। টিকে থাকার শেষ খড়কুটো। সিপিএম, কংগ্রেস ও ভাইজানের ভূমিকা একটাই। তা হল, মুসলিম ভোট কেটে বিজেপির সুবিধা করে দেওয়া।

মোদী ক্ষমতায় আসার আগে অনেকে বলেছিলেন কংগ্রেস ও বিজেপিতে ফারাকটাই বা কি। বিদ্বেষী ছাড়া অনেকেই বুঝছেন ফারাক ছিল। বিজেপি ক্ষমতায় এলে সুজন কিংবা অধীরের কোনও অসুবিধা হবে না। কিন্তু চাপে পড়বেন ভাইজানই। এদেশে জাভেদ আখতারের মত নাস্তিককেও পাকিস্তান চলে যাবার হুমকি শুনতে হয়। মুসলিম ভোট কাটার ব্যাপারে বাম ও কংগ্রেস আত্মবিশ্বাসী হলে তারা ভাইজানকে পাত্তাই দিত না। মুসলমানরা পরিস্থিতি দেখে ভোট দেয়। ভাইজান, রাজ্যটাকে জলসার মঞ্চ ভাবা বন্ধ করুন। যারা আপনার হয়ে নাড়া লাগায় তাদের সবার ভোট পর্যন্ত আপনি পাবেন না।

সিপিএম তাদের স্লোগান আপনাকে(ভাইজান ) দিয়ে বলিয়ে নেবে, পরে আপনাকেই সাম্প্রদায়িক বলবে। আপনি ধর্মের কথা বলুন আর নাই বলুন। সিপিএমের অপ্রচারের ফাঁদে পরে আব্বাস আপনিও ইমাম ভাতাকে দায়ী করতে শুরু করেছেন। 2014 এর মোদী ঝড়ের পরে ইমাম ভাতা দেওয়া মমতায় বিজিপিকে রুখে দিয়েছিলেন । মমতা হিন্দুদের জন্য বহু কিছু করেছেন। কিন্তু বামেরা সে কথা বলে না। পাছে হিন্দুরা চোটে যায়। কৌশলে ওরা আপনাকে দিয়ে নিজেদের প্রচার করিয়ে নিচ্ছে আর আড়ালে খুশি করছে। ব্যাপারটা বুঝুন। না হলেই কিনারা পাবেন না।

আরও পড়ুন: তৃণমূল ফেরত ‘চোরেদের’ সঙ্গে নিয়ে ‘সোনার বাংলা’ গড়ার স্বপ্ন ফেরি মোদীর

Exit mobile version