কলকাতা: রাজ্যে করোনার প্রথম বলি দমদমের বছর ৫৭-র বৃদ্ধ। সমস্ত বিধিনিষেধ মেনে মৃতদেহ নিয়ে নিমতলা ঘাট শ্মশানে ঢুকতেই একদল স্থানীয়ের রোষের মুখে পড়ে পুলিস। সৎকারে বাধা দেওয়া হয় পুলিসকে।
আরও পড়ুন: লকডাউন ভাঙায় কলকাতায় গ্রেফতার ২৫৫, ঘরে থাকার আর্জি মুখ্যমন্ত্রীর
মৃতের সৎকারে বাধা দিয়ে নিমতলা ঘাট শ্মশানের গেট বন্ধ করলেন স্থানীয় অধিবাসীরা। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল এলাকায়। পুলিশকে লক্ষ্য করে চলল ইটবৃষ্টি। সোমবার দুপুর ৩.৩০ মিনিটে মৃত্যু হয় করোনাভাইরাস আক্রান্ত দমদম নিবাসী প্রাক্তন রেলকর্মীর।এরপরথেকেই মৃতদেহকে ঘিরে শুরু হয় একের পর এক সমস্যা। মৃত্যুর খবর বাড়িতে পৌঁছতেই হাসপাতালে আসতে অস্বীকার করে পরিবারের এক সদস্যা। তিনিই প্রথমে ভর্তি করেছিলেন ওই প্রৌঢ়কে। বিষয়টি জানানো হয় স্বাস্থ্য ভবনে। এরপর ফের শুরু হয় আরেক দফা সমস্যা। সল্টলেকের কোন শববাহী গাড়িই আসতে রাজি হয় না এদিন। তা নিয়েও চলে দীর্ঘক্ষন টানাপোড়েন।
শেষমেষ বিধান নগর পৌরসভা বিধাননগর পুলিসের সহযোগিতায় তাদের একটি গাড়িতে দেহ নিয়ে যাবার ব্যবস্থা হয়। বিধাননগর পুলিসের পাইলট কার এসে পৌঁছায় ওই বেসরকারি হাসপাতালে। খবর দেওয়া হয় কলকাতা পুলিসেকে। নিয়ম অনুযায়ী হাসপাতালের ঠাণ্ডা ঘর থেকে দেহকে বের করে কেমিক্যাল মাখিয়ে বিশেষ প্যাকেটের মধ্যে মুড়ে তা চাপানো হয় গাড়িতে। ওই দেহের সঙ্গে কলকাতা কর্পোরেশনের লোক বিধাননগর পুলিসের প্রাইভেট গাড়ি ও সংশ্লিষ্ট বেসরকারি হাসপাতালে এক প্রতিনিধি এবং স্বাস্থ্য ভবনের স্বাস্থ্যকর্তা, চিকিৎসক এবং কলকাতা কর্পোরেশনের চিকিৎসকরা রওনা দেন নিমতলা ঘাটের দিকে।
আরও পড়ুন: করোনা লকডাউনে থামল শাহিনবাগের আন্দোলন, ১০১ দিন পরে প্রতিবাদীদের উঠিয়ে দিল পুলিশ
পরের বিপত্তি রাত পৌনে ১০টা নাগাদ। সরকারি ব্যবস্থায় তাঁর দেহ সৎকার করতে নিমতলা ঘাট শ্মশানের সামনে পৌঁছলে প্রবেশের মুখেই শবযাত্রীদের বাধা দেন নিমতলার বাসিন্দাদের একাংশ। স্থানীয়দের অভিযোগ, মৃতদেহ থেকে জীবাণু সংক্রমণের প্রবল আশঙ্কা রয়েছে বলেই শ্মশানে সৎকার করলে ঝুঁকি বাড়বে।খবর পেয়ে নিমতলায় পৌঁছয় কলকাতা পুলিশের নর্থ ডিভিশনের বিশাল বাহিনী। কিন্তু পুলিশকর্তারা অনেক বোঝানোর চেষ্টা করলেও মানতে চাননি স্থানীয়রা। উলটে তাঁদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি শুরু হয় বিক্ষুব্ধদের।
উত্তেজিত হয়ে তাঁদের মধ্যে কয়েকজন পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়েন বলেও অভিযোগ। ইটের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সংবাদমাধ্যমের একটি গাড়ি। বন্ধ করে দেওয়া হয় শ্মশানের মূল ফটক।