Site icon The News Nest

পুরোহিত ছাড়া ঘরে কী ভাবে করবেন সিদ্ধিদাতার আরাধনা, জেনে নিন ষোড়শপচার পুজো পদ্ধতি

ganesh chaturti 2

গণেশ চতুর্থীর পূজা উপলক্ষে ভগবানের আরাধনার সঙ্গে সঙ্গে উদযাপন করা হয় সুখ ও সমৃদ্ধিকেও। বাড়িতে গণেশ পূজা করলে সেখানে সুখ, শান্তি যেমন বজায় থাকে, তেমনই প্রবেশ করতে পারে না বিপদও। এছাড়াও যে কোনও পুজোর আগে প্রথমেই গণেশের পুজো করা হয়। এছাড়াও গণেশের মন্ত্রের প্রতি ছত্রেই বলা হয় ‘যিনি একদন্ত, মহাকায়, লম্বোদর, গজানন এবং বিঘ্ননাশকারী সেই হেরম্বদেবকে আমি প্রণাম করি’।

‘ওঁ গাং গণেশায় নমঃ ওঁ শ্রী গণেশায় নমঃ’- এই মন্ত্র দিয়েই পুজো শুরু করা হয় গণেশের। বাড়ি, অফিস, স্কুল সর্বত্রই হয় গণেশের আরাধনা। যে কোনও পুজোরই মূল মন্ত্র হল শুদ্ধতা। সিদ্ধিদাতার আরাধনাও তার ব্যতিক্রম নয়। মনের শান্তি এবং শুদ্ধতার জন্যই এই মন্ত্র, আরতি আরাধনা।  পরিষ্কার কাচা জামা পরেই গণপতিকে বাড়িতে নিয়ে আসুন। মূর্তি কেনার সময় অবশ্যই মাস্ক ও গ্লাভস পরুন। প্রবেশের আগে চাল ছড়াতে ভুলবেন না। এছাড়াও মূর্তি স্থাপনের আগে ছড়িয়ে দিন চাল। ওপরে রাখুন সুপুরি, কাঁচা হলুদ, লাল সিঁদুর ও দক্ষিণা। নিয়মের সঙ্গে বজায় রাখুন কোভিড কালে বাড়ির সুরক্ষাও।

গণেশের আরাধনার জন্য যেগুলি লাগেই তা হল- লাল ফুল, দূর্বা ঘাস, মোদক, নারকেল, লাল চন্দন, ধুনো ও ধূপ। ফুলের মধ্যে লাল জবা কিংবা গোলাপের মালা ব্যবহার করতে পারেন। দূর্বার মালাও দিতে পারলে খুব ভালো। এছাড়া গণেশের প্রিয় লাড্ডু, মোদক, নারকেল নাড়ু রাখুন প্রসাদে। এছাড়াও পান-সুপুরি দিন গণেশকে।

পুজো পদ্ধতি

বাড়িতে গণেশ মূর্তি স্থাপনের আগে সারা বাড়ি পরিষ্কার করুন। স্নান সেরে মন্ত্রের মাধ্যমে মূর্তিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠার পর শুরু করুন পুজো। ঋক বেদ বা গণেশ সুক্তায় পাবেন প্রাণ প্রতিষ্ঠার মন্ত্র। প্রাণ প্রতিষ্ঠার পরই ধূপ ও প্রদীপ জ্বালিয়ে শুরু করুন আরতি।

ষোড়শপচারে গণেশের আরাধনা করুন। গণেশ বন্দনার ১৬টি রীতির নামই ষোড়শপচার। এরপর ২১টি দূর্বা ঘাস, ২১টি মোদক ( লাড্ডু বা করঞ্জিও চলবে) ও লাল ফুল গণেশের সামনে সাজিয়ে রাখুন। মূর্তির মাথায় আঁকুন লাল চন্দনের টিকা। এরপর গণেশ মূর্তির সামনে নারকেল ভেঙে অশুভ শক্তিকে দূর করুন। তারপর গণেশের ১০৮ নাম জপ করুন। মূর্তির সামনে সকলের জন্য প্রার্থনা করুন। পরিবারের সুখ, শান্তি এবং সমৃদ্ধির কামনা করুন।

বন্দনা এবং আরতির সময়

এই বছর গণেশ চতুর্থীর সময় পড়েছে শুক্রবার সকাল ১১.০৯ মিনিট থেকে রাত ১০.৫৯ মিনিট পর্যন্ত। এই বছর গণেশ পুজোর জন্য শুভ সময় শুরু হবে ১২টা ১৭ মিনিটে অভিজিত্‍ মুহূর্ত থেকে এবং এই শুভক্ষণ থাকবে রাত ১০টা পর্যন্ত। এই দিনের বিশেষ সময়কে মাথায় রেখেই বাড়িতে গণেশ প্রতিষ্ঠা করুন। কারণ এই লগ্ন খুবই শুভ। পঞ্চপ্রদীপে ঘি দিয়ে আরতি করতে পারলে ভালো।

গণেশের বন্দনা

বন্দ দেব গজানন বিঘ্ন বিনাশন।
নমঃ প্রভু মহাকায় মহেশ নন্দন।।
সর্ববিঘ্ন নাশ হয় তোমার শরণে।
অগ্রেতে তোমার পূজা করিনু যতনে।।
নমো নমো লম্বোদর নমঃ গণপতি।
মাতা যার আদ্যাশক্তি দেবী ভগবতী।।
সর্বদেব গণনায় অগ্রে যার স্থান।
বিধি-বিষ্ণু মহেশ্বর আর দেবগণ।।
ত্রিনয়নী তারার বন্দিনু শ্রীচরণ।
বেদমাতা সরস্বতীর লইনু শরণ।।

অর্থাৎ, যিনি খর্বাকৃতি, স্থূল শরীর, লম্বোদর, গজেন্দ্রবদন অথচ সুন্দর, বদন হইতে নিঃসৃত মদগন্ধে প্রলুব্ধ ভ্রমর সমূহের দ্বারা যাঁহার গণ্ডস্থল ব্যাকুলিত, যিনি দন্তাঘাতে শত্রুর দেহ বিদারিত করে তাঁর দন্ত দ্বারা নিজ দেহে সিন্দূরের শোভা ধারণ করিয়াছেন; সেই পার্বতীপুত্র সিদ্ধিদাতা গণপতিকে বন্দনা করি।

Exit mobile version