বাংলায় ভোট আগে ময়দানে নেমে পড়েছে গেরুয়া আইটি সেল। ধরে ধরে ফোন করছে তারা। জানতে চাইছে খুঁটিনাটি তথ্য। আপনাকে তারা কোনো অরাজনৈতিক সংস্থার নাম করে ফোন করবে। যেমন ধরুন সাংবাদিকতার ছাত্র কিংবা ছাত্রী। কিংবা ধরুন কোনও মানবাধিকার সংগঠনের কর্মী। কিংবা অরাজনৈতিক কোনও সংস্থা কিংবা প্রতিষ্ঠানের লোক হিসাবে তারা ফোন করতে পারে। তাদের মূল উদ্দেশ্য আপনি কাকে ভোট দেবেন সেটা জেনে নেওয়া।
ওরা প্রথমে খুব নির্দোষ বিষয় দিয়ে কথা শুরু করবে। এই যেমন আপনার বাড়ি কোথায়। সেটা কোন থানা। কোন মহকুমা। বাড়িতে কজন আছেন। তাদের মধ্যে কতজন চাকুরে। আপনি পেশায় কি করেন। বয়স কত। এসব গপ্পো করতে করতে আসল জায়গায় হাজির হবে।
আরও পড়ুন : বক্তৃতার মাঝেই ‘লালু জিন্দাবাদ’ স্লোগান, রেগে গেলেন নীতীশ
এর পর জিজ্ঞাসা করবে আর তো বেশি দিন নেই পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন। কি মনে হয়, ক্ষমতায় কে আসবে। আপনারা কী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনে খুশি। এই রাজ্যের মানুষ কি খুব শান্তিতে রয়েছে। বেকারত্ব তো কমছে না। আপনার মত কি। এইভাবে তারা বোঝার চেষ্টা করবে আপনি সরকারের ওপর চোটে আছেন নাকি খুশি। যদি আপনি সন্তোষ প্রকাশ করেন, তাহলে ওরা আইন শৃঙ্খলা নিয়ে কিছু প্রশ্ন তুলবে। একই সঙ্গে আপনাকে বোঝানোর চেষ্টা করবে, এই সরকার বদলে গেলে আপনার ভালো হবে। কিন্তু সেটা তারা করবে খুবই অরাজনৈতিক সুরে।
তারা জনাতে চাইবে গত লোকসভা নির্বাচনে আপনি কাকে ভোট দিয়েছিলেন। কেন্দ্রে কোন সরকারের থাকা উচিত বলে আপনি ব্যাক্তিগতভাবে মনে করেন। আপনার এলাকার বিধায়কের নাম কি ? সাংসদেরই বা কি নাম। আপনার এলাকার উন্নয়ন কেমন হয়েছে ? বিধায়ক কেমন কাজ করেছেন। তিনি কেমন মানুষ বলে আপনার মনে হয় ? রাস্তা-ঘাট কেমন হয়েছে। সাম্প্রদায়িক পরিবেশ কেমন? বিধায়ককে আপনার কেমন মানুষ বলে মনে হয়।
রাজ্যে কি এই সরকারের থাকা উচিত ? নাকি আপনি পরিবর্তন চাইছেন। শেষে বলবে আপনি আগামী বিধানসভা ভোট কাকে দিতে চাইছেন।একথা শুনে কেউ বলতেই পারে,এ আর এমন কি কথা! জানলে হবেই বা কি ! এটা সম্পূর্ণ গোপন ব্যাপার। সেটা এইভাবে হাত করে খুলে দিলে এত টাকা খরচ করে ভোট করারই বা কি আছে !
এমনিতে বাংলায় বিজেপি এখনও আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভুগছে। লোকসভায় যে শক্তি তারা প্রদর্শন করেছিল তার বেশিরভাটাতেই নরেন্দ্র মোদির ভাগ রয়েছে। কিন্তু এই ভোট রাজ্যের। সবাই জানে মোদী এখানে মুখ্যমন্ত্রী হতে আসবেন না। তাহলে মুখ কে হবেন ?তা নিয়ে বিজেপি কম চাপে নেই। দলের ভিতের চোরা কোন্দলও বিস্তর। যদিও তারা সেটা পিকের কাজ বলে চালাতে চায়। বাংলার জনমনে আসলে কি হচ্ছে তা খানিকটা আরএসএস পরিচালিত ক্লাব ও সংঘগুলো জানে। বাকিটা তারা আইটি সেলের মাধ্যমে পাওয়ার চেষ্টা করছে। তাই কাল ‘সাংবাদিকতা পড়ছি, প্রজেক্ট রয়েছে’ বলে কল আসতে পারে আপনার ফোনেও। তৈরী থাকবেন।
আরও পড়ুন : বাড়িতে কী পুরনো ২৫ পয়সার কয়েন রয়েছে? খুঁজে দেখুন, পেয়ে গেলেই মালামাল হওয়ার সুযোগ