‘লেখকের কাজ শুধু লেখা। সারাদিন বই প্রমোশন, প্রচার, সোশ্যাল নেটওয়ার্কেই যদি তিনি ব্যস্ত থাকবেন, তিনি লিখবেন কখন আর ভাববেন কখন?’ এমন কথা বলতে পারেন একজনই। তিনি রাসকিন বন্ড। ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত ভারতীয় লেখক। বংশ ছাড়া আর সব কিছু তার ভারতীয়। জন্ম পাঞ্জাবে। পিতা ব্রিটিশ-ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্সের অফিসার ছিলেন। রাসকিন পড়াশোনা করেছেন সিমলা ও দেরাদুনের বোডিং স্কুলে।
বন্ডের লেখা নিয়ে বিখ্যাত ভারতীয় পরিচালক শ্যাম বেনেগাল চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছে। বিশাল ভরতরাজও ছবি বানিয়েছেন বন্ডের বই ‘ব্লু আমব্রেলা’ অবলম্বনে, যাতে মূল চরিত্রে অভিনয় করেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। এসব ছবিতে নানা আখ্যান থাকলেও শিশুদের অধিকারের বিষয় প্রাধান্য পেয়েছে। বন্ড নিজেকে শিশু সাহিত্যিক বলতেই পছন্দ করেন সবচেয়ে বেশি।
অল্প বয়সে বাবা মারা যাওয়ার কিছুদিন পর তার মা আরেকজনকে বিয়ে করে চলে যাওয়ায় বন্ডের শিশুমনে যে ক্ষত ও বেদনা তৈরি হয়েছিল, তা তিনি কখনোই ভুলতে পারেন নি। শিশুর অধিকার ও মনস্তাপ সে কারণেই তীব্রভাবে উদ্ভাসিত হয়েছে তার লেখায়।
ফলে ইংরেজিতে লেখালেখি করলেও রাসকিন বন্ডকে বিবেচনা করা হয় সর্বভারতীয় শিশু সাহিত্য বিকাশের অন্যতম পথিকৃৎ রূপে। একই সঙ্গে তাকে প্রকৃতি-ঘনিষ্ঠ লেখকের মর্যাদাও দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: World Book Day: বিখ্যাত মনীষীদের এইসব উক্তি আপনাকে আরও বেশি উৎসাহী করবে বই পড়তে
ভারতের সাহিত্য একাডেমি, পদ্মভূষণ ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ ও অগ্রণী সম্মাননা পেলেও রাসকিন বন্ড জীবন কাটান নিঃসঙ্গভাবে এবং লোকচক্ষুর অন্তরালে। উত্তর ভারতের হিমালয় সংলগ্ন হিলটাউন মুসৌরীতে তিনি একটি সাজানো বাড়িতে থাকেন আর সার্বক্ষণিক লেখালেখি করেন।
লেখালেখিই তার নেশা ও পেশা। প্রতি সপ্তাহে শনিবারে এক ঘণ্টার জন্য একটি বইয়ের দোকানে আসেন রাসকিন বন্ড। লোকজন দেখা করতে বা অন্য কারণে ঐ সময়টুকু ছাড়া তাকে পান না। এতোটাই নিয়মনিষ্ঠ ও কঠোর জীবনযাপন করতে অভ্যস্ত কিংবদন্তী তুল্য রাসকিন বন্ড।
আজ (১৯ মে) রাসকিন বন্ডের ৮৭তম জন্মদিন। প্রিয় লেখককে জন্মদিনের শুভেচ্ছা।
আরও পড়ুন: ‘যাবার বেলায় প্রণাম, প্রণাম!’… পড়ুন শঙ্খ ঘোষের নির্বাচিত কবিতা