কলকাতা: মদের ই-রিটেল শুরুর পর কাটেনি ৭২ ঘণ্টা। তাতেই এত সংখ্যক মানুষ অর্ডার দিয়েছেন যে মদ পৌঁছে দিতে রীতিমতো কালঘাম ছুটছে আবগারি দফতরের। সেজন্য আপাতত অনলাইনে মদের অর্ডার দেওয়ার পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে।
লকডাউনের মধ্যেই মদ বিক্রি শুরু হয়েছিল সোমবার। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে ১১০ কোটি টাকার মদ। তা থেকে রাজ্যের আয় প্রায় ৭০ কোটি টাকা। এ ছাড়াও মদ্যপায়ীদের স্বস্তি দিতে অনলাইনে মদ কেনার ব্যবস্থা করেছে সরকার। ‘ই-রিটেল’ নামে মোবাইল অ্যাপ চালু করার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মদ কিনতে চেয়ে ১১ হাজার মানুষ বরাত দিয়েছেন। ওই বরাতের মূল্য তিন কোটি টাকা। পরিস্থিতি এমনই যে, আবগারি দফতর অসংখ্য বাড়িতে মদ পৌঁছে দিতে অপারগ। তাই আপাতত ই-রিটেল বন্ধ রাখা হয়েছে। ১১ হাজার মদ্যপায়ীর বাড়িতে মদ পৌঁছে দেওয়ার পরে ফের তা চালু হবে।
আরও পড়ুন: পাঁচ বছর পূর্ণ করল ‘পিকু’, ইরফানের স্মৃতিতে ডুব দিলেন দীপিকা…
তৃতীয় দফার লকডাউন প্রথম দিন থেকেই মদ বিক্রি শুরু হয়েছে। দেশের অন্যান্য প্রান্তের মতো রাজ্যের মদের দোকানের সামনে লম্বা লাইন চোখে পড়েছে। অধিকাংশ জায়গায় সামাজিক দূরত্বের বিধি উপেক্ষা করে মদ কেনার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠেন মানুষ। এই অবস্থায় মদের দোকানে ভিড় এড়াতে অনলাইনে মদের অর্ডার দেওয়ার ব্যবস্থা করে রাজ্য সরকার। তা ক্রেতাদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। এত সংখ্যক মানুষের বাড়িতে কীভাবে মদ পৌঁছে দেওয়া হবে, তা ভেবেই কালঘাম ছুটেছে আবগারি দফতরের। সেজন্য আপাতত অনলাইনে মদের অর্ডার দেওয়া বন্ধ রাখা হয়েছে। আবগারি দফতর সূত্রে খবর, যাঁরা এখনও পর্যন্ত বুক করেছেন, তাঁদের বাড়িতে মদ পৌঁছে দেওয়ার প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর আবার নতুন করে অর্ডার নেওয়া হবে।
নবান্নের খবর, খুচরো বিক্রেতারা রাজ্য বেভারেজ কর্পোরেশন থেকে ইতিমধ্যেই ৩০০ কোটির মদ কিনে দোকানে মজুত করেছেন। আবগারি দফতর জানাচ্ছে, প্রতিদিন গড়ে পাঁচ লক্ষ লিটার মদ বিক্রি হচ্ছে। প্রায় আড়াই হাজার দোকানে দিনে বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ কোটি টাকার মদ।
আবগারি দফতরের কর্তারা অবশ্য জানাচ্ছেন, মদের বিক্রি নিয়ে যত হইচই চলছে, বাস্তবে রোজগার ততটা হচ্ছে না। আরও বেশি রোজগারের কথা ছিল। এক আবগারি-কর্তা বলেন, ‘‘রোজ গড়ে যে-পরিমাণ মদ বিক্রি হয়, এখন তার মাত্র এক-তৃতীয়াংশ বিক্রি হচ্ছে। অনেক জায়গায় দোকান খোলেনি। বার, রেস্তরাঁ, হোটেলেও মদ বিক্রি বন্ধ। প্রতিদিন যে-রাজস্ব সরকারের ঘরে আসে, লকডাউনের মধ্যে আসছে তার অর্ধেক। তবে ৩০% অতিরিক্ত বিক্রয়কর চাপানোর ফলে কম মদ বিক্রি হলেও তুলনায় রোজগার হচ্ছে বেশি।’’
আরও পড়ুন: ‘ভাইদের মৃত্যুতে স্তম্ভিত’, মালগাড়ির ধাক্কায় শ্রমিক-মৃত্যু নিয়ে টুইট রাহুলের