প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে খুন করা হল বিজেপি নেতাকে।উত্তর ২৪ পরগনার টিটাগড়ে থানার সামনেই ভর সন্ধ্যায় এই ঘটনা ঘটল। দুষ্কৃতীদের গুলিতে প্রাণ হারান মণীশ শুক্লা। বারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের (Arjun Singh) ঘনিষ্ঠ এই মনীশ শুক্লা। দুষ্কৃতীরা তাঁকে খুন করতে মোট চার রাউন্ড গুলি চালিয়েছে বলেই প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার সন্ধেয় মনীশ শুক্লার উপর গুলি চালিয়েই সেখান থেকে চম্পট দেয় দুষ্কৃতিরা। মাথায় ও বুকে গুলি লাগে তাঁর। আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে বারাকপুরের একটি হাসপাতাল, সেখান থেকে তাঁকে বাইপাসের ধারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয়। কয়েক ঘণ্টা পরই জীবনযুদ্ধে হার মানেন তিনি।
আরও পড়ুন : কেন্দ্রের চিঠিতে ‘গোর্খাল্যান্ড’ শব্দ! ফের কি বাংলা ভাগ চাইছে বিজেপি? সওয়াল তৃণমূলের
ঘটনায় উত্তাল টিটাগড়। অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে বিটি রোড। রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বিজেপি কর্মীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকায় নামানো হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। মণীশ শুক্লাকে খুনের ঘটনায় সোমবার ১২ ঘণ্টার বনধের ডাক দিয়েছে বিজেপি।
শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক তরজা। অভিযোগ, তৃণমূলই এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে। ঘনিষ্ঠ নেতা গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরই সাংসদ অর্জুন সিং তৃণমূলকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন। কিন্তু এমন ঘটনার সঙ্গে শাসকদলের কোনও সম্পর্ক নেই বলেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, তৃণমূল এর সঙ্গে জড়িত নয়। তৃণমূল সরকার সন্ত্রাসের রাজনীতি করে না।
মনীশ টিটাগরের প্রাক্তন কাউন্সিলর ছিলেন। বর্তমানে বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য। বাম আমলে বারাকপুরের বাম সাংসদ তড়িৎ বরণ তপদারের খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন তিনি। রাজ্যে রাজনৈতিক পালা বদলের পর দলবদল করে তৃণমূলে যোগ দেন। সে সময় বারাকপুরের তৃণমূল বিধায়ক শীলভদ্র দত্তর অনুগামী হয়ে যান। তৃণমূলে থাকাকালীন টিটাগরের কাউন্সিলরও হয়েছিলেন। তবে লোকসভা নির্বাচনের সময় অর্জুন সিংহের হাত ধরে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন।
সোমবার রাজ্য সরকারের স্বরাষ্ট্রসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্রকে তলব করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। একটি টুইটবার্তায় তিনি বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জেরে রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে টিটাগড় পুরসভার কাউন্সিলর মণীশ শুক্লার কাপুরোষচিত খুনের ঘটনায আগামিকাল (সোমবার) সকাল ১০ টায় স্বরাষ্ট্রসচিব ও পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ডিজিকে তলব করা হয়েছে।’
ACS Home @MamataOfficial and DGP @WBPolice have been summoned at 10 am tomorrow in the wake of worsening law and order situation leading to dastardly killing of Manish Shukla, Councillor, Titagarh Municipality in political party office.
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) October 4, 2020
ভোট কাছে এলেই বাড়তে থাকে হিংসা। মৃত্যু নিয়ে নোংরা রাজনীতি চলতে থাকে। একটা মানুষ খুন হয়ে গেলো একথা আর কারও মনে তেমন রেখাপাত করেনা। পুলিশের তদন্ত শেষ হবার আগেই রাজনেতারা বলে দেন খুনি কে বা কারা। ফলে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়ে যায়। যেই রাজনৈতিক তরজাকে একপ্রকার ‘বিনোদন’ করে প্রাইম টাইম বেচা চলতে থাকে। বিক্রি হয় টিআরপি। কিছুদিন পর সব আগের মত।
আরও পড়ুন : হাথরাসে নির্যাতিতার পরিবার CBI তদন্ত চায় না,বয়ান রেকর্ড করল SIT