দেশে দিনে নতুন কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা আড়াই লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে। দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা পেরিয়েছে দেড় হাজার। কোভিড রোগী সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন ডাক্তার-নার্সরা। দু’ডোজ প্রতিষেধক নেওয়ার পরেও দিল্লি-সহ বহু শহরের ডাক্তার-নার্সরা নিজেরাই কোভিডে আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন। অথচ এরই মধ্যে ‘কোভিড-যোদ্ধা’ ডাক্তার-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ৫০ লক্ষ টাকার জীবনবিমার প্রকল্প বন্ধ করে দিল মোদী সরকার।
কোভিড যোদ্ধাদের সম্মান জানাতে হেলিকপ্টার থেকে ফুল ছোঁড়া হয়েছিল। আত্মবিশ্বাস বাড়াতে ঘটা করে বাজানো হয়েছিল কাঁসর-ঘণ্টাও। কিন্তু সেসব শুধু দেখনদারিই। বাস্তবে দেখা গেল একেবারে অন্য ছবি। করোনা যোদ্ধাদের ন্যূনতম সুরক্ষাও কেড়ে নিল কেন্দ্রের মোদী সরকার। বন্ধ করে দেওয়া হল করোনা যোদ্ধাদের জন্য চালু হওয়া বিমা। গত বছর লকডাউনের পর ডাক্তার-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ৫০ লক্ষ টাকার জীবনবিমার প্রকল্প চালু করেছিল কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ প্যাকেজের আওতায় এই বিমা পরিষেবা চালু করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন : বেতন সহ ছুটি পেতে ৩৭ দিনে তিনবার ডিভোর্স, চারবার বিয়ে সারলেন এক ব্যাংক কর্মী!
গত বছর লকডাউন ঘোষণার পরেই মোদী সরকার ঢাকঢোল পিটিয়ে ঘোষণা করেছিল, কোভিডের মোকাবিলায় সামনের সারিতে থাকা ডাক্তার-নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, নিকাশি কর্মী, আশা কর্মীদের বিমার আওতায় নিয়ে আসা হবে। কোভিডের মোকাবিলা করতে গিয়ে এই সমস্ত কর্মীদের মধ্যে কারও মৃত্যু হলে, তাঁর পরিবার ৫০ লক্ষ টাকা পাবেন। এখনও পর্যন্ত মাত্র ২৮৭ জন ডাক্তার-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীর পরিবার ৫০ লক্ষ টাকার বিমার সুবিধা পেয়েছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রক অবশ্য ফেব্রুয়ারি মাসে সংসদে জানিয়েছিল, ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাওয়া হিসেবে ৪৮৯ জন ডাক্তার-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীর কোভিডে মৃত্যু হয়েছে। এঁদের মধ্যে ডাক্তার ১৭৪ জন, নার্স ১১৬ জন ও স্বাস্থ্যকর্মী ১৯৯ জন।
গত বছরের ২৬ মার্চ কোভিড ও লকডাউনের মোকাবিলায় ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনা’ ঘোষণার সময়ে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেছিলেন, সামনের সারিতে থাকা কর্মীরা নিজেদের কতখানি ঝুঁকির মধ্যে ফেলছেন, তা সরকার ভোলেনি। সেই কারণেই এই বিমা প্রকল্প। অনেকের মতে, সেই সময়ে মোদী সরকারের ধারণা ছিল, তিন মাসেই কোভিডের বিরুদ্ধে যুদ্ধ জয় করে ফেলা যাবে।
২০২০ সালের ৩০ মার্চ থেকে তিন মাসের জন্য এই বিমার সুবিধা চালু হয়। কিন্তু পরে তার মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২১ সালের ২৪ মার্চ করা হয়। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ সদ্যই সব রাজ্যের মুখ্যসচিবদের চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, ডাক্তার-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের জীবনবিমা প্রকল্পের মেয়াদ আর বাড়ানো হচ্ছে না। ২৪ মার্চের আগে কারও মৃত্যু হলে তাঁর পরিবার বিমার টাকা পাবেন। ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত নথি জমা করা যাবে। তারপর থেকে আর সুবিধা মিলবে না।
আরও পড়ুন : বাড়ছে করোনা ,মঙ্গলবার থেকে বন্ধ সব স্কুল, যেতে হবে না শিক্ষকদেরও