দিল্লি ক্যাপিটালস: ২০ ওভারে ১৫৭/৮ (স্টোইনিস ৫৩*, শামি ৩/১৫)
কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব: ২০ ওভারে ১৫৭/৮ (মায়াঙ্ক ৮৯, অশ্বিন ১/২)
স্কোর সমান। দিল্লি ক্যাপিটালস সুপার ওভারে জয়ী।
চূড়ান্ত নাটক! পেণ্ডুলামের মতো ম্যাচ ঘুরল এদিক থেকে ওদিকে। কখনও দিল্লি এগিয়ে তো কখনও পাঞ্জাব। শেষপর্যন্ত স্কোরও এক হয়ে গেল। ফলে চলতি IPl-এর দ্বিতীয় ম্যাচই সাক্ষী থাকল সুপার ওভারের। একদিকে, স্টোইনিসের ঝোড়ো ব্যাটিং। অন্যদিকে, মায়াঙ্ক–শামির দুরন্ত পারফরম্যান্স। খাতায় কলমে উত্তর ভারতের ডার্বি হল আর পাঁচটি ডার্বি ম্যাচের মতোই। শেষপর্যন্ত অবশ্য সুপার ওভারে বাজিমাত করল দিল্লি ক্যাপিটালস (Delhi Capitals)।
রবিবারের ম্যাচ যে এরকম উত্তেজনার হবে, পেন্ডুলামের মতো দুলবে বারবার, তা কেউ আগে ভাবেননি। টস জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন কিংস ইলেভেন পঞ্জাব অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। উইকেট বোলিং সহায়ক। সেই কারণেই দিল্লি ক্যাপিটালসকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠিয়ে অল্প রানে আটকে রাখাই উদ্দেশ্য ছিল পঞ্জাব অধিনায়কের। দিল্লি ক্যাপিটালসের অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ারও টস জিতলে প্রথমে বল করতেই চাইতেন। সে কথা টসের পরে জানান দিল্লির তরুণ অধিনায়ক। উইকেটে ঘাস থাকায় দিল্লির দুই ওপেনার পৃথ্বী শ ও শিখর ধাওয়ান শুরুতে সুবিধা করতে পারেননি। মহম্মদ শামি রীতিমতো বলকে কথা বলাতে শুরু করেন তাঁর প্রথম ওভার থেকেই।
শামির বাউন্সার চালাতে গিয়েছিলেন ধওয়ন (০)। রান নেওয়ার জন্য কোনও দিকে না তাকিয়ে দৌড়তে শুরু করেন বাঁ হাতি ওপেনার। পৃথ্বী শ এ দিকে নন স্ট্রাইকার্স এন্ড থেকে নড়েননি। ফলে রান আউট হন ধওয়ন। ক্রিজে আসার পর থেকেই হেটমায়ারকে বিব্রত করতে থাকেন শামি। ওভারের শেষ বলে হেটমায়ারের ক্যাচ ছাড়েন কে গৌতম।
আরও পড়ুন: প্রথম ম্যাচের পরই নাম না করে রায়না-ভাজ্জিদের বিঁধলেন ধোনি !
সবুজ ঘাসের উইকেট পেয়ে বল হাতে আগুন জ্বালাতে শুরু করেন শামি। বাংলার পেসারের বল মারতে গিয়ে ফেরেন পৃথ্বী শ (৫)। হেটমায়ারকে্ও (৭) ফেরান শামি। দিল্লির ইনিংস গোছান পন্থ ও আইয়ার। দিল্লি অধিনায়ক মারেন তিনটি বিশাল ছক্কা। আইয়ার ও পন্থ ৭৩ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। রবি বিষ্ণোইকে মারতে গিয়ে আউট হন পন্থ (৩১)। বিষ্ণোইয়ের এটাই আইপিএলে প্রথম উইকেট।
পঞ্জাব অধিনায়ক দিল্লির ইনিংসে ভাঙন ধরানোর জন্য ফেরান শামিকে। পঞ্জাবের পেসার ফিরে এসেই আউট করেন আইয়ারকে (৩৯)।ইনিংস শেষে তিনি চার ওভারে ১৫ রান দিয়ে তিনটি উইকেট নেন। শেষের দিকে স্টোইনিস ব্যাটে ঝড় তুলে ২১ বলে ৫৩ রান করেন। তিনটি বিশাল ছক্কা মারেন তিনি। তাঁর এই ইনিংসের জন্যই দিল্লি লড়াই করার মতো রান তোলে স্কোরবোর্ডে।
FIFTY!@MStoinis puts up a splendid show here in Dubai with a fine half-century off 20 deliveries.
Just what the @DelhiCapitals needed #Dream11IPL pic.twitter.com/SJDlFLbRG5
— IndianPremierLeague (@IPL) September 20, 2020
জবাব দিতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শুরু করেন কিংস অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। ১৯ বলে ২১ রান করে মোহিত শর্মার বলে বোল্ড হন তিনি। অশ্বিন বল করতে এসেই ফেরান করুণ নায়ারকে। নিকোলাস পুরানও আউট হন অশ্বিনের বলে। অশ্বিনের বোলিংয়ে কিংস ইলেভেনের উপরে চাপ তৈরি করে দিল্লি। কিন্তু চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তারকা অফস্পিনারকে। ম্যাক্সওয়েলকে আউট করে রাবাদা আরও সমস্যায় ফেলে দেন কিংস ইলেভেনকে। সরফরাজ খানের উচিত ছিল উইকেটে পড়ে থাকা। অক্ষর পটেলকে অযথা মারতে গিয়ে নিজের উইকেট ছুড়ে দেন সরফরাজ।
মারমুখী ব্যাটিং করছিলেন গৌতম। রাবাদার বলে তাঁকে তালুবন্দি করেন পন্থ। শেষ ওভারে স্টোয়নিসের প্রথম বলে ছক্কা মারেন মায়াঙ্ক। সবাই যখন ধরেই নিয়েছেন ময়ঙ্ক ম্যাচ জেতাবেন কিংসকে, ঠিক সেই সময়ে স্টোয়নিসের বলে ফেরেন তিনি। শেষ বলে আউট হন জর্ডন। ফলে দু’ দলের রান সমান হওয়ায় ম্যাচ যায় সুপার ওভারে। সুপার ওভারে দিল্লির বোলার রাবাদা আগুন জ্বালান। লোকেশ রাহুল ও নিকোলাস পুরানকে আউট করেন রাবাদা। মাত্র ২ রান করে কিংস। ব্যাট করতে নেমে খুব সহজেই ম্যাচ জিতে নেয় দিল্লি ক্যাপিটালস।
মায়াঙ্ক খেলেন ৬০ বলে ৮৯ রানের ইনি্ংস। কাজে এল না তাঁর দুরন্ত ইনিংস। তবে এ রকম ফর্মে থাকা ব্যাটসম্যানকে সুপার ওভারে ওপেন করতে পাঠালো না কেন কিংস ইলেভেন, এটাই রহস্যের।
আরও পড়ুন: মাহি ওয়ে! বাইসেপ, দাঁড়ির নয়া স্টাইল – অবসরের পর যেন আরও হ্যান্ডসাম ধোনি