অপরিণত বয়সে শরীরে বলিরেখা বা বয়সের ছাপ পড়া নিয়ে চিন্তিত? জেনে নিন, বয়সের ছাপ পড়ার ৮টি কারণ

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

বয়সের ছাপ মুখের উপর জ্যামিতিক রেখা আঁকতে শুরু করলে প্রথম প্রতিক্রিয়ায় মন খারাপ হওয়া খুব স্বাভাবিক। কিন্তু সময়কে তো আটকে রাখা সম্ভব নয়, সে তার নিজের নিয়মেই কাজ করে যায়।  সময়ের ক্রমশ এগিয়ে আসা থাবা ঠেকিয়ে রাখা? তা জানা আছে বই কী! নিয়মিত ত্বকের যত্ন, পুষ্টিকর খাবার আর জল খাওয়া, পর্যাপ্ত বিশ্রাম, শারীরিক কসরত আর মনে ভরপুর আনন্দ – শুধু এটুকু দিয়েই থামিয়ে দেওয়া যায় বয়সের হাত।

বলিরেখা নিয়ে কথা বলতে গেলে প্রথমেই আমাদের ‘এজিং প্রসেস’ টাকে মেনে নিতে হবে। মানতে হবে এটা অবশ্যম্ভাবী এবং অত্যন্ত স্বাভাবিক! আমাদের টার্গেট হবে- এজিং বিউটিফুলি (AGING BEAUTIFULLY),  স্টপিং দ্য ক্লক (STOPPING THE CLOCK) – নয়! এরপরে আমাদের এই বিউটিফুল এজিং প্রসেস-এর প্রথম ধাপে যেতে হবে, আর তা হচ্ছে, ত্বকের স্বাস্থ্য ঠিক রাখা; যাতে সঠিক সময়ে সঠিক পর্যায়ে থাকে আমাদের বয়সের ছাপ। আর তাই জানতে হবে অপরিণত বয়সে শরীরে বলিরেখা পড়ার পেছনের কারণগুলো। সেটাই আজ জানাব।

অপরিণত বয়সে শরীরে বলিরেখা পড়ার কারণ

সূর্যের আলো

ত্বকের প্রধান শত্রু সূর্যের আলো। সানস্ক্রিন আপনার যতই তেলতেলে, চিটচিটে লাগুক না কেন, এই অজুহাত কিন্তু আপনার ত্বককে বোঝাতে পারবেন না। সূর্যের রশ্মি এবং চুলার আগুনের ফলে ত্বকের কোলাজেন ব্রেক করে। যে কারণে ত্বক পাতলা হতে থাকে এবং ঝুলে পড়ে। ধীরে ধীরে রিংকেল তৈরি হয়।

খুব গরম বা খুব ঠান্ডা তাপমাত্রা

অতিরিক্ত গরমই বলুন বা অতিরিক্ত ঠান্ডা, দুইই ত্বক থেকে আর্দ্রতা ছিনিয়ে নিয়ে ত্বক ক্রমশ শুকনো করে তোলে৷ তার অনিবার্য ফল, ত্বকে সূক্ষ্ম রেখা৷ বাতানুকূল পরিবেশে বসে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের ত্বকে তাই বয়সের ছাপ তাড়াতাড়ি পড়ে৷

ধূমপান

ধুমপানের ফলে মুখের চারপাশে ফাইন লাইন-তো দেখা যায়ই। সাথে সাথে এর কেমিক্যাল-গুলো দেহের ভিটামিন সি লেভেল কমিয়ে দেয়। যা সূর্যের রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করার হার কমায়। এর ফলে ডাবল সান ড্যামেজ হয়। একজন সিগারেট প্রেমী এবং অধূমপায়ীর ত্বকের ভেতরে পার্থক্য দেখলে আপনি চমকাবেন কিন্তু! চেষ্টা করতে হবে প্যাসিভ স্মোকিং ও এড়িয়ে চলতে। এটা কিন্তু আরও বেশি ক্ষতিকর।

ফ্যাটবিহীন ডায়েট

আজকাল সবাইতো সবসময় ডায়েট-এর উপরেই থাকছে। বছরের পর বছর দেহের দরকারি ফ্যাট-টুকুও খাচ্ছেন না এমন মানুষ অনেক খুঁজে পাওয়া যাবে। কিন্তু কি জানেন, স্নেহ বা ফ্যাট-এর একটা প্রধান কাজ হলো দেহের ত্বককে আদ্র বা ময়েশ্চারাইজড রাখা। বাইরে থেকে এই লোশন ঐ তেল মেখে এটা করা যায় না। শুষ্ক ত্বক খুব দ্রুত ফাইন লাইন বা রিংকেল-এর শিকার হয়। আর এইজন্য আজকাল খুব কম বয়সি কিশোরী বা তরুণী যারা কোনও সঠিক জ্ঞান অর্জন না করে নিজে নিজে সারাদিন ‘ডায়েট’ করে তাদের ত্বকের লাবণ্য কমছে, ফাইনলাইন বাড়ছে।

আরও পড়ুন: চোখের নিচের কালি মুছে যাবে ১ মিনিটে, ফলো করুন এই টিপস…

eye makeup

মেকআপ টেকনিক

আই মেকআপ করার সময় ঠিক কতক্ষণ ব্রাশ অথবা আঙ্গুল দিয়ে চোখের চারপাশে টানা হেঁচড়া করছেন খেয়াল করেছেন কখনও? ৩০ মিনিট প্রায়! একটা জটিল লুকের জন্য। আমাদের আই এড়িয়ার ত্বক একটা টিস্যু পেপার থেকেও বেশি পাতলা, জানেন এটা? একদিন আপনার নরম, কোমল, ব্রাশ-গুলো দিয়ে এক পিস টিস্যুর উপরে মেকআপ করার ট্রাই করে দেখবেন তো! ৫ মিনিটের আগেই ছিঁড়ে যাবে। তো তারও বেশি প্রেসার দিয়ে আপনি রোজ আই মেকআপ করছেন, ডাবল ট্রিপল প্রেসার দিয়ে আবার সেই মেকআপ ঘসে তলার চেষ্টা করছেন। ফাইন লাইন পড়বে না তো কী! মনে রাখবেন, মেকআপ ডেইলি না করলেও চলে। আর যদি করতেই হয় তবে রিমুভ করার জন্য অয়েল ক্লিঞ্জার ইউজ করবেন। তেল আর কাপড় দিয়ে ঘষাঘষি করবেন না। চোখের পাশে প্রতিটা টাচ আপনার ফাইন লাইন-এর চান্স বাড়াচ্ছে এটা মাথায় রেখে মেকআপ ব্রাশ-এর দিকে হাত দেবেন।

গ্রাভিটি

খুব স্বাভাবিক একটা ফ্যাক্টর হলো গ্রাভিটি। পৃথিবীর স্বাভাবিক গ্রাভিটি আমাদের ত্বকের স্বাভাবিক এজিং এবং লুজ স্কিন-এর পেছনে অনেকটাই দায়ি। কম বয়সে আমাদের ত্বকের কোলাজেন আর স্বাভাবিক ইলাসটিসিটি-এর কারণে এই নিম্নমুখী টান অতটা প্রভাব ফেলে না। কিন্তু কখন এই গ্রাভিটিও আপনার ২০ বছর বয়সেই ইফেক্ট দেখাতে শুরু করবে জানেন? যখন আপনি দিনে ৬-৭ ঘণ্টা সময় নিচের ভঙ্গিতে বসে থেকে কাটিয়ে দেবেন। নিশ্চয়ই অনেকে এভাবে বসে বসে ফোন এই আর্টিকেল-টি পড়ছেন! যদি তাই হয়, সোজা হয়ে বসুন। নিজের ফোন আই লেভেল-এ তুলে আনুন। এমনভাবে বসুন যাতে আপনার ঘাড়ে এবং থুতনির নিচে ভাঁজ না পড়ে।

অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহারের কারণে চোয়ালের অংশ, গলা এবং ডাবল চিনের খুলে যাওয়া এবং এই অংশে রিংকেল পড়াটা এখন একটা বিশাল সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ধরণের বয়সের ছাপের একটা নামও দিয়েছেন ডাক্তাররা – টেক জওলস (TECH JOWLS)। বিশ্বাস হচ্ছে না? এটা লিখে গুগল সার্চ করুন। শত শত টেক জওলস হরর স্টোরি পেয়ে যাবেন।

মানসিক চাপ

অতিরিক্ত স্ট্রেস ও টেনশনের একাধিক কুপ্রভাব রয়েছে। এর ফলে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, মুড সুইং, ডিপ্রেশন বা ঘুমের অভাবের মতো নানা উপসর্গ দেখা দেয় যা একসঙ্গে ত্বকের উপর প্রভাব ফেলে ও ত্বক বয়স্ক দেখায়।

ঘুমের অভাব

দেহের স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী রাত ১০ টা থেকে দেহের মেরামত কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু আপনি রাত ৩ টা পর্যন্ত ফেসবুকিং না করে থাকতেই পারেন না। ফলে এসব মেরামত কর্মী হরমোন-গুলো কনফিউজড হয়ে যায় যে তারা নষ্ট ত্বক ঠিক করবে নাকি জেগে থাকা দেহের কাজকর্মই করতে থাকবে। এভাবে বছরের পর বছর চলার পর একসময় এই হরমোন-গুলোর ক্ষমতা স্থায়ীভাবে নষ্ট হয়ে যায়। আর আপনি পান একটা শুকনো ম্যাড়ম্যাড়ে ত্বক যা ফাইন লাইন-এ ভর্তি!

শরীরকে ঘুমের জন্য তৈরি করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। রোজ ৬-৮ ঘণ্টা ঘুমোতেই হবে। অতিরিক্ত ফ্লুরসেন্ট আলো স্বাভাবিক ঘুমের সাইকেল-কে নষ্ট করে। তাই নিজের জন্য নাইট লাইট সেটিং ইউজ করবেন। পিসি ইউজ করলে সেটাতেও একই সেটিং চালু করে রাখবেন। এতে ব্রেন ব্লু লাইট-এর কারনে ঘুমাতে বাধা পাবে না। সন্ধ্যার পর ফ্লুরোসেন্ট বাটি জ্বালাবেন না। অনলি ইয়েলো লাইট ইউজ করবেন। হাতের কাছে ল্যাভেন্ডার অ্যাসেনশিয়াল অয়েল রাখতে পারেন। ১ ফোঁটা বালিশে দিয়ে রাখবেন। ল্যাভেন্ডার-এর ঘ্রান স্ট্রেস কমায়, ঘুমাতে সাহায্য করে। মনে রাখবেন, এক রাতের ঘুম ১০০০০ টাকার কসমেটিক থেকেও ভালো কাজ করে। আর সেই ঘুমটাকে যতটা গভীর করা যায় ততই ভালো। এতে একই সাথে সুস্থ দেহ সুন্দর ত্বক, দুইই পাবেন।

আরও পড়ুন: কোভিড থেকে বাঁচতে দীর্ঘ সময় মাস্ক পরে থাকায় ত্বকে হামলা করছে ‘মাস্কনে’, জেনে নিন বাঁচার উপায়

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest