Site icon The News Nest

রিজিক মানে কেবল খাওয়া নয়, জানুন ইসলামে রিজিকের ব্যাপকতা

rizq

রিজিক মহান আল্লাহর অনুগ্রহের নাম। এটি শুধু অর্থ-সম্পদ, খাবার কিংবা কাপড়চোপড়ে সীমাবদ্ধ নয়। মহান আল্লাহ বহু ধরনের রিজিক দ্বারা আমাদের লালন-পালন করছেন। তিনি বাতলে দিয়েছেন রিজিক বৃদ্ধির বিভিন্ন পদ্ধতি ও আমল। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর যে ব্যক্তি তাকওয়া অবলম্বন করবে আল্লাহ তার জন্য (উত্তরণের) পথ করে দেবেন এবং তিনি তাকে ধারণাতীত উৎস থেকে রিজিক দান করবেন।’ (সুরা : তালাক, আয়াত : ২-৩)

তাহলে তো কোনো মুমিন কখনো অর্থকষ্টে পড়ার কথা নয়। এ ধারণা সৃষ্টি হওয়ার কারণ হলো, আমরা আসলে রিজিকের মানে বুঝি না। রিজিকের বহু অর্থ আছে। রিজিকের বহু স্তর আছে। বিষয়টি স্পষ্ট করার জন্য কোরআন-হাদিসের আলোকে নিম্নে রিজিকের কয়েকটি স্তর তুলে ধরা হলো-

ঈমান : বান্দার সফল হওয়ার সবচেয়ে বড় মাধ্যম হলো ঈমান। ঈমানের চেয়ে বড় রিজিক ও নিয়ামত আর কিছু হতে পারে না। যারা ঈমানের নিয়ামত অর্জন করতে পেরেছে, তারাই সবচেয়ে বড় সৌভাগ্যবান। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা ইসলাম গ্রহণ করে আপনাকে ধন্য করেছে মনে করে। বলুন, তোমরা ইসলাম গ্রহণ করে আমাকে ধন্য করেছ মনে কোরো না; বরং আল্লাহই ঈমানের দিকে পরিচালিত করে তোমাদের ধন্য করেছেন, যদি তোমরা সত্যবাদী হও। (সুরা : হুজুরাত, আয়াত : ১৭)

অর্থ-সম্পদ : অর্থ-সম্পদও রিজিকের একটি অন্যতম শাখা। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আল্লাহ তোমাদের যে সম্পদ দিয়েছেন তা থেকে তোমরা তাদের দান করো।’ (সুরা : নূর, আয়াত : ৩৩)

হিকমত (প্রজ্ঞা) : হিকমত ও প্রজ্ঞা আল্লাহর অমূল্য নিয়ামত। এটি অর্জন করার সৌভাগ্য সবার হয় না। মহান আল্লাহ দয়া করে যাকে দেন, সে-ই তা অর্জন করতে পারে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তিনি যাকে ইচ্ছা প্রজ্ঞা দান করেন এবং যাকে প্রজ্ঞা দান করা হয় সে নিশ্চয়ই প্রচুর কল্যাণ লাভ করে। আসলে জ্ঞানবান ব্যক্তিরা ছাড়া কেউ উপলব্ধি করতে পারে না।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৬৯)

আরও পড়ুন : অলৌকিক : জানুন খাজা মইনুদ্দিন চিশতী (রহ:) ইশারায় আনা সাগরের জল শুকিয়ে যাওয়ার ঘটনা

সুস্বাস্থ্য : সুস্বাস্থ্য আল্লাহপ্রদত্ত গুরুত্বপূর্ণ রিজিক। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, এমন দুটি নিয়ামত আছে, যে ব্যাপারে বেশির ভাগ মানুষ ধোঁকায় পতিত—সুস্বাস্থ্য ও সুসময় বা অবসর। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪১৭০)

নেককার স্ত্রী : আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘গোটা পৃথিবী মানুষের ভোগ্যবস্তু, আর পৃথিবীর ভোগ্য বস্তুসমূহের মধ্যে সর্বোত্তম হলো পুণ্যবতী স্ত্রী।’ (নাসায়ি, হাদিস : ৩২৩২)

সন্তান-সন্ততি : নেক সন্তান মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে সর্বোত্তম উপহার। পবিত্র কোরআনে নেক সন্তানকে দুনিয়ার শোভা আখ্যা দেওয়া হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দুনিয়ার জীবনের শোভা…।’ (সুরা : কাহফ, হাদিস : ৪৬)

ঈমানদারদের ভালোবাসা : ঈমানদারদের ভালোবাসাও শ্রেষ্ঠ রিজিক। কারণ আল্লাহ যাকে ভালোবাসেন, তার প্রতি ঈমানদারদের মনে ভালোবাসা সৃষ্টি করে দেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ যখন কোনো বান্দাকে ভালোবাসেন, তখন তিনি জিবরাইলকে ডেকে বলেন, আল্লাহ অমুক বান্দাকে ভালোবাসেন, তাই তুমিও তাকে ভালোবাসো। কাজেই জিবরাইল (আ.) তাকে ভালোবাসেন। অতঃপর জিবরাইল (আ.) আসমানে এই ঘোষণা করে দেন যে আল্লাহ অমুক বান্দাকে ভালোবাসেন, তোমরাও তাকে ভালোবাসো। তখন তাকে আসমানবাসীরা ভালোবাসে এবং পৃথিবীবাসীদের মধ্যেও তাকে গ্রহণীয় করা হয়।’ (বুখারি, হাদিস : ৭৪৮৫)

আরও পড়ুন : সুফীবাদের মূলনীতি গুলি জানেন কী ? না জানলে জেনে নিন

Exit mobile version