Ertugrul ghazi ড্রামাতে পেয়েছেন তাঁর ঝলক, জানেন কি ইবনুল আরাবী কে ছিলেন ?

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

প্রযুক্তি নির্ভর এই যুগে, মানুষের মধ্যে কোমল অনুভূতিগুলি দিন দিন কমে যাচ্ছে। মানুষের মধ্যে সিরিয়াসনেসের পতন যে গতিতে হচ্ছে, শেয়ারবাজারে ধসও এমন ধারবাহিকভাবে হয় না। প্রতিদিন মানবতা একটু একটু করে কোনঠাসা হচ্ছে। মূল্যবোধহীন সমাজকে সাধারণ ঘটনা মনে করছেন পক্ককেশ বৃদ্ধও। যা নিন্দনীয়, অসৎ তার সঙ্গে আপস করতে শেখান হচ্ছে সর্বদা। এমন মারাত্মক সময়ে পথ দেখানোর লোক নেই। বিজ্ঞাপিত যে সব আধ্যাত্মিক ব্যক্তিরা রয়েছেন, তাঁরা আপন আপন পার্থিব উন্নতিতে প্রাণপাত করছেন। এমন অবস্থায় আধ্যাত্মিক পুরুষদের কথা মনে করছেন কিছু মানুষ। এমনি একজন আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব ছিলনা ইবনুল আরাবী ।

ইবনুল আরাবী ২৮ জুলাই, ১১৬৫ তে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একজন আরব সুফি সাধক লেখক ও দার্শনিক। সুফিতত্ত্বে তাঁর অনবদ্য অবদানের কারণে তিনি শেখ আল আকবর মুহিউদ্দিন ইবনুল আরাবী নামেই সমধিক পরিচিত। আন্দালুসিয়া বা বর্তমান স্পেনের মূর্সিয়া নগরীতে জন্ম গ্রহণ করায় তাকে আন্দালুসি ও আল-মূর্সি বলা হয়। তাছাড়া তিনি দামেস্কে মৃত্যু বরণ করায় ডাকা হয় দামেস্কি। অন্যদিকে ইমেনের প্রসিদ্ধ দাতা হাতেমতাই তার পূর্বপুরুষ হওয়ায় আল-হাতেমী এবং আল-তাই উপনামেও তিনি প্রসিদ্ধ। সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে প্রায় ছিয়াত্তর বছর বয়সে তিনি ২২ রবিউস সানি ৬৩৮ হিঃ মোতাবেক ১২৪০ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যু বরণ করেন।

আরও পড়ুন: আজ গুরুনানক জয়ন্তী, জেনে নিন স্বর্ণ মন্দির সম্পর্কে এই চমকপ্রদ তথ্যগুলি…

শরীয়ত চর্চার প্রায় সবকটি শাখাতেই তিনি ছিলেন পন্ডিত। ইসলামী দর্শন আলোচিত হলে তাঁর নাম উল্লেখ করতেই হয়। তাঁর আধ্যাত্মিক চেতনা ছিল প্রগাঢ়। তিনি গাজ্জালীর ছাত্র ছিলেন। তবে তাঁর বর্ণিত দর্শনকে সমকালীন বহু ইসলামী পন্ডিত ভালোভাবে গ্রহণ করেননি। বরং তাঁরা ভিন্নমত পোষন করেছেন। তবে সেসব ছিল গূঢ় তত্ত্ব। সাধারণের বোধের বাইরে। সেই সময় আধ্যাত্মিক বিষয় নিয়ে আলোকিত ব্যাক্তিত্বদের মধ্যে আলোচনা হত, মতপ্রাথক্যও ছিল। তবে সেটাকে কেউ ব্যক্তিগত বিষয় হিসাবে দেখতেননা।

এমনিতে ইতিহাসে বহু কিছু যেমন চাপা পরে থাকে, ইবনুল আরাবীও তেমনি বহু আম আদমির কাছে অজানা ইতিহাস হয়ে রয়ে গিয়েছিলেন। সম্প্রতি ‘আরতারুল গাজী’র তুর্কি ড্রামার দৌলতে বিশ্বজুড়ে ইবনুল আরাবীকে নিয়ে ফের শুরু হয়েছে চর্চা। অনেকে মনে করেন ইবনুল আরাবীর রুহের আলো আরতারুলের পথ চলাকে সহজ করে দেয়। পরম করুনাময় তাঁকে সে দায়িত্ব দিয়েই পাঠিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে আরতারুলের দেখা হওয়া মোটেও কাকতালীয় ছিল না। অন্যায়ের বিরুদ্ধে ইনসাফের জয়যাত্রার ভিত্তিতে প্রস্তুতকালে তিনি আরতারুলকে এমন করে সাহায্য না করলে সেদিনের লড়াই সহজ হত না।

ওই ড্রামা দেখে আরাবীর বিশদ পরিচয় মিলবে না। তবে যেটা মিলবে তা হল তাঁর দিলের নূর। সত্যের প্রতি তাঁর অবিচল থাকা। সত্যের জন্য মৃত্যুকেও তুচ্ছ মনে করা। শত্রুকে চিনতে পেরেও বিপদে তাঁকে সাহায্য করা। তাঁর ভিতরে আলো জ্বালানো । তাঁর মত সুফিদের সঙ্গ পেয়ে বহু অসৎ, মিথ্যুক এবং আঁধারের বাসিন্দারের চেতনা আলোকিত হয়েছে। যেকোনো লড়াইয়ে স্থায়ী জয় পেতে হলে দরকার সত্য। মিথ্যা ও কপটতা দিয়ে জয় পাওয়া যায়, কিন্তু তা মানুষের মনে স্থায়ী হয় না। সে জয় হল ভূখণ্ড দখল।

সুফী সাধকদের ইলমের কথা বহু সাধারণ মানুষ বুঝতে পারেন না। তাঁরা বহু কথা রূপকে বলেন। তাঁরা ভবিষৎ দৃষ্টা হন। মোরাকাবায় বসে তাঁরা বহু কিছুর আগাম আভাস পান। শরীয়ত, তরিকত, হকিকতের সিঁড়ি টপকে মারেফতের মাকাম হাসিল করা এত সহজ নয়। কিন্তু সেকালের বহু সুফী সেই মাকাম হাসিল করেছিলেন। তাদের খিদমত করে কত নবাব, বাদশা ও শাসক দুনিয়া কমিয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা দুনিয়ার দিকে ফিরেও তাকাননি। তাঁরা কেবল আলো জ্বালিয়ে গিয়েছেন। যাপন করেছেন অনাড়ম্বর জীবন।

আরও পড়ুন: হিংসায় ভরা এই বিশ্বে ঠাকুরের এই বাণীগুলি আপনার বিবেবকে জাগ্রত করবে

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest