মহম্মদ সালাহকে দেখার পর লিভারপুলে কমেছে জাতিবিদ্বেষ, ইসলামভীতি!

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

নাইজেরিয়ার গৃহযুদ্ধ আটকেছিলেন পেলে। না। ঘনাদার কোনও আজগুবি গল্পের প্লট নয়। ১৯৬৯ সালে সত্যিই এমনটা হয়েছিল।ব্রাজিলের কিংবদন্তী ফুটবলার তখন বিখ্যাত ক্লাব সান্তোস এফসি-র সুপারস্টার। সেই সময় দুনিয়ার বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে সান্তোস প্রীতি ম্যাচ খেলে আসত। এরকমই একটি ম্যাচ ছিল নাইজেরিয়ায়। ১৯৬৯ সালের ৪ঠা ফেব্রুয়ারি। সেখানে তখন রক্তাক্ত গৃহযুদ্ধ চলছে। বায়াফ্রা নামে একটি রাজ্যকে বিচ্ছিন্ন করার জেরে অশান্তির সূত্রপাত।

ফুটবল গবেষক গুইলহের্ম গুয়াশ তাঁর বইতে লিখেছেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে নাইজেরিয়ায় খেলোয়াড়দের পাঠানোর বিষয়ে ব্রাজিলের কর্মকর্তারা বেঁকে বসেন। আর অবাক কাণ্ড! ঠিক সেকারণেই বিবদমান সমস্ত পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে যেতে সম্মত হয়। স্রেফ পেলে আসছেন জেনে সাময়িকভাবে হলেও গৃহযুদ্ধ মিটে যায়।’

আরও পড়ুন : পাঁচ বছরের নীচে শিশুদের মাস্ক পরানো ঠিক নয়, কী কী নিয়ম মানতে হবে গাইডলাইন দিল কেন্দ্রীয় সংস্থা

এরপর সময় গড়িয়েছে। ফুটবল ময়দানে অনেক বর্ণময় তারকা এসেছেন, গেছেন। কিন্তু একা হাতে আস্ত একটা গোষ্ঠী কিংবা সমাজের ভোল বদলে দিয়েছেন— এমন নমুনা হাতেগোনা। আর সেই ছোট্ট অথচ দামি তালিকাতেই এবার নাম তুললেন স্ট্রাইকার মহম্মদ সালাহ। পেলের মতো লড়াই থামাননি বটে। কিন্তু লিভারপুল, যে ক্লাবের হয়ে তিনি ইতিমধ্যে একগাদা রেকর্ড ভেঙেছেন, সেই এলাকার বাসিন্দাদের মন থেকে জাতিবিদ্বেষ, ধর্মীয় ঘৃণার বিষ অনেকটাই দূর করেছেন সালাহ।
সম্প্রতি এই নিয়ে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় একটি সমীক্ষা চালায়। তার রিপোর্টে বলা হয়, ২০১৭ সালে মিশরের এই ফুটবলার রোমা থেকে লিভারপুল আসার পর সেখানকার মুসলিম-বিরোধী মতামত ৫০ শতাংশ এবং জাতিবিদ্বেষ ১৯ শতাংশ কমে গেছে।
গবেষকেরা এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে জানান, ‘খেলা চলাকালীন সালাহর ভাবভঙ্গি, ম্যাচ শেষে দেওয়া ইন্টারভিউ, ক্লাবের তরফ থেকে রিলিজ করা ভিডিও দেখার পর সমর্থকেরা তাঁর জীবন ও অতীত সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছেন। একজন মুসলিম ফুটবলার বিষয়ে সবকিছুই তাঁদের কাছে নতুন ছিল।’
এরপর স্থানীয় পুলিশের পাঠানো ডেটা, সমর্থকদের ১৫০ লক্ষ টুইট এবং ৮ হাজার লিভারপুল ভক্তদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে রিপোর্ট তৈরি করা হয়। গবেষকদের মতে, ৯/১১-র ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলার সূত্রেই ব্রিটেনজুড়ে ইসলামভীতি ছড়িয়ে পড়ে। ব্রিটিশ আদর্শের সঙ্গে ইসলামপন্থীদের সংঘর্ষের ছবিও বারবার উঠে আসতে থাকে।
যদিও লিভারপুলে এই ট্রেন্ডের বদল ঘটিয়েছেন সালাহ। এর আগে মধ্যপ্রাচ্যে নারীস্বাধীনতার পক্ষে সওয়াল তুলেছিলেন তিনি। আর এবার নিজের অজান্তেই ভিনদেশের জনতার মানসিকতায় বদল এনেছেন। মহম্মদ আলি, জ্যাকি রবিনসনদের জামানা যে শেষ হয়ে যায়নি, মহম্মদ সালাহ সেটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন।
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest