বিশ্বকর্মা পুজো মানেই আকাশে ঘুড়ির মেলা। পেটকাটি চাঁদিয়াল, ময়ূরপঙ্খী কত রকমের ঘুড়ি শোভা পাবে এই দিনের আকাশে। এই দিন সকাল থেকেই শরতের আকাশ দখল নেয় রং বাহারি ঘুড়ির বাহারে। এই বছর করোনা আবহে সব উৎসব ফিকে হয়ে গেলেও ঘুড়ির উৎসবে কিন্তু তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি। বরং লকডাউনে জেরে কচিকাচারা আগে থেকেই মেতে উঠেছে ঘুড়ি নিয়ে।
কিন্তু এই দিন ঘুড়ি কেন ওড়ানো হয় জানেন?
পুরাণ মতে, বিশ্বকর্মা হলেন দেবলোকের কারিগর- সোজা কথায় যাকে বলা যায় দেবতাদের ইঞ্জিনিয়ার অথবা প্রকৌশলী। ব্রহ্মার আদেশে বিশ্বকর্মা দেব এই ধরাধামকে নিজে হাতে তৈরী করেন। কৃষ্ণের বাসস্থান দ্বারকা নগরী গড়ে ওঠার পিছনেও রয়েছে এই দেবতার হাত। ঋগবেদ অনুসারে, বিশ্বকর্মা হলেন স্থাপত্য এবং যন্ত্রবিজ্ঞান বিদ্যা অথবা স্থাপত্য বিদ্যার জনক।
আরও পড়ুন: ১২ রকম শ্রাদ্ধানুষ্ঠান পিতৃপুরুষদের আশীর্বাদ বয়ে আনে
বিশ্বকর্মা দেবতাদের জন্য উড়ন্ত রথও তৈরি করেছিলেন। তা স্মরণ করতেই পুজোর দিন ঘুড়ি ওড়ানোর প্রচলন শুরু হয়। শ্রমিক, ইঞ্জিনিয়ার, বিল্ডার,কারিগরদের কাছে এ’ হল এক বিশেষ দিন। যেইসব জায়গাতেই যন্ত্র-কারিগরির কাজ হয় সেখানেই বিশ্বকর্মা পুজো দেখতে পাওয়া যায়।
এই ঘুড়ি ওড়ানোর চল বেশি ছিল উত্তর কলকাতায়। তখন আড্ডা চলত পাড়ার মোড়ে মোড়ে। কথিত আছে, রাজ আমলে বর্ধমান রাজবাড়িতেও ঘুড়ি ওড়ানোর চল ছিল। রাজা মহতাবচাঁদ নাকি নিজেই ঘুড়ি ওড়াতেন। বর্ধমানের রাজারা এসেছিলেন পাঞ্জাব প্রদেশ থেকে। সেখানে ঘুড়ি উৎসব বেশ জনপ্রিয়। বর্ধমানের রাজাদের হাত ধরেই বর্ধমানে ঘুড়ি উৎসবের চল বলে মনে করা হয়।
আরও পড়ুন: এবছর মহালয়ার এক মাস পর দুর্গাপুজো! জেনে নিন কেন?