কেরিয়ারের শেষ টেস্টটি মিরপুরে খেলতে চান শাকিব আল হাসান। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। টি-টোয়েন্টি দলে নিজেকে দেখছেন না। তবে অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকা যাবে বাংলাদেশে খেলতে। সেই সিরিজ়ে মিরপুরে খেলে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিতে চান শাকিব।
যদিও বাংলাদেশের ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ফারুকি আহমেদ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, দেশের মাটিতে খেলার জন্য শাকিব যা নিরাপত্তা চাইছেন সেটা দেওয়া বোর্ডের পক্ষে সম্ভব নয়। উল্লেখ্য, অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশে আওয়ামি লিগের সাংসদ শাকিবের বিরুদ্ধে প্রবল জনরোষ তৈরি হয়েছে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরে বাংলাদেশে পা রাখেননি শাকিব।
বৃহস্পতিবার আচমকাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের দিনক্ষণ জানিয়ে দেন টাইগার বাহিনীর প্রাক্তন অধিনায়ক। ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট খেলে অবসর নেবেন বলে ঘোষণা করেন। যদিও প্রশ্ন উঠছে, আদৌ কি দেশের মাটিতে ফিরতে পারবেন তারকা অলরাউন্ডার?
বাংলাদেশের প্রাক্তন অধিনায়ক বৃহস্পতিবার বলেন, “আমি মিরপুরে শেষ টেস্ট খেলতে চাই। বাংলাদেশে যাওয়া নিয়ে আমি চিন্তা করছি না। আমার চিন্তা ওখান থেকে বেরিয়ে আসা নিয়ে। আমি এই বিষয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে কথা বলেছি। ওরা চেষ্টা করছে। তা না হলে কানপুরই আমার শেষ টেস্ট হবে।”
তাঁর ঘনিষ্ঠদের মতে, দেশে হাসিনা সরকারের পতন এবং বাংলাদেশ জনতার একাংশের ক্রমবর্ধমান রোষ শাকিবকে বাধ্য করে অবসরের দিনক্ষণ এগিয়ে আনতে। খুনের মামলায় তাঁকে জড়িয়ে ফেলার পর এটুকু পরিষ্কার হয়ে যায় যে, বাংলাদেশে তিনি আর নিরাপদ নন। দেশে খেলতে গেলে তিনি যে গ্রেপ্তার হবেন না, কিংবা তাঁর হোটেলের সামনে এক লক্ষ বিক্ষোভকারীর জমায়েত ঘটবে না, তার গ্যারান্টি কেউ দিতে পারে না। খেলা চালিয়ে গেলে ঘরের মাঠে সিরিজ বাদ দিতে হত শাকিবকে। বেছে-বেছে বিদেশে সিরিজ খেলতে হত। এবং সেটা নিয়েও তখন তীব্র সমালোচনা চলত।
তা সত্ত্বেও দেশের মাটিতেই শেষ টেস্ট খেলতে চেয়েছিলেন বাংলাদেশের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে আইসিসি-র অলরাউন্ডার র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে থাকা শাকিব। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের বৈঠক ছিল। তার পরে সংবাদমাধ্যমকে ফারুক বলেন, “নিরাপত্তার বিষয়টা আমাদের হাতে নেই। শাকিবকেই এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বোর্ড কিছু বলতে পারবে না। নির্দিষ্ট এক জনকে ব্যক্তিগত ভাবে নিরাপত্তা দেওয়ার সামর্থ্য বোর্ডের নেই।” সেই সঙ্গে তিনি বলেন, “নিরাপত্তার বিষয়টি সরকারের উচ্চপর্যায়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বিসিবি কোনও এজেন্সি নয়, পুলিশও নয়। সরকারের তরফ থেকে নিরাপত্তা দেওয়া হবে কি হবে না সেটা জানাতে হবে।” যদিও বিসিবি সভাপতি ফারুক চান শাকিব তাঁর কেরিয়ারের শেষ টেস্টটি দেশের মাটিতেই খেলুন। ফারুক বলেন, “শাকিব যদি দেশের মাটিতে শেষ টেস্ট খেলতে পারে, ওর মতো আমিও বিশ্বাস করি এর থেকে ভাল কিছু হতে পারে না।”
অবসর ঘোষণা শাকিবের নিজের সিদ্ধান্ত বলেও জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি। ফারুক বলেন, “শাকিব এই মুহূর্তে তার জীবনের খুব খারাপ একটা সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। বোর্ডের তরফে তাকে আমরা এই বিষয় নিয়ে কিছু বোঝানোর চেষ্টা করিনি। সে মনে করেছে এটাই তার অবসর নেওয়ার সঠিক সময়। তার সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাই।