২০২০ সাল, করোনায় বিপর্যস্ত সারা পৃথিবী। এসময়েও ঘটেছে নানা বৈজ্ঞানিক ঘটনা। বিজ্ঞানীরা গবেষণা করেছেন নানা বিষয়ে। সন্ধান করে বেরিয়েছেন অজানা তথ্য। তাদের নজরে এসেছে এমন কিছু ঘটনা যা আগের ঘটনাকেও ছাপিয়ে গিয়েছে। পুরো বছর জুড়েই রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে বিজ্ঞানের নানা ক্ষেত্রে।
২০২০ সালে রেকর্ড সৃষ্টিকারী এমন ১০টি বৈজ্ঞানিক তথ্য নিয়ে এ আয়োজন।
সবচেয়ে বড় কচ্ছপ
এখন পর্যন্ত পাওয়া সবচেয়ে বড় কচ্ছপটি প্রায় ৮ মিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীতে ঘুরে বেড়িয়েছে। কচ্ছপটির খোলসের ব্যাস প্রায় ৮ ফুট। সম্প্রতি ভেনিজুয়েলাতে এর এই খোলস পাওয়া গিয়েছে। কচ্ছপটি বিলুপ্ত Stupendemys geographicus প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত। মায়োসিন যুগে এর বসবাস ছিল উত্তর-দক্ষিণ আমেরিকায়। এর ওজন ছিল প্রায় ২,৫০০ পাউন্ড (১,১৪৫ কেজি) যা অ্যামাজন বনে বাসকারী Peltocephalus dumerilianus প্রজাতির কচ্ছপের চেয়েও একশো গুণ বেশি। এর দৈর্ঘ্য এখন পর্যন্ত জীবন্ত সবচেয়ে বড় কচ্ছপের (Dermochelys coriacea) চেয়েও দ্বিগুণ।
দীর্ঘতম প্রাণী
২০২০ সালেই অস্ট্রেলিয়ার গভীর সমুদ্রে সন্ধান পাওয়া গিয়েছে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে লম্বা প্রাণীর। এর দৈর্ঘ্য ১৫০ ফুট (৪৬ মিটার)। এত বড় প্রাণী এর আগে কখনো নজরে আসেনি। প্রাণীটির নাম সিফোনোফোর। সিফোনোফোর হচ্ছে সুতার মতো স্বচ্ছ প্রাণী যা আরো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রাণীর সমন্বয়ে গড়ে উঠে। এই ক্ষুদ্র প্রাণীগুলোকে বলা হয় জুইডস। জুইডসগুলো প্রত্যেকে আলাদা জীবন যাপন করলেও এরা সবাই একে অপরের সাথে সংযুক্ত থেকে সিফোনোফোরের দেহ হিসেবে কাজ করে। এর আগ পর্যন্ত ১৩০ ফুটের সিফোনোফোর সন্ধান পেয়েছিলেন গবেষকরা।
পাখির সবচেয়ে লম্বা সফর
একটি গডউইট (Limosa lapponica) পাখি ২০২০ সালে সবেচেয়ে লম্বা সফরের রেকর্ডটি ভেঙে দিয়েছে। পাখিটি টানা ১১ দিন উড়েছে আলাস্কা থেকে নিউজিল্যান্ড পর্যন্ত। দীর্ঘ এ সফরে পাখিটি ৭,৫০০ মাইল (১২,০০০ কিলোমিটার) এরও বেশি দূরত্ব অতিক্রম করেছে। এখন পর্যন্ত পাখিদের ক্ষেত্রে এটিই সবচেয়ে লম্বা সফর।
প্রাচীন যমজ শিশু
এখন পর্যন্ত মানুষের জানা সবচেয়ে প্রাচীন যমজ শিশুর সন্ধান মিলেছে অস্ট্রিয়াতে। ক্রেমস-ওয়াচবার্গের একটি প্রত্নতাত্ত্বিক সাইট থেকে তাদের দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়। ডিম্বাকৃতির করবটি আবিষ্কৃত হয়েছিল ২০০৫ সালে।এরপর থেকেই সেই মৃতদেহ নিয়ে গবেষণা চলতে থাকে। ২০২০ সালে এসে গবেষকরা জানান, দেহাবশেষ দুটি ৩১ হাজার বছর আগের। সেই প্রাচীন প্রস্তর যুগের। ডিএনএ গবেষণা করে জানা যায়, এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত সবচেয়ে প্রাচীন যমজ হচ্ছে এই দুই শিশু।