Remembering Raja Ram Mohan Roy: One of the best Bengali Raja Rammohun Roy of all time

Remembering Raja Ram Mohan Roy :সর্বকালের অন্যতম সেরা বাঙালি রাজা রামমোহন রায়

রাজা' উপাধি নিয়ে ১৮৩০ সালে রামমোহন রায় তৎকালীন দিল্লির বাদশাহ দ্বিতীয় আকবরের দূত হিসাবে ইংল্যাণ্ডে যান। বাদশাহ তাঁকে ভার দেন ইংল্যাণ্ডের সরকারের কাছে বাদশাহের ভাতা বৃদ্ধির সুপারিশ করার জন্য।
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

দু’হাজার চার সালে বিবিসি বাংলায় একটি সমীক্ষা করেছিল। বিষয়টি ছিল- সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি কে? তিরিশ দিনের ওপর চালানো এই সমীক্ষায় শ্রোতাদের ভোটে নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ ২০জনের জীবন নিয়ে বিবিসি বাংলায় বেতার অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয় ২০০৪-এর ২৬শে মার্চ থেকে ১৫ই এপ্রিল পর্যন্ত।

বিবিসি বাংলার সেই সমীক্ষায় শ্রোতাদের মনোনীত শীর্ষ কুড়িজন বাঙালির তালিকায় দশম স্থানে আসেন সমাজ সংস্কারক রাজা রামমোহন রায়। আজ তাঁর জন্মদিন ।

আরও পড়ুন : Motivational Quotes: জীবন বদলাতে সক্রেটিসের মূল্যবান ২৪টি বাণী

ধর্ম ও সমাজ সংস্কারক রাজা রামমোহন রায়কে বলা হয় ভারতের নবজাগরণের পথিকৃৎ। তিনি জন্মেছিলেন এক সম্ভ্রান্ত রক্ষণশীল ব্রাহ্মণ পরিবারে। কিন্তু পরে হিন্দু ধর্মীয় প্রথা এবং সামাজিক ব্যবস্থায় সংস্কার সাধনই হয়ে ওঠে তাঁর জীবনের মূল লক্ষ্য।

109664578 bst bmagg k13 001

কলকাতা থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দূরে হুগলির রাধানগর গ্রামে ১৭৭২ সালের বাইশে মে জন্মগ্রহণ করেন রামমোহন রায়। বাবা রামকান্ত রায় এবং মা তারিণী দেবী। গ্রামের পাঠশালাতেই তাঁর বাল্যশিক্ষার শুরু।

খুবই অল্প বয়সে পড়াশোনা করতে রামমোহন রায়কে পাঠানো হয় ভারতের পূর্বাঞ্চলে পাটনা শহরে। কথিত আছে তখন তাঁর বয়স ছিল দশেরও কম। পাটনা সেসময় ছিল ভারতে আরবী ও ফারসি ভাষা শিক্ষার পীঠস্থান।পরে সংস্কৃত ভাষার শিক্ষা আরও পোক্ত করতে এবং হিন্দু ধর্মশিক্ষা করতে তিনি যান বেনারসে।
খুবই কম বয়সে বহু ভাষা আয়ত্ত করেছিলেন তিনি।  রামমোহন রায় আরবী ও ফারসি ভালমত রপ্ত করেছিলেন এবং সংস্কৃত ভাষায় তিনি ছিলেন বিশেষ পারঙ্গম।তিনি ২৪ বছর বয়সে ইংরেজি ভাষা শিখতেও শুরু করেন এবং অতি অল্প সময়ের মধ্যে খুবই সুদক্ষভাবে ইংরেজি ভাষা ব্যবহারে পটু হয়ে ওঠেন।
তিনি ছিলেন বাংলা গদ্যেরও জনক। বাংলা গদ্য তখন সবে শুরু হয়েছে। বাংলা গদ্যের বহু গ্রন্থ রচনা করেছিলেন তিনি। মূলত আমাদের শাস্ত্রগুলো তিনি অনুবাদ করেছিলেন। তিনি দেখাতে চেয়েছিলেন দেশাচার বলে যেগুলো চালানো হয়, সেগুলো আমাদের শাস্ত্রে কোথাও লেখা নেই ।

সব ধর্মের প্রকৃত সত্য সবাইকে জানানোর জন্যই নানা ভাষায় বই লিখতে শুরু করেন রামমোহন রায়।আঠারোশ’ চার সালে একেশ্বরবাদ নিয়ে আরবী ও ফারসি ভাষায় রামমোহন রায়ের প্রথম বইটি প্রকাশিত হয় তুহফাত-উল-মুয়াহহিদিন নামে। ফারসি ভাষায় লেখা এই বইয়ের মুখবন্ধ ছিল আরবীতে লেখা।

রামমোহন গবেষক ও ঐতিহাসিকরা বলেন পাটনায় আরবী ও ফারসি ভাষা শিক্ষাকালে তিনি একেশ্বরবাদের দিকে ঝুঁকেছিলেন এবং হিন্দু ধর্মের পৌত্তলিকতা নিয়ে তাঁর মনে প্রশ্ন জাগে। তিনি সুফি দর্শনের ব্যাপারেও আগ্রহী হয়ে ওঠেন।

একদিকে যেমন তিনি একেশ্বরবাদের দিকে ঝুঁকেছিলেন, অন্যদিকে তেমনি এটাও উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে হিন্দু ধর্ম যদি তার নিজস্ব গোঁড়ামিকে বর্জন করতে না পারে, এবং কূপমণ্ডুক মানসিকতাকে অতিক্রম করে যদি বিশাল জগতের সঙ্গে নিজেদের মিলিয়ে নিতে না পারে, তাহলে হিন্দু ধর্ম ক্রমশ কোনঠাসা হয়ে পড়বে।

হিন্দু ধর্মের আচার ও পৌত্তলিকতা নিয়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গীর কারণে বাবা মার সঙ্গে তাঁর তীব্র বিরোধ বাঁধে এবং পিতা তাঁকে ত্যাজ্যপুত্র করে দেন।রামমোহন রায় কলকাতায় পাকাপাকিভাবে চলে আসেন ১৮১৫ সালে। শুরু হয় সামাজিক কুসংস্কারের বিরুদ্ধে তাঁর লড়াই। হিন্দু ধর্মকে সংস্কার করতে তিনি আজীবন লড়াই করেছেন।সতীদাহ প্রথা বন্ধ রামমোহনের অন্যতম সামাজিক সাফল্য। তা করতে গিয়ে তাঁকে কট্টরপন্থী হিন্দুদের প্রবল প্রতিরোধের মুখে পড়তে হইছিল।

প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরের মত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সহযোগিতায় রামমোহন রায় ১৮২৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ব্রাহ্মসমাজ, যা এক সামাজিক ও ধর্মীয় আন্দোলন এবং বাংলার পুনর্জাগরণের পথ-প্রদর্শক হিসাবে কাজ করেছিল।আঠারোশ একুশে সংবাদ কৌমুদী নামেও একটি পত্রিকা বের করেন তিনি। এর একবছর পর রামমোহন ফারসি ভাষায়ও একটি পত্রিকা প্রকাশ করেন যার নাম ছিল -মিরাত-উল-আকবর।

‘রাজা’ উপাধি নিয়ে ১৮৩০ সালে রামমোহন রায় তৎকালীন দিল্লির বাদশাহ দ্বিতীয় আকবরের দূত হিসাবে ইংল্যাণ্ডে যান। বাদশাহ তাঁকে ভার দেন ইংল্যাণ্ডের সরকারের কাছে বাদশাহের ভাতা বৃদ্ধির সুপারিশ করার জন্য।ব্রিটেনের পার্লামেন্টে সেসময় ভারতের সামাজিক উন্নয়নের জন্য তিনি একটি জোরালো বক্তব্য রাখেন।

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের কাছে পেশ করা তাঁর বক্তব্যে তিনি আবেদন করেছিলেন যাতে ভারতে একটা সুশাসন ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়। যথার্থ শিক্ষা ব্যবস্থা যাতে হয়। ভারতবর্ষে শিক্ষার্থীরা যাতে বিজ্ঞানের আলো পায়।মেনিনজাইটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে ব্রিটেনের মাটি ব্রিস্টলে ১৮৩৩ সালের ২৭শে সেপ্টেম্বর রামমোহন রায়ের মৃত্যু হয়।

আরও পড়ুন : Rabindra Jayanti 2021: হিন্দু মুসলমান সম্পর্ক, সাম্প্রদায়িকতা ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest