জঙ্গলমহলের এই মাঠেই সভা করেছিলেন তৃণমূলে নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর পালটা মঙ্গলবার সভা করলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা যোগী আদিত্যনাথ (Yogi Adityanath)। বিজেপির তরফে দাবি করা হয়েছিল, কোণায় কোণায় ভিড়ে ঠাসা থাকবে ময়দান। কিন্তু ছোট মাঠই এদিন ভরাতে পারল না বিজেপি। কার্যত ফাঁকা মাঠেই হিন্দুত্বের জয়গান করলেন বিজেপির হিন্দুত্বের পোস্টার বয় আদিত্যনাথ। অবশ্য রাজ্যের শাসকদল বিজেপির সমর্থকদের সভায় আসতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন বিজেপির তারকা প্রচারক যোগী আদিত্যনাথ।
এদিনের সভা ছিল বলরামপুরে বানেশ্বর মাহাতোর সমর্থনে। এটা মমতার পালটা সভা বলে প্রচার করা হয়েছিল। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, বলরামপুরের বিজেপির সভা কার্যত ফ্লপ। সেই সভা থেকেই যোগীর দাবি, “২০১৯ সালে আমি পুরুলিয়া (Purulia) এসেছিলাম। সেই সময় আমার হেলিকপ্টার নামতে দেয়নি বাংলার সরকার। ঝাড়খন্ডে নেমে তারপর সড়ক পথে এসে আমি দেখেছি এখানকার মানুষের কত উৎসাহ তাই আমি এবার ঠিক করেছি নির্বাচনী প্রচার পুরুলিয়া থেকে শুরু করব।” তবে তাঁর সভায় যে ভিড় হয়নি, তা মানতে রাজি নন যোগী। ফাঁকা সভা নিয়ে তাঁর সাফাই,”আমি হেলিকপ্টার থেকে দেখছিলাম এখানকার কার্যকর্তাদের সভায় আসতে দেওয়া হচ্ছে না। তাঁদেরকে বাধা দিচ্ছে বিভিন্ন জায়গায় আটকে দিচ্ছে পুলিশl আমার বিশ্বাস ছিল সেই বাধা ভেঙে সভায় ভিড় হবে। পরে সবাই ভিড় তা প্রমাণ করে দিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, ‘জয় শ্রী রাম স্লোগানে মমতা দিদির অস্বস্তি হয়। কিন্তু মমতা ব্যানার্জিকেও এখন চণ্ডীপাঠ করতে হচ্ছে। মন্দিরে মন্দিরে যেতে হচ্ছে। এটাই বিজেপির কৃতিত্ব।’
পাশাপাশি, বলরামপুরের সভা থেকে রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের শাসনকালে আইন-শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে বলেও তোপ দাগেন যোগী আদিত্যনাথ।
আরও পড়ুন: তৃণমূলের পালটা একঝাঁক ‘স্টার’ প্রার্থী BJP-র, পায়েল- যশ-তনুশ্রী-সহ কারা টিকিট পেলেন?
এছাড়াও এদিন তিনি জোর সওয়াল করেন রাজ্যে বিজেপি সরকার গঠনের পক্ষে। তিনি বলেন, বাংলাকে শেষ করে দিচ্ছে তৃণমূল। বাংলায় অরাজকতা চলছে। তবে মোদীর হাত ধরে বাংলায় এবার সুদিন ফিরবে। যে সকল কার্যকর্তা শহিদ হয়েছেন বাংলায়, তাঁদের এবার আমাদের ন্যায় পাইয়ে দিতেই হবে।
যোগী আদিত্যনাথ রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি থেকে হিন্দুত্ব প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধছেন, তখন পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় চাঁছাছোলা ভাষায় যোগী আদিত্যনাথকে আক্রমণ করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
তিনি বললেন, ‘মূর্খের মত অভিযোগ। লোকে আগে জানত, রাজ্যপাট থেকে লোকে সন্ন্যাস নেয়। এই প্রথম মানুষ দেখছে যে সন্ন্যাস জীবন থেকে লোকে ভোগের জীবনে আসে। যাঁর উত্তরপ্রদেশের হাথরসে তরুণীর উপর নির্যাতন হয়, তাঁর বাবাকে গুলি করে মারা হয়, সেখানে তিনি আইন-শৃঙ্খলার কথা বলছেন! কত বড় নির্লজ্জ, বেহায়া হলে এগুলো বলেন!’
এদিন আদিত্যনাথের সভায় ভিড় না হওয়াকে কটাক্ষ করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘সভা করতে উত্তর প্রদেশ থেকে যোগী আদিত্যনাথকে আনছে। কিন্তু তাঁর সভায় লোক হচ্ছে না। পুরুলিয়া বহিরাগতদের প্রত্যাখ্যান করেছে।’
আরও পড়ুন: WB election 2021: ভরল না অমিত শাহ- স্মৃতি ইরানিদের সভার মাঠ, শুরু চর্চা