দিলীপের ‘খাসতালুক’ সহ ৩টি ঘর ফাঁকা রেখে দিল বিজেপি, একাধিক নাম ঘিরে জল্পনা

সেইসঙ্গেই আরও এক জল্পনা ভাসছে, তবে কি বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী দিলীপই?
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

নন্দীগ্রামের পর প্রথম দু’দফার মধ্যে অন্যতম নজরকাড়া কেন্দ্র মিশ্র ভাষাভাষির খড়গপুর সদর। সেখানে প্রার্থীর নাম ফাঁকা রেখেই তালিকা ঘোষণা করেছে BJP। মেদিনীপুর লোকসভার মধ্যেই এই বিধানসভা কেন্দ্র। যে লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ BJP-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ২০১৬ সালে এই কেন্দ্রে জয়লাভ করেছিলেন BJP-র দিলীপ। পরে দল তাঁকে আরও বড় দায়িত্ব দিয়েছিল। কিন্তু এদিন তালিকায় খড়গপুর সদর না থাকা নিয়ে জোর জল্পনা তৈরি হয়েছে।

খড়্গপুর সদরের পাশাপাশি বাঁকুড়ার বড়জোড়া এবং পুরুলিয়ার কাশীপুর কেন্দ্রের প্রার্থীর নামও শনিবার জানায়নি বিজেপি। বিজেপি সূত্রে খবর, পুরুলিয়ার কাশীপুর থেকে প্রার্থী হতে চান ওই জেলার সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী। দলের একাংশের বক্তব্য, জেলা সভাপতিকে প্রার্থী করা হবে কি না, সেই নীতিগত সিদ্ধান্ত এখনও নিতে পারেননি নেতৃত্ব। তবে বিজেপি শিবিরে এটাও আলোচনা হচ্ছে যে, ঝাড়গ্রামের সভাপতি সুখময় শতপথি এবং মেদিনীপুরে সমিত দাসকে প্রার্থী করা হয়েছে। সুতরাং জেলা সভাপতিকে প্রার্থী না করার যে যুক্তি দেওয়া হচ্ছে, তা পুরোপুরি ঠিক নয়। একই ভাবে বাঁকুড়ার বড়জোড়া আসনের প্রার্থীর নামও কেন জানানো হল না, তা নিয়েও তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। তবে সবচেয়ে বেশি আলোচ্য খড়্গপুর সদর।

২০১৬ সালে এই আসন থেকেই বিধানসভা নির্বাচনে জিতেছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এর পরে তিনি মেদিনীপুর থেকে সাংসদ হয়ে ওই আসনটি ছেড়ে দেন। এর পরে উপনির্বাচনে অবশ্য তৃণমূলের প্রদীপ সরকারের কাছে হেরে যায় বিজেপি। কিন্তু খড়্গপুর সদরে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হল না কেন? তবে কি দিলীপকে প্রার্থী করা নিয়ে এখনও ভাবনাচিন্তা করছেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব? নাকি ওই আসনে প্রার্থী করা হবে শনিবারই খড়্গপুরের প্রাক্তন কাউন্সিলর দেবাশিস চৌধুরী ওরফে মুনমুনকে? যিনি শনিবারই জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক পদটিও ছেড়ে দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: বেনোজলে আস্থা নেই? টলি তারকাহীন প্রার্থী তালিকায় পুরনোদেরই প্রাধান্য দিল বিজেপি

তিনি কি বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান? এমন প্রশ্নের উত্তরে দিলীপ বরাবর বলে এসেছেন, ‘‘দল যা চাইবে তাই হবে।’’ শনিবার প্রার্থী তালিকা ঘোষণা ঠিকআগেই সাংবাদিক বৈঠকে একই প্রশ্নের মুখোমুখি হন দিলীপ। জবাবে তিনি বলেন, ‘‘দলের পক্ষ থেকে আমাকে এই ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞাসা করা হয়নি। অতীতে দু’বার দল বলেছে। আমি প্রার্থী হয়েছি।’’ তবে প্রার্থিতালিকা ঘোষণার পর যে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে, তার জবাব পেতে বারবার দিলীপের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

তবে খড়্গপুর সদর কেন্দ্রের প্রার্থীর নাম এখনও ঘোষণা না হওয়ায় খুশি রাজ্য বিজেপি-তে দিলীপ-ঘনিষ্ঠ নেতারা। দ্বিতীয় দফায় ১ এপ্রিল ভোট ওই আসনে। দিলীপ-ঘনিষ্ঠদের আশা, সময় নিয়ে দল হয়তো দিলীপের নামই ঘোষণা করবে। নীলবাড়ির লড়াইয়ে দিলীপ প্রার্থী হবেন কি হবেন না, তা নিয়ে অনেক দিন থেকেই দু’ভাগ বিজেপি নেতৃত্ব। এক দলের বক্তব্য, দিলীপ প্রার্থী হলে একটি কেন্দ্রেই আটক থাকবেন। রাজ্য জুড়ে তিনি যে প্রচারাভিযান চালাচ্ছেন, তা ব্যাহত হবে। তবে দিলীপ-ঘনিষ্ঠদের পাল্টা যুক্তি, দ্বিতীয় দফায় খড়্গপুর সদরে ভোটগ্রহণ হয়ে যাবে। এর পরে ছ’দফায় রাজ্যের অন্যত্র প্রচারে অসুবিধা হবে না। তাঁদের প্রশ্ন, শুভেন্দু অধিকারী যদি নন্দীগ্রাম সামলে গোটা রাজ্যে প্রচার করতে পারেন তবে দিলীপ কেন পারবেন না?

সেইসঙ্গেই আরও এক জল্পনা ভাসছে, তবে কি বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী দিলীপই? বাংলায় বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী মুখ কে? বিজেপির শীর্ষ নেতাদের বারবার শুনতে হয়েছে এ প্রশ্ন। নিজেদের উপর থেকে ‘বহিরাগত’ তকমা দূর করতে বাংলার ভূমিপুত্র কাউকেই যে মুখ্যমন্ত্রী করা হবে, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন অমিত শাহরা। আর সেক্ষেত্রে শুভেন্দু অধিকারীর মতো তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া নেতার নাম যেমন ভাসছে, তেমনই প্রবলভাবে জল্পনায় রয়েছে দিলীপ ঘোষের নামও। এমনকী সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বা নরেন্দ্র মোদীর ব্রিগেড সমাবেশে যোগ দিতে চলা মিঠুন চক্রবর্তীর নামও রয়েছে রাজনৈতিক মহলের আলোচনায়।

তবে, এদিন প্রার্থীতালিকা ঘোষণার পরও দিলীপ ঘোষকে নিয়ে নিঃসন্দেহে ধোঁয়াশা বাড়ল। নিজের মুখ্যমন্ত্রী মুখ হওয়া প্রসঙ্গে বারবার প্রশ্নের মুখেও দিলীপ ঘোষ কখনই সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি। এমনকী অনেক দিলীপ অনুগামীরাই ‘দাদাকে মুখ্যমন্ত্রী চাই’ বলে নানা সময়ও প্রচার চালিয়েছে। সম্প্রতি বিজেপি যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি সৌমিত্র খাঁ দিলীপকে নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন, ‘শুভেন্দু দা’র নেতৃত্ব একদিন গোটা তৃণমূল দলটাই ভেঙে যাবে। আর দিলীপ ঘোষই হবেন বাংলার পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী। কারণ দিলীপ ঘোষ একজন প্রকৃত নেতা। তিনি কখনও সংসারধর্ম করেননি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, তিনিই একদিন রাজ্য চালাবেন। তাঁকে নিয়ে অনেক তৃণমূল নেতা বলেন, দিলীপ ঘোষ কী জানেন? কিন্তু তিনি যেদিন এই বাংলা চালাবেন, সেদিনই তাঁরা উত্তর পেয়ে যাবেন।’ সৌমিত্রের সেই মন্তব্য়কেও উড়িয়ে দেননি দিলীপ নিজেও।

যদিও বিজেপির একটা অংশের দাবি, খড়গপুর সদরে প্রার্থী করা হতে পারে সদ্য তৃণমূলত্যাগী খড়্গপুরের প্রাক্তন কাউন্সিলর দেবাশিস চৌধুরীকে। যদিও তা মানতে নারাজ দিলীপ ঘনিষ্ঠ নেতারা। অবশ্য গেরুয়া শিবিরের একটা অংশের মন্তব্য, নন্দীগ্রামের মতো আসনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখোমুখি লড়তে পাঠানো হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীকে। তিনি জিতলে আর বিজেপি ক্ষমতায় এলে শুভেন্দু কি মুখ্যমন্ত্রী পদের জোরাজুরি করবেন না, আশঙ্কায় বিজেপির অনেক নেতাই।

আরও পড়ুন: WB election 2021: প্রথম দুই দফায় ১৩ হাত প্রার্থীর নাম ঘোষণা কংগ্রেসের, ঝুলে রইল নন্দীগ্রাম

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest