বাঁকুড়া-সফরে গেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বাঁকুড়ারই এক জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী আজ তীব্র আক্রমণাত্মক বক্তব্য রেখেছেন। সেখানে তাঁর আক্রমণের নিশানায় এ রাজ্যের তিনদলই– বিজেপি-কংগ্রেস-সিপিএম। তৃণমূলকে হারাতে তিন দল এক হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে মমতা বলেন, ‘‘জগাই,-মাধাই-এক হয়েছে।’’বিজেপির বিরুদ্ধে ভোটে টাকা ছড়ানোর অভিযোগও তুলেছেন তৃণমূল নেত্রী। বলেন, টাকা নিয়ে নেবেন, কিন্তু ভোট দেবেন না।
বুধবার শুনুকপাহাড়ি ময়দানের জনসভা ফের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখা গেল জননেত্রীর ভূমিকায়। সভামঞ্চ থেকে বিজেপি–কে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বললেন, ‘তোদের ক্ষমতা থাকলে আমাকে গ্রেফতার কর। আমি জেলে থাকব। আমি জেলে থেকে বাংলাকে জেতাব। এই চ্যালেঞ্জ করে গেলাম।’
তাঁর কথায়, ‘লালুপ্রসাদ যাদবকে তো অনেকদিন ধরে জেলে পুরে রেখেছ। তাতে আটকাতে পেরেছ?’ বিহারে বিধানসভা ভোটে বিজেপি–র জেতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিহারে ওটা জেতা? ওটা হারা, ওটা জেতা নয়।’ মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, ‘ভোট এলেই তৃণমূলকে ভয় দেখানো শুরু হয়। যাতে তৃণমূল নেতারা ভয় পেয়ে ওদের সঙ্গে চলে যায়। ওরা বলে, হয় ঘরে থাকো, নয়তো জেলে থাকো। মনে রাখবেন, এই সব চমকানি, ধমকানি, টাকার কাছে আমি ভয় পাই না।’
আরও পড়ুন: শূন্যপদ ১৬,৫০০, primary teacher নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের
স্বাভাবিক নিয়মেই বিজেপির প্রতি প্রায় খড়্গহস্ত মমতা। বাঁকুড়ায় ক’দিন আগেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এসেছিলেন। তা নিয়ে নানা বিতর্ক বহুদিন থেকেই চলছে। সেই প্রসঙ্গও টেনে আনেন মমতা। বলেন আদিবাসী বাড়ি ধার করে খেলেন তিনি। খাবার এল বাইরে থেকে।
দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনেকেই বলছেন, এই জেলায় পর্যবেক্ষক কে, ওই জেলায় পর্যবেক্ষক কে। আমি বলছি সারা বাংলায় আমিই পর্যবেক্ষক। কোথায় কী হচ্ছে, কে কোথায় যাচ্ছে, কে কার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে, আমি সব জানি। সব বুঝেও তাঁদের ছেড়ে রেখেছি।’
তৃণমূল নেত্রী এ দিন আরও বলেন, ‘‘এত দিন সরকারের কাজে বেশি মন দিয়ে দলকে একটু ঢিলে দিয়েছিলাম। কিন্তু এ বার পুরো দলটাই আমি দেখব। এই বাঁকুড়ার মাটি থেকেই সেই কাজ শুরু করলাম আমি।’’
বিজেপি প্রসঙ্গেই তিনি জানান, ‘ওদের অনেক টাকা। ফোন করে টাকা অফার করছে।’ তার পরই তিনি সম্ভবত বিজেপির দিকে ঝুঁকে-থাকাদেরও সমালোচনা করেন। বলে দেন, ‘অনেকেই মনে করছেন, যদি বাইচান্স (বিজেপি) চলে আসে। আরে চান্সই নেই তো বাইচান্স!’
ছকেই খেলতে চাইছে বিরোধী শিবির। ভোটের আগে তাঁর দলীয় কর্মীদের টাকার লোভ দেখিয়ে দল ভাঙানোর চেষ্টা চলছে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “সিপিএমের হার্মাদ বাহিনী এখন বিজেপির হয়ে কাজ করছে।” মমতা জনসভা থেকেই দাবি করেন, সিপিএম লোভী, বিজেপি ভোগী। সেই সঙ্গেই দলীয় কর্মীদের বার্তা দিয়ে স্পষ্ট করে দেন তৃণমূলে থাকতে গেলে ত্যাগী হতে হবে।
তার সরকারের আমলে বাঁকুড়ার উন্নয়নের খতিয়ানও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। দাবি করেছেন জুন পর্যন্ত বিনামূল্যে যে রেশন দেওয়া হচ্ছে আগামী দিনে তা আরও বাড়িয়ে দেওয়া হবে। বাঁকুড়াবাসীর জন্য ২৫ লক্ষ কর্মসংস্থানের কথাও বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।নারীবাহিনী তাঁর জয়ের আসল শক্তি সেকথা জনসভায় মহিলা ভোটাকদের উদ্দেশ্যে বললেন তৃণমূলনেত্রী। ভোট আসতে এখনও মাস পাঁচেক বাকি রয়েছে। নির্বাচন কমিশনও এখনও নির্বাচনের দিন ঘোষণা করেনি।
আরও পড়ুন: করোনায় প্রয়াত সনিয়া-ঘনিষ্ঠ কংগ্রেস নেতা ও রাজ্যসভার সাংসদ আহমেদ প্যাটেল