ওয়েব ডেস্ক: বেঙ্গালুরুতে চিকিৎসা করতে গিয়ে আটকে পড়েছিলেন অনেকে। শ্রমিক স্পেশাল চালু হলে তাঁরা তাতে ফেরার চেষ্টা করেন। একই সঙ্গে অবর্ণনীয় দুর্ভোগের মধ্যেও পড়েন বলে অভিযোগ।
বেঙ্গালুরু থেকে নিউ জলপাইগুড়ি গামী শ্রমিক স্পেশ্যালে যাত্রীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। এদিন সকালে ট্রেন আসানসোলে পৌঁছলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন যাত্রীরা। অভিযোগ, খাওয়া-জল কিছুই দেওয়া হয়নি তাঁদের। এমনকী বাথরুম চূড়ান্ত নোংরা। সেখানে পা রাখা যাচ্ছে না বলে আরও অভিযোগ যাত্রীদের। বহু যাত্রীকে নির্দিষ্ট গন্তব্যে নামানো হয়নি বলেও অভিযোগ করেছেন অনেকে। সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং শিকেয় বলেও অভিযোগ।
আরও পড়ুন: রাজ্যজুড়ে শুরু হচ্ছে বাস-মিনিবাস পরিষেবা,ভাড়া বাড়ছে ৩ গুণ
শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন চালু হওয়ামাত্রই বেঙ্গালুরু-নিউ জলপাইগুড়িগামী ট্রেনে চড়ে বসেন তাঁরা। তবে কারও গন্তব্য হাওড়া তো কারও হুগলি। আবার কেউ কেউ নদিয়া, কলকাতা, পূর্ব মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, মুর্শিদাবাদ, বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম ও উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা। তাই নিউ জলপাইগুড়ি যেতে নারাজ তাঁরা। তাই কীভাবে মাঝপথে নেমে যাওয়া যায় সেই পরিকল্পনাই করছিলেন তাঁরা। ইঞ্জিন বদলের জন্য ট্রেন থামামাত্রই দুর্গাপুর স্টেশনে নেমে পড়েন দক্ষিণবঙ্গের অন্তত ৫৭ জন যাত্রী। স্টেশনে ব্যাপক বিক্ষোভও দেখান তাঁরা। পরে যদিও সুষ্ঠুভাবে ঘরে ফিরিয়ে দেওয়া হয় তাঁদের।
বেঙ্গালুরু-নিউ জলপাইগুড়ি শ্রমিক স্পেশ্যালে দক্ষিণবঙ্গের ৫৭ জন যাত্রী ছিলেন। পুরুলিয়া ষ্টেশনে শুকনো খাবারের জন্যে ট্রেন কিচ্ছুক্ষণ দাঁড়ালেও কেউ নামতে পারেননি। আসানসোলে জোর করে কয়েকজন নেমে পড়েন। দুর্গাপুরে ইঞ্জিন বদলের জন্যে ট্রেন থামতেই কয়েকজন যাত্রী নেমে পড়েন। রেল পুলিশ প্রাথমিকভাবে বাধা দেয়। তবে যাত্রী বিক্ষোভের জেরে পিছু হটে তারা। এই পরিস্থিতির জন্যে প্রশাসনও তৈরি ছিল না। রেল পুলিশের তরফে যাত্রীদের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে বসিয়ে রেখে তাঁদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। ৮টি শিশুর দুধের ব্যবস্থা করা হয়।
এরপর মহকুমা হাসপাতাল থেকে স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ ও দুর্গাপুরের মহকুমা শাসক অনির্বাণ কোলে দুর্গাপুর ষ্টেশনে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। দুর্গাপুরের ৯ যাত্রী ছাড়াও নদিয়া, কলকাতা, পূর্ব মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, মুর্শিদাবাদ, বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম ও উত্তর ২৪ পরগনার যাত্রীরা ছিলেন। সবাইকে থার্মাল স্ক্রিনিং করা হয়। সবার নাম, ঠিকানা-সহ বিস্তারিত তথ্য লিখেও রাখে প্রশাসন। দুর্গাপুরের যাত্রীদের মহকুমা হাসপাতালে পরীক্ষার জন্যে নিয়ে গিয়ে তারপর ঘরে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তড়িঘড়ির মধ্যে বিভিন্ন জেলার যাত্রীদের জন্যে গাড়ির ব্যবস্থা করে তাদের ওই জেলায় পাঠায় দুর্গাপুরের প্রশাসন। মহকুমা শাসক অনির্বাণ কোলে বলেন, “দুর্গাপুরে নামা প্রতিটি যাত্রীরই খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করে তাদের নির্দিষ্ট জেলায় ছাড়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। তাদের সমস্ত তথ্যও থাকছে আমাদের কাছে।”
আরও পড়ুন: গ্রামীণ অর্থনীতিকে স্বনির্ভর করতে রাজ্য সরকারের নয়া কর্মসূচি ‘মাটির সৃষ্টি’