বিজেপির বর্ধমানের নবনির্মিত জেলা কার্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনায় তিন বিজেপি কর্মীকে সাসপেন্ড করল দলের রাজ্য কমিটি। গত মাসে বিজেপির জেলা কার্যালয়ে দলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ ধুন্ধুমার আকার নেয়। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দলের বর্ধমান সদর সাংগঠনিক জেলার সভাপতিসহ চোদ্দ জনকে শোকজ করেছিল দল। এরপর তিন কর্মীকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য কমিটি। স্মৃতিকান্ত মন্ডল, উত্তম চৌধুরী ও সাগ্নিক শিকদার নামে তিন কর্মীকে এক বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
বিধানসভা নির্বাচনের মুখে পূর্ব বর্ধমান জেলায় দলের গোষ্ঠী কোন্দলে অস্বস্তিতে বিজেপি নেতৃত্ব। দলের মধ্যে বর্তমান কর্মীদের সঙ্গে আদি বিজেপি কর্মীদের সংঘাত বারেবারেই প্রকাশ্যে আসছে। দলে তাদের কোনও রকম গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলে গত ২১ জানুয়ারি বর্ধমানের দলের জেলা কার্যালয় পর্যবেক্ষকের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন আদি বিজেপি কর্মীরা। তার জেরে জেলা কার্যালয়ে ধুন্ধুমার কান্ড ঘটে। নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বিজেপি কর্মীরা।দুপক্ষের মধ্যে ব্যাপক ইট-পাথর বৃষ্টি হয়। একাধিক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বেশ কয়েকটি মোটরবাইকে ভাঙচুর চালানো হয়। বিশাল পুলিশবাহিনী গিয়ে বেশ কিছুক্ষন চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তদন্তের পর কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছিল দলের রাজ্য কমিটি। এই ঘটনা দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে বলে জানানো হয়। পাশাপাশি এই ঘটনাকে দলের শৃঙ্খলার পরিপন্হী এবং দলীয় সংবিধান অনুযায়ী এই ঘটনার শাস্তি স্বরূপ অভিযুক্তদের বহিষ্কার পর্যন্ত করা হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল তাদের রাজ্য নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন: ব্রিগেডের মেনু রুটি -আলুর দম, লাড্ডু, বাড়ি বাড়িতে তৈরি হচ্ছে দশ লক্ষের খাবার!
ঘটনার জেরে জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দী সহ মোট ১৪ জনকে শোকজ করা হয়েছিল। সেই শোকজের উত্তর পাবার পর সব দিক খতিয়ে দেখে তিন কর্মীকে এক বছরের জন্য সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব। এই সময়ের মধ্যে তাঁদের দলের সদস্যপদও বাতিল হিসাবে ধরা হবে। কোনও কর্মসূচিতেও অংশ নিতে পারবেন না তাঁরা। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ যে, তাঁরা পার্টি সদস্যদের মধ্যে মারামারি করতে ইন্ধন জুগিয়েছেন। একইসঙ্গে তাঁরা পরস্পরের সঙ্গে হাতাহাতি পর্যন্ত করেছেন। এই তিনজনকে গুন্ডামি, হিংসা এবং দুর্ব্যবহার করার অভিযোগে সাসপেন্ড করা হয়েছে। প্রত্যেকের কাছে চিঠি পাঠিয়ে এই সাসপেনশনের কথা জানিয়ে দেওয়া হযেছে। তবে এখনও এই বিষয়ে কেউ মুখ খোলেনি।
ওই একই কারণে বিধানসভা নির্বাচনের মুখে সন্দীপ নন্দীকে বর্ধমান সাংগঠনিক জেলার সভাপতির পদ থেকে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব সরিয়ে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নিল বলে মনে করছেন দলের নেতাকর্মীরা। হঠাৎ বর্ধমান জেলায় এই রদবদল ভোটের মুখে দলকে বেশ চাপে ফেলে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সায়নী, রাজ থেকে মনোজ, মমতার প্রার্থী তালিকায় তারকার ছটা, দেখে নিন গুঞ্জনে এগিয়ে কারা…