মস্কো: করোনার দাপটে একেবারে নাজেহাল অবস্থা রাশিয়ার ৷ গোটা রাশিয়াতেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা ভাইরাসের আক্রান্তের সংখ্যা৷ সেখানে মাত্র একদিনে নতুন করে ৬,১৯৮ জনের করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে, ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮৭,১৪৭। সেখানে চিনে মোট আক্রান্ত ৮২,৮৩০। আক্রান্ত ব্যাপকহারে বাড়লেও মৃতের সংখ্যা ৭৯৪-এ থামিয়ে রাখতে পেরেছে ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ।
তবে এই বিপযর্য় সামলাতে না সামলাতে রাশিয়া পড়ল নতুন সংকটের মুখে ৷ রবিবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়ে দিল, রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে ৮৭৪ জন সেনার শরীরে ধরা পড়েছে মারণ করোনা ভাইরাস ৷ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, যার মধ্যে প্রায় ৩৭৯ রয়েছেন আইশোলেশনে, তার মধ্যে কিছু রয়েছেন বিশেষ চিকিৎসা ব্যবস্থার মধ্যে ৷ প্রায় চার জনের অবস্থা খুবই সংকটজনক ৷ ১ জনকে রাখা হয়েছে ভেন্টিলেটরে৷
বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, রাশিয়া ও চিন করোনা সংক্রান্ত তথ্য গোপন করছে। ফলে মোট আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা সরকারের দেওয়া পরিসংখ্যান থেকে অনেকটাই বেশি। এই দেশগুলিতে উপসর্গহীন করোনা আক্রান্তের সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া খুব মুশকিল। এদিকে, করোনা মৃত্যুমিছিলের মধ্যে আশার খবর শুনিয়েছে নিউজিল্যান্ড। নতুন করে একজন আক্রান্ত এবং একজনের মৃত্যুর খবরে খানিকটা স্বস্তি পেয়েছে প্রশাসন। সোমবার নিউজিল্যান্ড প্রশাসন জানিয়েছে, করোনাকে দেশ থেকে মুছে ফেলতে পেরেছে তারা। আর তাই লকডাউনকে লেভেল ফোর থেকে লেভেল থ্রি-তে নামিয়ে আনা হচ্ছে।
কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার পর এ দিন প্রথম ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের বাইরে সাংবাদিক বৈঠক করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তাঁর দাবি, করোনা সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে, কিন্তু ব্রিটেন এখন ‘সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ’ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। আর তাই তিনি তড়িঘড়ি লকডাউন প্রত্যাহার করতে রাজি নন।
আরও পড়ুন: করোনা আতঙ্কের মধ্যেই সুখবর, আগামী মাসে WHO-র শীর্ষপদে ভারতীয়
ইউরোপীয় দেশগুলি অবশ্য ধীরে ধীরে লকডাউন প্রত্যাহারের পথে হাঁটছে। ফ্রান্স ধাপে ধাপে লকডাউন প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করছে। জার্মানি লকডাউন তোলার পথে হাঁটলেও জনসাধারণকে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার অনুরোধ জানিয়েছে। নরওয়েতে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের সরকারি ঘোষণার পর চালু হয়েছে প্রাথমিক স্কুলগুলি, পড়ুয়ারা ক্লাসরুমে ফিরতে শুরু করেছে। স্পেনে লকডাউন শিথিল করার দিনই করোনা আক্রান্ত ৩৩১ জনের মৃত্যুর খবর আসায় চিন্তা বাড়ছে।
ইতালি সাত সপ্তাহের লকডাউন শেষে রবিবার রাতে ছন্দে ফেরার কথা ঘোষণা করেছে। ইতালির প্রধানমন্ত্রী গুইসেপ্পে কন্তের অবশ্য বক্তব্য, ‘যদি আপনারা ইতালিকে ভালোবাসেন, তা হলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলুন।’
এর মধ্যেই কলোরোডো, মিসিসিপি, মিনেসোটা, মন্টানা, টেনেসির মতো রাষ্ট্রও লকডাউন তোলার পথে হাঁটছে। লকডাউনের জেরে আমেরিকায় বেকারত্ব ১৬ শতাংশ বাড়তে পারে, এই আশঙ্কায় লকডাউনের বিরুদ্ধে পথে নেমেছিলেন মানুষ। নিউ ইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো লকডাউন প্রত্যাহারে সংক্রমণের আশঙ্কা প্রকাশ করলেও অন্যান্য রাষ্ট্রের পথে হেঁটে এ দিন তিনিও কয়েকটি অঞ্চলে লকডাউন তোলার ঘোষণা করেছেন। কুওমোর দাবি, ওই অঞ্চলগুলিতে সংক্রমণের হার কমেছে।
আরও পড়ুন: কিম জং উন বেঁচে আছেন? খোলসা করল দক্ষিণ কোরিয়া