নয়াদিল্লি: অশান্তি রুখতে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়াকে কেন্দ্র করে পুলিশের ভূমিকা যখন প্রশ্নের মুখে, তখনই নতুন প্রধান পেল দিল্লি পুলিশ। অমূল্য পট্টনায়ককে সরিয়ে দিল্লির নতুন পুলিশ কমিশনার হলেন এসএন শ্রীবাস্তব।
আগামিকাল শেষ হচ্ছে দিল্লি পুলিসের প্রধান অমূল্য পট্টনায়েকের মেয়াদ। তার আগেই ওই পদে বসানো হল আইপিএস অফিসার এসএন শ্রীবাস্তবকে। সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিস ফোর্স (সিআরপিএফ) থেকে সরিয়ে স্পেশ্যাল কমিশনার (আইন ও শৃঙ্খলা) পদ বসানো হয় ১৯৮৫ ব্যাচের অরুনাচল প্রদেশ- গোয়া- মিজোরাম এবং অন্যান্য কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চলের অফিসারকে।স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, শ্রীবাস্তব দিল্লির নতুন পুলিশ কমিশনার হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করছেন ১ মার্চ।
চার দিন আগে শ্রীবাস্তবকে দিল্লি পুলিশের বিশেষ কমিশনার (আইন ও শৃঙ্খলা) পদ নিয়োগ করা হয়েছিল। ফলে, দিল্লির সংঘর্ষের ঘটনার জেরেই এই রদবদল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
গত রবিবার থেকে দিল্লির উত্তরপূর্ব অংশে হিংসাত্মক ঘটনা শুরু হয়। সোমবার, তা পুরোদস্তুর সাম্প্রদায়িক অশান্তির চেহারা নিয়ে নেয়। তার জের বুধবার ভোর পর্যন্ত চলতে থাকে। এই সময়ে প্রচুর মানুষের মৃত্যুর পাশাপাশি গাড়ি-বাড়ি-দোকান ঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছিল উত্তরপূর্ব দিল্লির জাফরাবাদ, মৌজপুর, বাবরপুর, গোকুলপুরির মতো এলাকায়।
অমূল্য পট্টনায়েক
কিন্তু সব ক্ষেত্রেই প্রশ্নের মুখে ছিল পুলিশের ভূমিকা। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, অশান্তি রুখতে বিশেষ কোনো ব্যবস্থাই নিতে দেখা যায়নি পুলিশকে। অন্য দিকে মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল বলেন, ঊর্ধ্বতন অফিসারদের থেকে কোনো নির্দেশ না পাওয়ায় পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠে যায় দিল্লির পুলিশ প্রধান অমূল্য পট্টনায়কের ভূমিকা নিয়ে। হিংসা শুরু হওয়ার পর থেকে এএনআইকে কয়েক বার সাক্ষাৎকার দেওয়া ছাড়া প্রকাশ্যে বিশেষ আসতেই দেখা যায়নি তাঁকে।
এই অবস্থায় উত্তরপূর্ব দিল্লির পরিস্থিতির উন্নতির স্বার্থে বিশেষ কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত করা হয় এসএন শ্রীবাস্তবকে। এই আইপিএস অফিসারকে রাতারাতি সিআরপিএফ থেকে সরিয়ে এনে দিল্লি পুলিশের গুরুদায়িত্ব দেওয়া হয়। বিশেষ কমিশনার হিসেবে শ্রীবাস্তব নিযুক্ত হতেই, পুলিশও যেন কিছুটা নড়েচড়ে বসে। গত কয়েক দিন দাঙ্গাবিধ্বস্ত এলাকা কার্যত চষে বেড়িয়েছেন শ্রীবাস্তব। বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছেন, আশ্বাস দিয়েছেন। এই কারণেই সম্ভবত বড়ো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে বড়ো উপহার পেয়ে গেলেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে অজিত দোভাল জানিয়েছিলেন, “অশান্তি চলাকালীন দিল্লির মানুষ পুলিশের উপর বিশ্বাস রাখতে পারছিলেন না। যে কোনও কারণেই হোক দিল্লি পুলিশ কমিশনারের ভামূর্তিও ইতিবাচক নয়। দিল্লিতে দ্রুত নতুন পুলিশ কমিশনার নিয়োগ করা হবে।” এরপর যে কমিশনারকে বদল করা হবে সে একপ্রকার নিশ্চিত ছিলেন সকলেই। এরপর এই পদে রদবদল শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা ছিল।