Durga Puja 2020: রাত পোহালেই কুমারী পুজো, জেনে নিন কেন দেবতারা কুমারীরূপে উপাসনা করেছিলেন দুর্গার

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

শুরু হয়ে গিয়েছে দেবীপক্ষ। যা চলবে দশদিন ধরে। দেশজুড়ে মহা সমারোহে এই উৎসব পালিত হয়। এই বছর মহামারি প্রকোপের কারণে পুজোর জৌলুসে সব জায়গায় ভাটা পড়ে গিয়েছে। বাঙালির দুর্গাপুজোর প্রধান রীতি কুমারী পুজো, যা হয়ত এ বছর নাও হতে পারে। কিন্তু এই সময় কুমারী পুজোর মাহাত্ম্য অন্যরকমের।

আজ মহাসপ্তমী। রাত পোহালেই দুর্গাষ্টমীর পুণ্য লগ্নে শুরু হবে কুমারী পূজা। তার আগে জেনে নেওয়া যাক এই পূজার পৌরাণিক এবং শাস্ত্রীয় ইতিবৃত্ত।  বৃহদ্ধর্ম পুরাণ আমাদের বলছে যে দেবতারা স্বয়ং না কি পূজা করেছিলেন দেবীর এই কুমারী রূপের। যে কাহিনি কি না আবার শারদীয়া দুর্গাপুজোর সঙ্গেই জড়িত!

শাস্ত্রানুযায়ী কুমারী পুজোর উৎপত্তি হয় কোলাসুর-কে বধ করার মধ্যে দিয়ে। গল্পে বর্ণিত রয়েছে কোলাসুর এক সময় স্বর্গ ও মর্ত্য-এর অধিকার নেওয়ার ফলে দেবতাগণ মহাকালীর শরণাপন্ন হন। দেবগণের ডাকে সাড়া দিয়ে দেবী পুর্নজন্ম-এ কুমারীরূপে কোলাসুর-কে বধ করেন, এর ফলে মর্ত্যে কুমারীপুজোর প্রচলন শুরু হয়। বিভিন্ন ধর্মীয় গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে কুমারীপুজোর পদ্ধতি। বর্ণনানুযায়ী কুমারী পুজোতে কোনও জাতি, ধর্মভেদ নেই। তবে সাধারণত ব্রাক্ষন কন্যাকেই পুজো করা হয়।

রামায়নেও রয়েছে কুমারী পুজোর কথা।  আমরা সবাই জানি, দেবী দুর্গার পূজা প্রচলিত ছিল বসন্ত কালে। কেন না সেই সময়ে সূর্য অবস্থান করেন তাঁর উত্তরায়ণ গতিতে। পুরাণ মতে, সেটা দেবতাদের জেগে থাকার সময়। তাই চৈত্র মাসের নবরাত্রিই ছিল দুর্গার আরাধনার জন্য প্রশস্ত এবং প্রচলিত।

আরও পড়ুন: Durga Puja 2020: কলাবউ বলে ডাকলেও তিনি গণেশের স্ত্রী নন, তা হলে এই পুজোর তাৎপর্য কী ?

ও দিকে, লঙ্কাধিপতি রাবণ সীতাহরণ করলে অযোধ্যার জ্যেষ্ঠ রাজকুমার রামের প্রয়োজন হল দেবী আরাধনার। রামায়ণ আমাদের বলে যে সীতাহরণের ঘটনাটি ঘটেছিল শরৎ ঋতুর শুরুর দিকে। যে হেতু রাবণ ছিলেন শৈব বা শিবের উপাসক, তাই তাঁকে পরাস্ত করার জন্য রামের প্রয়োজন ছিল দেবীর কৃপা!

দেবতারা এ কাজে কী ভাবে রামকে সাহায্য করা যায়, তা জানার জন্য দ্বারস্থ হলেন ব্রহ্মার। সেই সময়ে সূর্যের দক্ষিণায়ণ চলছে, অর্থাৎ তা দেবীর ঘুমের সময়ে। তাই ব্রহ্মা স্তব করলে এক কুমারীর বেশে আবির্ভূতা হলেন দেবী। পরামর্শ দিলেন বিল্বমূলে অকালবোধনের। দেবতারা মর্ত্যে এসে দেখলেন যে এক বেলগাছের শাখায় ঘুমিয়ে রয়েছে এক বালিকা। তাঁরা বুঝলেন, ইনিই সাক্ষাৎ দেবী! অতঃপর তাঁরা সেই বেল গাছের মূলে অবস্থান করে স্তব করলেন দেবীর। সেই বালিকা জাগরিত হয়ে ধারণ করলেন চণ্ডিকার রূপ! অন্য দিকে আবার বৈষ্ণো দেবীর উপাখ্যান বলে যে মহালক্ষ্মী, মহাসরস্বতী আর মহাকালীর এই মিলিত রূপে দেবী স্বয়ং ভক্তদের নবরাত্রির সব দিনেই কুমারী কন্যাদের ভোজন করানোর আদেশ দিয়েছিলেন!

শাস্ত্র এ ক্ষেত্রে বলছে যে এক থেকে ষোল বছরের কুমারীরা দেবীর ষোলটি রূপের প্রতীক। এক বছর সন্ধ্যা, দুই সরস্বতী, তিন ত্রিধা, চার কালিকা, পাঁচ সুভগা, ছয় উমা, সাত মালিনী, আট কুষ্ঠিকা, নয় কালসন্দর্ভা, দশ অপরাজিতা, এগারো রুদ্রাণী, বারো ভৈরবী, তেরো মহালক্ষ্মী, চোদ্দ পীঠনায়িকা, পনেরো ক্ষেত্রজ্ঞা এবং ষোল বছর বয়স অন্নদা বা অম্বিকা রূপের প্রতীক।

মহাভারতে অর্জুনের ভদ্রকালীর বন্দনার কথা যেমন আছে, তেমনই উল্লেখ রয়েছে অর্জুনের কুমারী পুজোর কথা। সুতরাং কুমারী পুজোর প্রচলন মহাভারতীয় যুগ থেকে শুরু করে আজও ভারতের নানা প্রান্তের মঠমন্দিরে, এমনকি কামাখ্যা ও নেপালেও এই পুজো হয়ে আসছে মহাসমারোহে। এদেশে মন্দির নির্মাণ করে দেবী পার্বতীকে কুমারী মূর্তিতে পুজোর প্রচলন সম্ভবত দক্ষিণ ভারতে কন্যাকুমারীতে।

আরও পড়ুন: নবরাত্রিতে কোন দিনে কোন রূপে পূজিত হন দুর্গা, জানুন…

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest