কোভিড থেকে বাঁচতে দীর্ঘ সময় মাস্ক পরে থাকায় ত্বকে হামলা করছে ‘মাস্কনে’, জেনে নিন বাঁচার উপায়

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

কিছুদিন আগে একটা মিম খুব ঘুরছিল সোশাল মিডিয়ায়, হয়তো অনেকেই দেখে থাকবেন। কোভিড থেকে বাঁচতে একটানা মাস্ক পরে থাকার ফলে কেমন মুখে মাস্কের মতো দাগ হয়ে গেছে, সেটাই মিমের বিষয়বস্তু। আপাতভাবে মিমটি মানুষকে হাসানোর জন্য বানানো হলেও এর আড়ালে কিন্তু লুকিয়ে রয়েছে কঠিন সত্য। দীর্ঘদিন একটানা মুখে মাস্ক পরতে পরতে সত্যিই অনেকরকম ত্বকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ঠিক যেমন একটানা ঘড়ি পরতে পরতে ওই জায়গাটা বরাবর ত্বকের রঙে তফাত হয়ে যায়, একই সমস্যা হতে পারে একটানা মাস্ক পরলেও। সঙ্গে ব্রণ, অ্যালার্জি, র‍্যাশের মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে ত্বকে।

বেশিক্ষণ মাস্কের অত্যাচার সহ্য করতে হলেই নাক, মুখ জুড়ে ছোট, বড় লালচে-গোলাপি ব্রণ, র‍্যাশ উঁকি দিচ্ছে। খসখসে ত্বক, চুলকানি, ঠোঁটের চারপাশে লাল লাল গুটির মতো দাগ—সে একেবারে যাচ্ছেতাই কাণ্ড। বয়ঃসন্ধিতেও ব্রণর সমস্যায় ভোগেননি যাঁরা, তাঁরাও মাস্ক-জনিত সমস্যায় জেরবার। ডারমাটোলজিস্টরা এই মাস্কঘটিত ব্রণদের নাম দিয়েছেন মাস্কনে (Maskne) । অর্থাৎ মাস্কের কারণে যে ব্রণ বা অ্যাকনে (Mask+Acne) ।

ডার্মাটোলজিস্টরা বলছেন, অনেকে আবার মাস্ক সরিয়ে বার বার মুখে হাত দেন, যার ফলেও হাতের ময়লা ঠোঁটে, নাকে লেগে যায়। তার উপর আবার মাস্ক চাপিয়ে দিলে ঘাম জমে সেই জায়গার ত্বকের বারোটা বেজে যায়। এমনিতেই গরমের সময় ব্রণর সমস্যায় ভোগেন অনেকে। তার উপরে মাস্কে দীর্ঘক্ষণ মুখ ঢেকে রাখলে ত্বক আরও বেশি বিদ্রোহ ঘোষণা করে। চামড়া খসখসে, শুকনোও হয়ে যায় অনেকের। বেশি চুলকালে সেই জায়গায় ব্রণ ফেটে গিয়ে বিপত্তি দেখা যায়। তার উপরে ফের মাস্ক চাপানো মানে কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দেওয়ার মতো। কাজেই মাস্কযুক্ত ব্রণ থুরি মাস্কনে হল সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় ত্বকের সমস্যা।

https://www.instagram.com/p/B9gmYPLJFt_/?utm_source=ig_embed

আরও পড়ুন: চোখের নিচের কালি মুছে যাবে ১ মিনিটে, ফলো করুন এই টিপস…

মাস্ক পরার ফলে ত্বকে কী কী ধরনের সমস্যা হতে পারে, আর তার থেকে বাঁচার উপায়ই বা কী? টিপস দিলাম আমরা, জেনে রাখুন আপনিও!

ব্রণর উৎপাত
নাক-মুখ একটানা চাপা মাস্ক দিয়ে ঢেকে রাখার ফলে ওই অংশে খুব ঘাম হতে থাকে। যাঁদের এমনিতেই ব্রণর ধাত, তাঁদের সমস্যা বেশি হয়। মুখের এই অংশ ব্রণয় ভরে যায়, ব্যথাও হয়। এ ক্ষেত্রে স্পট ট্রিটমেন্ট সবচেয়ে ভালো কাজ দেবে। ব্রণ নিরাময়ের যে সব ক্রিম ওষুধের দোকানে পাওয়া যায়, তা ব্যবহার করে দেখুন। চন্দন বেটে ব্রণর উপরে লাগালে আরাম পাবেন। বাইরে থেকে ফিরে মুখ অয়েল-ফ্রি ফেসওয়াশ দিয়ে ধুয়ে হালকা ময়শ্চারাইজার লাগান।

ঘামের সমস্যা
একে প্রচণ্ড গরম, তার উপর মাস্কে নাকমুখ ঢাকা, এ অবস্থায় ঘাম তো হবেই! আপনার সর্দিকাশির মতো কোনও উপসর্গ না থাকলে বাড়ির ভিতরে মাস্ক পরে থাকার দরকার নেই। বাইরে যাওয়ার সময় ব্যাগে ওয়েট টিস্যু রাখুন। মুখ ঘেমে গেলে টিস্যু দিয়ে মুছে নিন। সুতির কাপড়ের তৈরি মাস্ক পরতে পারেন, গরম একটু কম লাগবে।

লালচেভাব
যাঁদের ত্বক সেনসিটিভ, মাস্ক পরলে তাঁদের ত্বক লাল হয়ে যাওয়ার বা র‍্যাশ বেরোনোর আশঙ্কা থেকেই যায়। অনেক সময় জায়গাটা চুলকোয়, আঁশের মতো চামড়া উঠতে থাকে। মাস্কের মেটেরিয়ালের সঙ্গে ত্বকের বিক্রিয়ায় এমন হয়ে থাকে। বাড়ি ফিরেই মাস্ক খুলে ফেলুন। ঠান্ডা জলে ধুয়ে নিন জায়গাটা। তারপর অ্যালো ভেরা জেল লাগিয়ে নিলে ধীরে ধীরে লালচেভাব কেটে যাবে।

অ্যালার্জি
মুখে মাস্ক পরলেই জ্বালা করছে, চুলকোচ্ছে, দানা দানা বেরোচ্ছে? সম্ভবত মাস্কের উপাদানটি আপনার ত্বকের সঙ্গে মানানসই নয়। মাস্কের ধরন বদলে দেখুন। গেঞ্জি কাপড়ের বদলে সুতির মাস্ক পরুন। অ্যালার্জির কারণে সমস্যা হলে কমে যাওয়ার কথা।

ত্বকের রঙে তফাত
একটানা কোনও জায়গা চাপা থাকলে সে অংশে রঙের তফাত হয়ে যায়। এই কারণে ঘড়ির ব্যান্ডের নিচে, চটির স্ট্র্যাপের ঠিক নিচের অংশে চামড়ার রং বাকি অংশের চেয়ে হালকা দেখায়। একটানা মাস্ক পরার অভ্যেস করে ফেললে আপনার মুখেও একই অবস্থা হবে, অর্থাৎ মাস্কের ঠিক নিচের অংশটুকুর রং মুখের বাকি অংশের চেয়ে হালকা দেখাবে। মাস্ক পরা বন্ধ করার উপায় যখন নেই, তখন এ থেকে বাঁচার একটাই উপায়, পুরো মুখ ঢেকে ফেলা। বাইরে বেরোলে মাস্কের বদলে সুতির নরম স্কার্ফ বা ওড়না দিয়ে পুরো মুখ আর মাথা জড়িয়ে নিন, চোখে পরুন রোদচশমা। তাতে কোভিড থেকেও বাঁচবেন, আবার আপনার অমূল্য ত্বককেও বাঁচাতে পারবেন।

skiskincare acne 3nt31jpg

বিশেষ টিপস
পরিষ্কার শুকনো মাস্ক পরুন: ভেজা মাস্ক থেকে ত্বকে সংক্রমণ হতে পারে, প্রদাহ তৈরি হতে পারে। বাইরে বেরোলে সঙ্গে দু’ তিনটি বাড়তি মাস্ক রাখুন। ভিজে গেলেই বদলে নিন,

মাস্ক পরার আগে মুখে ভারী ক্রিম বা ময়শ্চারাইজার মেখে নিন: শিয়া বাটার, কোকো বাটার, জোজোবা অয়েল আপনার ত্বকে বাড়তি সুরক্ষা জোগায়। তাই আগে মুখে ভালো করে ময়শ্চারাইজার মেখে তবেই মাস্ক পরবেন।

মেকআপ হালকা রাখুন: মাস্ক পরলে আপনার মুখ ঘামবেই। তার উপর মুখে ভারী মেকআপ করলে তা ঘামের সঙ্গে মিশে ত্বকে বিক্রিয়া করতে পারে। তাই মেকআপ খুব হালকা রাখুন, ফাউন্ডেশন, কমপ্যাক্ট যতটা সম্ভব কম মাখুন এ ক’টা দিন।

ত্বকের নিয়মিত যত্ন নিন: মুখ নিয়মিত পরিষ্কার করে টোনার আর ময়শ্চারাইজার লাগিয়ে রাখুন। অ্যালো ভেরা বেসড টোনার আর ময়শ্চারাইজার ত্বক স্নিগ্ধ রাখবে।

ভরসা থাক বরফে: ত্বক খুব জ্বালা করলে বা লাল হয়ে গেলে বরফের কমপ্রেস নিতে পারেন। পাতলা কাপড়ে বরফ মুড়ে লাল হয়ে যাওয়া অংশে ধীরে ধীরে লাগালে আরাম পাবেন।

আরও পড়ুন: ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরছে না? ব্যবহার করে দেখুন এই ৫ পকেট ফ্রেন্ডলি ফেসিয়াল স্ক্রাবার

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest