বয়ে গিয়েছে দিন, রবীন্দ্রনাথের বিনোদনমূল্য কমেনি এক ছটাকও

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

সৈয়দ আলি মাসুদ

রবীন্দ্রনাথ ছাড়া বাংলার সংস্কৃতির অঙ্গন কানা। সাহিত্য, নাটক, কবিতা, গল্প সবখানেই তাঁর উজ্জ্বল উপস্থিতি। তিনি ‘সংস্কৃতির প্রফেট’। তাঁর গল্প, নাটক গান দিয়ে কেবল আমরা সাহিত্যের ডালি সজাই না। উনি আমাদের অনেকের রুজি রুটি। সাধকের সমাধিস্থলকে সামনে রেখে যেমন অনেকেই রোজগার করে, তেমনি আমার রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে রোজগার করছি সেই কবে থেকে। বহু দিন ধরেই সিনেমায় তাঁর গল্প ও গান ব্যবহার হয়। প্রতিবারই দর্শক নতুন করে আলোড়িত হন। মনে হয় এ যেন নতুন করে তাদের জন্য লেখা।আজও তাঁর বিনোদনমূল্য এক ছটাকও কমেনি।

সংসারে বহু পুরাতন শিলনোড়া থাকে। শিলনোড়া ফি হপ্তাহে কেউ কেনে না। দাদুর আমলের পাথরের শিলনোড়ায় নাতির বাড়ির রান্না হয়। রবীন্দ্রনাথ তেমনই শিল নোড়া। ফারাক একটাই এর ক্ষয় নেই। এটি অক্ষয়।

১৮৬১ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম। তার ৩৪ বছর পর ১৮৯৫ সালে চলচ্চিত্রের উদ্ভাবন হয়।১৯২০ সালে ধীরেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় প্রথম রবীন্দ্রনাথের ‘বিসর্জন’ গল্পের চলচ্চিত্রায়ণ করার উদ্যোগ নিলেও ১৯২৩ সালে নরেশচন্দ্র মিত্রের পরিচালনায় বাংলা চলচ্চিত্রে রবীন্দ্রসাহিত্যের প্রথম চিত্ররূপ ‘মান ভঞ্জন’।

আরও পড়ুন: আজ রাতে ফুল ফুটেছে চাঁদে! দেখুন বছরে শেষ ‘ফ্লাওয়ার’ সুপারমুন

১৯২৮ সালে শিশির ভাদুড়ি ‘বিসর্জন’ ও ‘বিচারক’ নামের দুটি ছবি করেন। ১৯২৯ সালে ধীরেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় ‘তপতী’ ছবিটি নির্মাণ শুরু করলেও চার রিল পর্যন্ত শুটিং হয়। বিশ্বকবি নিজে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয়ের জন্য রাজি হলেও বিদেশ ভ্রমণের কারণে ছবির কাজ অসমাপ্ত থেকে যায়। ১৯৩০ সালে ‘দালিয়া’ ও ‘গিরিবালা’ নামের দুটি সাহিত্যকর্মের চলচ্চিত্রায়ণ হয়।

১৯৩২ সালে সবাক চলচ্চিত্র ‘নটীর পূজা’ ও ‘চিরকুমার সভা’ মুক্তি পায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পরিচালিত একমাত্র চলচ্চিত্র ‘নটীর পূজা’। মাত্র চার দিনে ছবির শুটিং শেষ করেছিলেন তিনি। শান্তিনিকেতনের ছাত্রছাত্রীদের অভিনীত এ চলচ্চিত্রে উপালির চরিত্রে অভিনয় করেন রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং। এরপর নরেশ মিত্রের নির্বাক ছবি ‘নৌকাডুবি (১৯৩৮)’, সবাক ছবি ‘গোরা (১৯৩৮)’, সেতু সেনের ‘চোখের বালি (১৯৩৮)’ নির্মিত হয়। এই সময়টা ছিলো সাহিত্য নির্ভর চলচ্চিত্রের সোনালী যুগ। দুই বিখ্যাত কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টিসংবলিত কাহিনি, গান ও সুরে মুখর ছিলো বাংলা চলচ্চিত্রজগৎ।

তপন সিংহ পরিচালিত ‘কাবুলীওয়ালা’ ভারতের রাষ্ট্রপতির পদক, বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কার ও ‘ক্ষুধিত পাষাণ’ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করে। ১৯৬১ সত্যজিৎ রায় রবীন্দ্রনাথের তিনটি ছোটগল্প সমাপ্তি, পোস্টমাস্টার ও মনিহারা নিয়ে নির্মাণ করেন ‘তিনকন্যা’ ছবি। ‘তিনকন্যা’ ও ‘সমাপ্তির’ জন্য রাষ্ট্রপতি পদক, ‘পোস্টমাস্টার’ ও ‘সমাপ্তি’ শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হিসেবে মেলবোর্ন ও বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে, ‘নষ্টনীড়’ গল্প অবলম্বনে চারুলতা (১৯৬৪) রাষ্ট্রপতি পদক, বার্লিন ও মেক্সিকো চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ ছবি ও ঘরে বাইরে (১৯৮৪) ছবি ভারতীয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও দামাস্কাস আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কার পায়। ভারতে তখন রবীন্দ্র সাহিত্য চর্চার অন্যরকম মর্যাদা। তৎকালীন চলচ্চিত্র নির্মাতারা সেই মর্যাদাকে সবার কাছে ছড়িয়ে দিয়েছেন চলচ্চিত্র নির্মাণের মাধ্যমে।

আরও পড়ুন: স্মৃতির পাতায় রবীন্দ্রনাথ…

Gmail
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest