তোষণের রাজনীতির জন্য এরাজ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হচ্ছে, বিদায় বেলায় বিস্ফোরক মন্তব্য কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

# কলকাতা: বিদায় বেলায় বোমা ফাটিয়ে গেলেন রাজ্য পাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠি। সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকরে তিনি বললেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বাংলায় তোষণের রাজনীতির জন্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হচ্ছে। বাংলায় আইন শৃঙ্খলার উন্নতির প্রয়োজন। বাংলার সমস্ত নাগরিককে এক চোখে দেখা উচিত।

নবান্ন আর রাজভবনের মতানৈক্য নতুন কিছু নয়৷ একাধিক ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের সঙ্গে বিদায়ী রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর মতান্তর হয়েছে৷ সে শিক্ষাঙ্গনে অশান্তিই হোক কিংবা রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা ইস্যুতেই হোক, কেশরীনাথ ত্রিপাঠী অনেক সময়েই রাজ্য সরকারের সম্পূর্ণ বিপরীত প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন৷ কখনও ব্যক্তিগত মতামতও সংবাদমাধ্যমের সামনে বলে ফেলেছেন৷ এরাজ্যে সাংবিধানিক প্রধানের দায়িত্ব শেষ করে বিদায় নেওয়ার সময়েও সেই মতানৈক্য ঘুচল না৷ বরং, এবার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি কিছুটা ব্যক্তিগত আক্রমণই করে বসলেন তিনি৷

পিটিআইকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে কেশরীনাথ বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দিষ্ট পরিকল্পনা আছে। তাঁর সেই পরিকল্পনা বাস্তবে প্রয়োগ করার ক্ষমতাও আছে। তবে তিনি কখনও কখনও আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। এই আবেগ তাঁকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।’’ এর পরেই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে নিশানা করে বিস্ফোরণটা ঘটিয়েছেন তিনি। কেশরীনাথ বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোষণের নীতিই এ রাজ্যের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উপর বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। আামার মনে হয়, বৈষম্য ছাড়াই প্রত্যেক নাগরিককেই তাঁর সমান ভাবে দেখা উচিত।’’

তবে কি রাজ্যে কোনও বৈষম্য রয়েছে?  সাক্ষাৎকারে এই প্রশ্নের জবাবেও জোরালো বিতর্ক তৈরি করেছেন কেশরীনাথ। তিনি বলেছেন, ‘‘আপাত ভাবে বৈষম্য রয়েছে। তাঁর (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) মন্তব্যেই সেই বৈষম্য চোখে পড়ে।’’ রাজ্যে লোকসভা ভোটের আগে থেকেই বিজেপির বিরুদ্ধে ধর্মীয় মেরুকরণের অভিযোগ তুলছে তৃণমূল শিবির। পাল্টা, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোষণের রাজনীতির অভিযোগ তুলছে বিজেপিও। শনিবার, সেই সুরই যেন শোনা গেল বিদায়ী রাজ্যপালের গলায়।

কেশরীনাথের এই মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক চরমে উঠেছে। এ বিষয়ে নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছে তৃণমূল। জবাবে তৃণমূল মহাসচিব রাজ্যপলের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেন। তিনি বলেন, রাজ্যপালের মন্তব্য নিযে কোনও প্রতিক্রিযা দেব না। কিন্তু, মনে হচ্ছে ওঁর এই ধরণের মন্তব্য বিজেপির কাছে পযেন্ট বাড়ানোর প্রয়াস। তাঁর সংযোজন, এতদিন ধরে উনি রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। এতদিন তাহলে মুখ বুজে ছিলেন কেন ? তাঁর এই মন্তব্য রাজ্যপালের পদের গরিমাকে নষ্ট করল বলেও মন্তব্য করেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কেন্দ্রের গেরুয়া দলকে সমর্থন করতেই যে বর্ষিয়ান রাজ্যপালের এহেন মন্তব্য তা জানাতে ভুললেন না।

উল্লেখ্য, কেশরীনাথের জায়গায় পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হয়েছেন জগদীপ ধনকর। আগামী ৩০ জুলাই শপথগ্রহণ করবেন তিনি। কিন্তু, রাজ্যে নতুন রাজ্যপালের নাম ঘোষণার পর তা জেনেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্র যে চিরাচরিত সৌজন্য রক্ষা করে রাজ্য সরকারকে আগে নতুন রাজ্যপালের নাম জানায়নি, তা নিয়ে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী। সেই ক্ষোভের আঁচ পৌঁছয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছেও। এ সবের মাঝেই নতুন করে তৈরি হল বিতর্ক।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest