ইংরেজিতে এমএ, দেড়শো চুরি তিন বছরে ! শেষে হাওড়া পুলিশের জালে ‘মেধাবী চোর’

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

ইংরেজিতে এমএ৷ পড়াশোনায় মেধাবি।ছোট থেকেই ছিল হাত সাফাইয়ের ঝোঁক৷বড় হয়ে সেই চুরিকেই পেশা হিসেবে নিয়ে নিয়েছিল আসানসোলের বাসিন্দা সৌমাল্য চৌধুরী৷ নিজের স্কুটি নিয়ে আসানসোল, হাওড়া, হুগলি এমন কি পূর্ব মেদিনীপুরেও একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে সে৷ তিন বছরে সংখ্যাটা প্রায় ১৬০-এর কাছাকাছি৷ আসানসোলের বাসিন্দার এমন এক মেধাবী চোরকে অবশেষে জালে তুলল হাওড়া সিটি পুলিশ৷ এই চোরের জীবন কাহিনি শুনে রীতিমতো তাজ্জব হাওড়ার পুলিশ কর্তারা।

আরও পড়ুন: পাহাড়ে দাঁড়িয়ে বেবি বাম্প ফ্লন্ট করলেন নুসরত, দিলেন ‘উদারতা’র বার্তা

পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৯ জুন আন্দুলের একটি বাড়িতে চুরি করেছিল সৌমাল্য৷ সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই ধরা পড়েছে সৌমাল্য এবং তার দুই সঙ্গী৷ কিন্তু পুলিশি জেরায় মধ্য তিরিশের এই যুবক যা দাবি করেছে, তা অনেকটা সিনেমার গল্পের মতোই৷আসানসোলের বাসিন্দা সৌমাল্যর বাবা পূর্ত দফতরের অফিসার ছিলেন৷ সৌমাল্য ছোট থেকেই পড়াশোনায় যথেষ্ট ভাল ছিল৷ কিন্তু বরাবরই জিনিস চুরির নেশা ছিল তার৷ এমন কি, এই নেশার শুরু নিজের বাড়ি থেকেই৷ পুলিশের দাবি, ছোটবেলায় কখনও নিজের বাড়ি, কখনও প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে কখনও বাসন, কখনও অন্যান্য ছোটখাটো জিনিস সরিয়ে ফেলত সৌমাল্য৷ সেই থেকে শুরু৷ সৌমাল্য দাবি করেছে, সে ইংরেজিতে এমএ পাশ করেও মনোমতো চাকরি পায়নি৷ তার পরেই পাকাপাকি ভাবে চুরির পেশাতেই মন দিয়েছিল সে৷

পুলিশ জানতে পেরেছে, নিজের স্কুটি নিয়ে কখনও আসানসোল, কখনও হাওড়া, কখনও আবার হুগলির বিভিন্ন এলাকায় চষে বেড়াত সৌমাল্য৷ উদ্দেশ্য ছিল চুরির আগে এলাকায় ঘুরে ঘুরে রেইকি করা৷ কোন বাড়ি কখন ফাঁকা থাকে, বাড়ির বাসিন্দারা কখন ঢোকেন- বেরোন এসবই আগে থেকে দেখে নিয়ে অপারেশনে নামত সৌমাল্য৷

এ ভাবেই গত ৯ জুন আন্দুলের বাসিন্দা অভিজ্ঞান ঘোষ নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে চুরি করে সৌমাল্য৷ পরে অভিজ্ঞানবাবু লক্ষ্য করেন, চাবি যথাস্থানে থাকলেও আলমারি থেকে খোয়া গিয়েছে সোনার গয়না সহ টাকা পয়সা৷ অভিজ্ঞান বাবুর মা তাঁকে জানান, দিন কয়েক আগে এক অপরিচিত যুবক স্কুটি নিয়ে জল খাওয়ার অছিলায় বাড়িতে এসেছিল৷ ওই যুবকই আসলে ছিল সৌমাল্য৷ সৌমাল্যর চেহারার বর্ণনাও অভিজ্ঞান বাবুকে জানান তাঁর মা৷

চুরির ঘটনা নিয়ে হাওড়ার নাজিরগঞ্জ থানায় অভিযোগ জানাতে যান অভিজ্ঞান নস্কর৷ থানার বাইরে এক যুবককে দেখে তাঁর সন্দেহ হয়৷ কারণ মায়ের থেকে পাওয়া যুবকের সঙ্গে থানার বাইরে স্কুটি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ওই যুবকের চেহারার মিল ছিল৷ তাৎক্ষণিক বুদ্ধি খাটিয়ে স্কুটির নম্বরটি নিয়ে নেন অভিজ্ঞান ঘোষ৷ এর পর নিজের কিছু সূত্র কাজে লাগিয়েই তিনি জানতে পারেন, ওই স্কুটি আসানসোলে নথিভুক্ত৷ আসানসোল পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে সৌমাল্য চৌধুরীর নাম পান অভিজ্ঞান বাবু৷

পুলিশই তাঁকে জানায়, এই সৌমাল্যর বিরুদ্ধে অতীতে অসংখ্য চুরির অভিযোগ রয়েছে আসানসোল এবং সংলগ্ন এলাকায়৷ এর পরেই গোটা বিষয়টি ফের নাজিরগঞ্জ থানাকে জানান তিনি৷ ঘটনার তদন্তে নেমে এবং বিভিন্ন রাস্তা এবং টোল প্লাজার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে সৌমাল্যকে চিহ্নিত করে হাওড়া সিটি পুলিশ৷ এর শনিবার পূর্ব মেদিনীপুর থেকে সৌমাল্য এবং তার আরও দুই সঙ্গীকে গ্রেফতার করা হয়৷ চুরি যাওয়া গয়না সহ বেশ কিছু সামগ্রীও উদ্ধার হয়েছে৷ প্রকাশ শাসমল এবং মাধব সামন্ত নামে এই দুই সঙ্গীর কাছেই চুরির মাল বিক্রি করত সৌমাল্য৷

পুলিশ সূত্রেই দাবি, জেরায় সৌমাল্য স্বীকার করেছে, তার এই আচরণে রীতিমতো তিতিবিরক্ত হয়ে উঠেছিল তার বাবা- মা৷ এমন কি, ছেলের বিরুদ্ধে পরের পর চুরির অভিযোগ ওঠার হতাশা থেকে সৌমাল্যর মা আত্মহত্যাও করেছেন৷হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি সাউথ প্রতীক্ষা ঝারখরিয়া জানিয়েছেন, গত কয়েক মাসে শুধুমাত্র হাওড়াতেই সৌমাল্যর বিরুদ্ধে ৬টি চুরির অভিযোগ রয়েছে৷ আসানসোলেও ১৬টি মামলার খোঁজ মিলেছে৷ অভিযোগ রয়েছে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটেও৷

আরও পড়ুন: তবলিগ জামাত করোনা ছড়াচ্ছে, এই অপপ্রচারের দায়ে তিন টিভি চ্যানেলকে লক্ষাধিক টাকা জরিমানা

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest