কিং খানের সামনেই রাজকীয় পারফরম্যান্সে ম্যাচ জিতে নিল কলকাতা। নিয়ন্ত্রিত বোলিং আর ব্যাটে ফিল্ট সল্টের কালবৈশাখী ঝড়ে কেএল রাহুলের দলকে তারা হারাল ৮ উইকেটে।
এর আগে আইপিএলে (IPL) লখনউকে কখনই হারাতে পারেনি নাইটরা। ৩টি সাক্ষাতের প্রতিটিই হেরেছে। গত মরশুমে প্লে অফে উঠতে হলে শেষ ম্যাচে লখনউয়ের বিরুদ্ধে জিততেই হত রাসেলদের। কিন্তু মাত্র ১ রানে হেরে যায় তারা। সেই সমস্ত হিসেব নিকেশ মেলানোর জন্য বোধহয় পয়লা বৈশাখের দিনটাই বেছে নিয়েছিল নাইটরা।
ইডেনের পিচ ব্যাটিং সহায়ক। সেই পিচে টস জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন শ্রেয়স ।সেই সিদ্ধান্ত যে কতটা ঠিক তা বোঝা গেল লখনউয়ের পাওয়ার প্লে-তেই। মাত্র ৪৯ রান তুলল লখনউ। কেকেআরের বোলারেরা রান আটকে রাখছিলেন। সেই কাজ সব থেকে ভাল করলেন সুনীল নারাইন। ৪ ওভারে মাত্র ১৭ রান দিলেন তিনি।
পাওয়ার প্লে-র পর লখনউয়ের রানের গতি আরও কমে গেল। ২৭ বলে ৩৯ রান করা রাহুল মাত্র দু’টি ছক্কা মেরেছেন। ২৭ বলে ২৯ রান করা আয়ুশ বাদোনি মেরেছেন একটি। তাঁদের মন্থর ইনিংস লখনউয়ের বড় রান তোলার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। যে লখনয় প্রথম ৬ ওভারে ৪৯ রান তুলেছিল, সেখানে পরের ৯ ওভারে তারা তোলে মাত্র ৬৪ রান। মনে হচ্ছিল লখনউয়ের ইনিংস হয়তো ১৪০ রানের মধ্যে থেমে যাবে। কিন্তু সূর্য ডুবতেই ইডেনে খেলা সহজ হতে থাকে। পরের দিকে নামা নিকোলাস পুরান ৩২ বলে ৪৫ রান করেন। চারটি ছক্কা মারেন তিনি। শেষ বেলায় তাঁর ব্যাটেই ১৬০ রানের গণ্ডি পার করে লখনউ। শেষ ৫ ওভারে লখনউ তোলে ৪৮ রান।
নববর্ষের দিনে যেন ‘কল্পতরু’ হয়ে উঠলেন মিচেল স্টার্ক (২৮/৩)। ২৫ কোটির ক্রিকেটারের ফর্ম নিয়ে নানা মন্তব্য ধেয়ে এসেছে। এমনকী তাঁকে বসিয়ে দেওয়ার দাবিও উঠেছিল। কিন্তু মেন্টর গম্ভীরের মগজাস্ত্রে অন্যরকম পরিকল্পনা ছিল। সঠিক দিনে, সঠিক সময়ে জ্বলে উঠলেন স্টার্ক। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা পুরানকে ফেরালেন। দুর্ধর্ষ ডেলিভারিতে বোল্ড করলেন আর্শাদ খানকে। শাহরুখ খানও উঠে দাঁড়ালেন দলের সবচেয়ে দামী বোলারের প্রশংসায়। শেষ পর্যন্ত লখনউ থামল ১৬১ রানে।
রাতের ইডেনে ব্যাট করা যে সহজ, তা বোঝা গেল কলকাতা ব্যাট করতে নামতে। প্রথম ৪ ওভারে ৪৪ রান তুলে নেন সল্টেরা। কলকাতার ইনিংসের শুরুটা যদিও ইতিবাচক করে দেন লখনউয়ের শামার জোসেফ। তাঁর প্রথম ওভারেই উঠল ২২ রান। ৪ ওভারে ৪৭ রান দেন তিনি। অল্প রান বাঁচাতে নেমে এই ভাবে রান দিলে ম্যাচ জেতা কঠিন হয়। সেটাই হল।
তাঁর বলেই দুবার ক্যাচ পড়ল ফিল্ট সল্টের। কাটা ঘায়ের নুনের ছিটে দিয়ে ৪৭ বলে ৮৯ রান করে গেলেন তিনি। সুনীল নারিন (৬), অঙ্গকৃষ রঘুবংশীরা (৭) ব্যর্থ হলেও অসুবিধা হয়নি। চেনা ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছেন শ্রেয়সও (৩৮)। লখনউয়ের বোলিংয়ে ময়ঙ্ক যাদবের অভাব বার বার বোঝা গেল। লাইন-লেংথ হারিয়ে কলকাতার সুবিধাই করে দিলেন যশ ঠাকুররা। সল্টের কালবৈশাখী ঝড়ে ৮ উইকেটে রাহুলদের সহজেই হারাল নাইটরা।