হাতিয়ার সেই চেনা বিভাজন! বঙ্গে ক্ষমতায় আসতে যোগীর ট্রাম্পকার্ড লাভ জেহাদ-গোহত্যা

তিনি বলেন, ‘বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় এলে গোহত্যা বন্ধ হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সমস্ত অবৈধ কসাইখানা বন্ধ করবে বিজেপির সরকার।
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

যৌন হেনস্থায় অভিযুক্তই গুলি করে খুন করেছেন নির্যাতিতার বাবাকে। উত্তরপ্রদেশের হাথরসে এই অপরাধের ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি, মঙ্গলবার এ রাজ্যে পা রেখে মহিলাদের সুরক্ষা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের দিকে আঙুল তুললেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মহিলাদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ রাজ্য সরকার।’’ সঙ্গে দিলেন প্রতিশ্রুতিও, ‘‘বাংলায় অরাজকতা চলতে দেব না।’’

এদিন মালদহে ‘বিভাজনে’র চেনা পিচেই ব্যাট করলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ (Yogi Adityanath)। সরাসরি সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ আনলেন রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে। যোগীর অভিযোগ, “দুর্গাপুজো-মহরম একসঙ্গে পড়লে বাংলায় মহরমের অনুমতি দেওয়া হয়। দুর্গাপুজো বন্ধ রাখা হয়। ভোট ব্যাংকের জন্য বাংলার সংস্কৃতিকে নষ্ট করছে তৃণমূল।” ভাষণের পরতে পরতে উত্তরপ্রদেশের সঙ্গে বাংলার তুলনা টানলেন এই ‘কট্টরপন্থী’ হিন্দু নেতা।

এদিন আদিত্যনাথ বলেন, ‘বাংলায় লাভ জিহাদ ঘটানো হচ্ছে। আমরা ইউপিতে আইন করে দিয়েছি। কিন্তু বাংলায় তোষণের রাজনীতি করতে এখানকার সরকার গরু পাচার হোক বা লভ জিহাদ কোনওটাই রুখতে পারছে না। যার ফল মানুষ পরে বুঝবে। এখানকার সরকার এই ঘটনা রুখতে পুরোপুরি ব্যর্থ’। সঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় এলে গোহত্যা বন্ধ হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সমস্ত অবৈধ কসাইখানা বন্ধ করবে বিজেপির সরকার। বন্ধ হবে গরুপাচারও। দুষ্কৃতীরা পালানোর জায়গা পাবে না। গলায় গামছা দিয়ে প্রাণভিক্ষা করতে হবে’।

এর আগে দুর্গাপুরে এক সভায় রাজ্যে লাভ জিহাদের প্রসঙ্গ তুলেছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র। তিনি বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ক্ষমতায় এলে এখানকার সরকারকে উত্তরপ্রদেশের মতো লভ জিহাদ বিরোধী আইন তৈরির পরামর্শ দেবো।’ এদিন ডেপুটির সুরেই কথা বললেন আদিত্যনাথ।

এদিনের ভাষণের শুরুতেই ‘বাংলায় জয় শ্রীরাম ধ্বনিকে নিষিদ্ধ করার চক্রান্ত চলছে’ বলে অভিযোগ করেন যোগী আদিত্যনাথ। তাঁর কথায়, “যাঁরা রামনামের বিরোধিতা করেন তাঁদের দরকার নেই এ রাজ্যে।” উত্তরপ্রদেশ মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কথায়, ”উত্তরপ্রদেশে যারা আগে তোলাবাজি, গুণ্ডাগিরি করত, তারা এখন জেলের ভিতরে রয়েছে। বিজেপি ক্ষমতায় এলে এই গুণ্ডাগিরি থেকে মুক্তি পাবে বাংলা।”

আরও পড়ুন: আদি বনাম নব্য কাজিয়ায় ইন্ধন, হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে বর্ধমানে সাসপেন্ড বিজেপির দাপুটে নেতা

যদি তাঁর এই দাবি যে প্রায় ভুল একথা বলা যায় চোখ বন্ধ করেই। নারী নির্যাতনের শীর্ষে থাকা উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকে হাথরসের ঘটনা নিয়ে বিঁধতে ছাড়েননি সদ্য তৃণমূলে নাম লেখানো ক্রিকেটার মনোজ তিওয়ারি বা অভিনেতা সায়নী ঘোষ। গাজোলের সভার আগে মনোজের টুইট, ‘আবার এক ঘৃণ্য ঘটনা, আবার সেই হাথরাস এবং সেই যোগী আদিত্যনাথ শাসিত উত্তর প্রদেশ। নিজের ঘর যিনি সামলাতে পারে না, তিনি আসছেন বাংলায় প্রচার করতে। উনি কি জবাব দেবেন, কী করে এক নির্যাতিতার বাবাকে সেই নির্যাতনে অভিযুক্ত অপরাধী ১২-বার গুলি করে হত্যা করতে পারে’?

মহিলাদের সুরক্ষা নিয়ে ভাষণরত যোগীকে আক্রমণ শানিয়েছেন রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী শশী পাঁজাও। হাথরসের নির্যাতিতার আর্তিভরা ভিডিয়ো শেয়ার করে তাঁর টুইট, ‘ভোটপ্রচারে বাংলায় আসা যোগীর নিজের রাজ্যেই মহিলাদের সুরক্ষায় কী ভাবে খর্ব হচ্ছে, দেখুন। দেশের মহিলাদের সুরক্ষা দিতে বরাবরই ব্যর্থ বিজেপি। এই হাথরসকাণ্ডও তার এক উদাহরণ’।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সকাল থেকেই ফের শিরোনামে যোগী-রাজ্যের হাথরস। ২০১৮ সালে এক তরুণীকে যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত গৌরব শর্মা নামে এক ব্যক্তি সম্প্রতি জেল থেকে জামিনে ছাড়া পেয়েছিলেন। সোমবার ওই তরুণীর বাবাকে গুলি করে খুন করেছেন বলে গৌরবের বিরুদ্ধে অভিযোগ। এই ঘটনারও আগে গত ডিসেম্বরে এক দলিত তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনার গোটা দেশে শোরগোল ফেলে দিয়েছিল হাথরস কিংবা তার পর বদায়ূঁর ঘটনা।

আরও পড়ুন: অগতির গতি! ঘর ওয়াপসির পরও কলকে পাননি তৃণমূলে, বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest