ঠিক যেভাবে মাঠে ব্যাটিং করেন, সেভাবেই মাঠের বাইরেও ঝড়ো ব্যাটিং করলেন অধিনায়ক বিরাট কোহলি। আহমেদাবাদের পিচ নিয়ে যারা দিন কয়েক আগে থেকে কুম্ভীরাশ্রু ফেলছিলেন তাঁদের সপাটে মাঠের বাইরে ফেললেন বিরাট (Virat Kohli)। বলে দিলেন, পিচ নিয়ে কান্নাকাটি করে না বলেই ভারতীয় দল এত সফল। স্পিনিং পিচ নিয়ে সমালোচনা করা যে অহেতুক তা বোঝাতে বিরাট বললেন, “আমার মনে হয়, স্পিনিং ট্র্যাক নিয়ে একটু বেশিই হইচই হয়।”
চতুর্থ টেস্ট শুরু কাল বৃহস্পতিবার। তার আগে প্রথাগত সাংবাদিক সম্মেলনে ঘূর্ণি বাইশগজ নিয়ে প্রশ্নে সপাটে বাউন্ডারি মারলেন কোহলি। ভারতীয় দলনায়ক এসেই জানিয়েছেন, ‘‘বড় বেশি কথা, হট্টগোল শুনছি এই স্পিনিং পিচ নিয়ে। আমাদের মিডিয়া যদি জায়গা এবং সুযোগ পেত উল্টো দিকটাও তুলে ধরার, ভারসাম্য থাকত। দুর্ভাগ্যের বিষয়, সবাই একই সুরে কথা বলছে, তাই বারবারই বড় খবর হয়ে উঠেও আসছে স্পিনিং ট্র্যাক, অন্তত যতক্ষণ প্রাসঙ্গিকতা থাকছে। তারপর টেস্ট ম্যাচ শুরু। চতুর্থ বা পঞ্চম দিনে জিতলে কোনও কথা নেই। দু’দিনে শেষ হলে সেই কথাগুলোই ঘুরেফিরে আসছে।’’
কিভাবে ভারতীয় স্পিনারদের বিপক্ষে ব্রিটিশরা খেলবেন, তার জন্য পরামর্শও দিয়েছেন কোহলি, ‘‘রক্ষণ সুদৃঢ় করতেই হবে। না হলেই টেস্টে সমস্যা। মুশকিল হল, ব্যাটসম্যানদের পক্ষে এখন রক্ষণে মনোযোগী হয়ে ওঠা কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে সীমিত ওভারের খেলাগুলোর কারণে। রক্ষণে সমঝোতা করতেই হচ্ছে।’’
আরও পড়ুন: ব্যাট-প্যাডকে বিদায় জানালেন বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় দলের সদস্য ইউসুফ পাঠান
ভারত অধিনায়কের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, গোলাপি বলের কারণেই তৃতীয় টেস্ট এভাবে দু-দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে গিয়েছিল কিনা। বিরাট সটান ‘না’ বলেছেন।
বিরাটের এই নিয়ে বক্তব্য, ‘‘বল বা পিচের কথা কে বারবার উঠে আসছে, সত্যিই বুঝতে পারছি না। সবটাই তো ব্যাটসম্যানদের অদক্ষতা। কোনও ব্যাটসম্যানই ওই পিচে খেলার যোগ্যতা দেখাতে পারেনি এবং এটা দু’দলের ব্যাটসম্যানদের জন্যই প্রযোজ্য। বলের রঙ দিয়ে কিছুই ঢেকে রাখা যায় না। বলটা এখনও গোল, ওজনে সাড়ে পাঁচ আউন্স। তাই বলের জন্য কিছু পাল্টে গেল কিনা, বলতে পারব না।’’
কোহলি মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘বলই যদি নিয়ন্ত্রক হতো, তা হলে চেন্নাইতে ওরকম হল কেন? সেখানে পিচের চরিত্রও পৃথক ছিল, আসলে ক্রিকেটের বাইরে অন্য বিষয় নিয়ে বেশি কথা হচ্ছে।’’ কোহলি আরও বলেছেন, এখন ক্রিকেটে ধৈর্য্য ধরে সারা দিন ব্যাটিং করার মানসিকতা বিরল। সবাই তাড়াতাড়ি ৩০০-৩৫০ তুলে ফেলতে চায় বোর্ডে। সেই জন্যই রক্ষণে নিশ্ছিদ্র হওয়ার দিকে মন দেওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু উইকেটে টিকে থাকতে হলে রক্ষণে দক্ষতা জরুরি। তার জন্য সব দিক দিয়েই প্রস্তুত থাকতে হবে। সুইপ শটই একমাত্র ব্যাপার নয়। মনে হচ্ছে, ব্যাটিংয়ে রক্ষণ এখন পেছনের আসনে চলে গিয়েছে।’’
পিচ নিয়ে বিতর্ক যতই হোক, আহমেদাবাদের পিচের চরিত্র শেষ ম্যাচেও বদলাচ্ছে না বলে সূত্রের দাবি। চতুর্থ টেস্টেও নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের পিচ হচ্ছে স্পিন সহায়ক। সেকারণেই সম্ভবত এই টেস্টেও ৩ স্পিনারে নামছে ভারত। আগের ম্যাচে তেমন বল করার সুযোগ না পেলেও ওয়াশিংটন সুন্দর এই ম্যাচে খেলবেন বলেই সূত্রের খবর। দলে একমাত্র পরিবর্তন হিসেবে বিশ্রামে যাওয়া বুমরাহর বদলে দলে আসতে পারেন সিরাজ।
আরও পড়ুন: পেট্রোপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ! ম্যাচ সেরার পুরস্কার পাঁচ লিটার পেট্রোল