হুগলি জেলায় আরও বাড়ল তৃণমূলের বিড়ম্বনা। উপদলীয় কোন্দল প্রকাশ্যে আসছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। এ বার তা গড়িয়ে গেল বিধায়কের ইস্তফা পর্যন্ত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিধানসভায় গিয়ে স্পিকারের হাতে পদত্যাগপত্র তুলে দিলেন হরিপালের বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী বেচারাম মান্না। আগামিকাল শুক্রবার বেচারামের অনুগামীরাও সিঙ্গুরে গণ-পদত্যাগ করবেন বলে তাঁর ঘনিষ্ঠরা জানাচ্ছেন।
স্থানীয় স্তরে ব্লক কমিটি গঠন নিয়ে তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব পৌঁছে গেল পদত্যাগের পর্যায়ে। পদত্যাগের ইচ্ছে প্রকাশ করলেন হরিপালের বিধায়ক বেচারাম মান্না। বৃহস্পতিবার পদত্যাগপত্র নিয়ে সোজা পৌঁছে গেলেন বিধানসভায়।
আরও পড়ুন : ভিড় নিয়ন্ত্রণে অফিস টাইমে চলবে ১০০% লোকাল ট্রেন,মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবে সিলমোহর
অথচ গত সোমবার যাঁর সঙ্গে বেচারামের মনোমালিন্য, সেই বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের মাথায় এসেছিল ‘দলবদলের ভাবনা’। আর পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিলেন সিঙ্গুর আন্দোলনের নেতা বেচারাম।
তৃণমূল সূত্রে খবর, এই কোন্দল মেটাতে বুধবার রাতে বেচারামকে ফোন করেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিঙ্গুরের তৃণমূল সভাপতি পদে গোবিন্দ ধাড়াকে সরিয়ে মহাদেব দাসকে ব্লক সভাপতি করার নির্দেশ দেন দলনেত্রী। একই সঙ্গে হরিপালের বিধায়কের টিকিটও যে আর বেচারাম এ বার পাবেন না, সেই বার্তাও মমতা বেচারামকে দেন বলে দলীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে। তাঁর পরিবর্তে মহাদেব দাস অথবা সমীরণ মিত্রকে টিকিট দেওয়া হতে পারে, এমন ইঙ্গিতও ছিল নেত্রীর বার্তায়।
তবে বেচারামের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, দলনেত্রীর কাছে বেচারামের পাল্টা প্রশ্ন ছিল, রবীন্দ্রনাথবাবু প্রকাশ্যে দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন। তাঁকে খুশি রাখতে গিয়ে কেন অন্যদের ত্যাগ স্বীকার করতে হবে? এতে তৃণমূল নেত্রী বেচারামের উপর কার্যত রুষ্ট হন বলে দলীয় সূত্রে খবর। এমনকি, বেচারাম যেন দলকে ‘ব্ল্যাকমেল’ করার চেষ্টা না করেন, এই বার্তাও নেত্রীর তরফে দেওয়া হয় বলে জানা যাচ্ছে।
এদিকে, সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার বিধানসভায় অধ্যক্ষকে পদত্যাগপত্র দেওয়ার পরই তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি ফোন করেন বেচারাম মান্নাকে। তাঁকে তৃণমূল ভবনে ডেকে পাঠানো হয়। সেখানে যান বেচারাম মান্না। তার পর সুব্রত বক্সির সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠকে বসে যাবতীয় সমস্যা মিটে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কোনও বিবৃতি তৃণমূল বা বেচারাম মান্নার কাছ থেকে আসেনি।
আরও পড়ুন : সামান্যের জন্য বিহার হাতছাড়া মহাজোটের, এনডিএ-র সঙ্গে ভোটের ফারাক মাত্র ০.০৩ শতাংশ