বয়সের কারণে এবার টিকিট পাননি ৮৪ বছরের শিবপুরের বিদায়ী তৃণমূল বিধায়ক জটু লাহিড়ি। নেতৃত্বের এই পদক্ষেপে ‘অপমানিত’ বোধ করেছেন তিনি। তাই সম্মানের আশায় জোড়া-ফুল ছেড়ে আপাতত বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ যোগ দিচ্ছে বিজেপিতে। আগামিকাল প্রধানমন্ত্রী মোদীর ব্রিগেডে রয়েছে। সেই সভাতেই জটু লাহিড়ি গেরুয়া পতাকা হাতে তুলে নেবেন।
এবার বিধানসভা ভোটে ৮০ বছরের উর্ধ্বে বিধায়কদের টিকিট দেয়নি তৃণমূল কংগ্রেস। শুক্রবার প্রার্থী তালিকা ঘোষণার সময় তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বয়সের কারণে জটু লাহিড়ির মতো কয়েকজনকে টিকিট দেওয়া হচ্ছে না। যাঁদের টিকিট দেওয়া হচ্ছে না, তাঁদের জন্য বিধান পরিষদ তৈরি করা হবে বলেও দাবি করেন মমতা।
যদিও সেই আশ্বাসে চিঁড়ে ভেজেনি। বরং বাংলার ক্রিকেটার মনোজ তিওয়ারিকে তাঁর কেন্দ্র থেকে টিকিট দেওয়ায় তৃণমূলের প্রতি বঞ্চনার অভিযোগ তুলেছেন ৮৪ বছরের বিধায়ক। তাঁর বক্তব্য, তৃণমূলে অপমানিত বোধ করছেন তিনি। বঞ্চনার শিকার হয়ে আসছেন। ‘যদি তোর ডাক না শুনে কেউ আসে, তাহলে একলা চলো রে’ ডাক দিয়ে একাই তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়ে এসেছেন। বলেন, ‘এই সরকার যত তাড়াতাড়ি যাবে, তত দেশের মঙ্গল হবে। তত দেশের কল্যাণ হবে। কারণ এই সরকার নীতি-নৈতিকতাহীন হয়ে গিয়েছে। আমাদের বাংলাকে ভিখিরি করে দিয়েছে।’ তাঁর কার্যালয় থেকেও মমতা ও তৃণমূলের যাবতীয় ছবিও খুলে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলার বাঘিনী মমতার পাশে দাঁড়ান, বার্তা দিয়ে বঙ্গ ভোটে প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত উদ্ভবের
যদিও নতুন দলের সামনে একটিই শর্ত রেখেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘আমি দলের স্বার্থে যেকোনও কাজ করতে পারি। টিকিট না দিলেও কোনও হতাশা থাকবে না। কিন্তু, বলেছি আমাকে যোগ্য সম্মান দিতে হবে। না হলেই বিপদ। সব সহ্য করব, কিন্তু অপমান নয়।’ তাহলে কি শিবপুরে দাঁড়াচ্ছেন? জটু জানান, সেই সিদ্ধান্ত বিজেপি নেবে।
শুক্রবার প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর থেকেই দলে বিদ্রোহের সংখ্যা বাড়ছে। বিভিন্ন কেন্দ্রে ‘বহিরাগত’ প্রার্থীদের মানতে নারাজ তৃণমূল কর্মীরা। দলের হয়ে কাজ না করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। একই সঙ্গে টিকিট না পাওয়া বিদায়ী তৃণমূল বিধায়কদেরও ক্ষোভ চরমে। নলহাটির বিদায়ী তৃণমূল বিধায়ক মইনউদ্দিন শামস টিকিট না পেয়ে গতকালই জানান তিনি তৃণমূল ছাড়ছেন। তৃণমূল ছাড়ার পথে পুরশুড়ার বিধায়ক মহম্মদ নূরউজ্জামান ও সাঁকরাইলের বিধায়ক শীতল সর্দার। এঁরা দু’জনেই মুকুল রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিজেপিতে যোগদানের ইচ্ছা প্রকাশ করেন বলে সূত্রের খবর। তালিকায় রয়েছেন মমতার একদা ছায়াসঙ্গী সোনালি গুহও। এবার সাতগাছিয়া থেকে টিকিট না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন সোনালি। অভিমানী হয়ে তোপ দাগেন নেত্রীর বিরুদ্ধে। এই ভাঙ্গন কিকরে সামাল দেন তৃণমূল নেত্রী সেটাই এখন দেখার।
আরও পড়ুন: WB election 2021: উত্তরবঙ্গ থেকে প্রচার শুরু মমতা, রবিবার সিলিন্ডার মিছিল করবেন শিলিগুড়িতে