অনুপম সিং হত্যা মামলায় সাজা ঘোষণা, মনুয়া ও তার প্রেমিকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

#কলকাতা: অনুপম সিং হত্যা মামলায় স্ত্রী মনুয়া মজুমদার ও তাঁর প্রেমিক অজিত রায়কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা করল বারাসত আদালত৷ সঙ্গে  দু’জনেরই ৫০ হাজার টাকা জরিমানা।  অনাদায়ে আরও এক বছর কারাবাসের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ বৃহস্পতিবার তাঁদের দোষী সাব্যস্ত করেছিল বারাসতের চতুর্থ ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট। আজ, শুক্রবার সাজা ঘোষণা করেন বিচারক।

২০১৭ সালে মে মাসের তিন তারিখ সকালে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন সংস্থায় কর্মরত অনুপম সিংহকে (৩৪) তাঁর বাড়িতেই নৃশংস ভাবে খুন হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। তদন্তে জানা যায়, তাঁর মাথায় ভারী অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে খুন করা হয়েছিল আগের রাতেই।

পুলিশ প্রথমে এই খুনের সঙ্গে আর্থিক লেন‌দেন সংক্রান্ত গোলমাল সন্দেহ করেছিল। পরে অবস্থাপন্ন অনুপমের খুনের পিছনে টাকাপয়সার প্রত্যক্ষ সংযোগ পুলিশ খুঁজে পায়নি । নোটবাতিলের সময়ে হুন্ডির সঙ্গে অনুপমের সংস্থার প্রত্যক্ষ যোগাযোগ ছিল বলে জানা গেলেও খুনের সঙ্গে এই বিষয়ে কোনও যোগ পাওয়া যায়নি।  খুনের ১৩ দিনের মাথায় প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে বারাসত থেকে মনুয়া মজুমদার (সিংহ) এবং তার প্রেমিক অজিতকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, অজিতের সঙ্গে মনুয়ার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই অনুপমকে নৃশংস ভাবে খুন করে অজিত।

যে দিন গভীর রাতে খুন হয়েছিলেন অনুপম, সে দিন তাঁর স্ত্রী বাপের বাড়িতে ছিলেন বলে দাবি করলেও ঘটনার দিন দুপুরে হৃদয়পুরে অনুপমের বাড়িতে অনুপমের অগোচরে অজিত, মনুয়ার উপস্থিতি টের পায় পুলিশ। তদন্তে জানা যায়, মনুয়া ওই বাড়ি থেকে বারাসতে বাপের বাড়ি ফিরলেও থেকে গিয়েছিল অজিত। পুলিশ এই সূত্র ধরেই তদন্তের জাল গুটিয়ে আনতে থাকে। তদন্তে উঠে আসে, অনুপমের মাথায় ভারী অস্ত্র  দিয়ে আঘাত করে খুন করা হয়েছিল। খুনের দিন তাঁর স্ত্রী মনুয়া বাপেরবাড়িতে থাকলেও ঘটনার সময় প্রেমিক অজিতের মোবাইলে ফোন করে অনুপমের আর্তনাদ শুনেছিল। তদন্তকারীরা এ-ও জানতে পারেন, খুনের ঘটনার দিন অর্থাৎ ২ মে দুপুরে ওই বাড়িতে গিয়েছিল মনুয়া ও তার প্রেমিক অজিত। পরে মনুয়া বাপেরবাড়ি ফিরে গেলেও অজিত ওই বাড়িতেই লুকিয়ে ছিল। অনুপম আসতেই তাকে আক্রমণ করে অজিত। লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে মাথা থেঁতলে খুন করা হয় অনুপমকে।

এই হত্যাকাণ্ডের ৮৬ দিন পরে চার্জশিট জমা দেয় বারাসত থানার পুলিশ। এর মধ্যে ফিংগারপ্রিন্ট ও ফরেনসিক রিপোর্টও ছিল । ৩০২ ও ১২০বি ধারায় খুন ও ষড়যন্ত্রের মামলা চলে। ২৭ জন সাক্ষী ছিলেন। পুলিশ সূত্রে খবর, মনুয়াকে জেরা করে তার প্রেমিক অজিতের সন্ধান পান তদন্তকারীরা। দু’জনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হয়। শেষপর্যন্ত চাপের মুখে ভেঙে পড়ে অজিত। অপরাধ স্বীকার করে নেয় সে। যদিও নিজের অবস্থানে অনড় ছিল মনুয়া। কিন্তু প্রেমিক দোষ স্বীকার করে নেওয়ায় আর রেহাই পায়নি ওই গৃহবধূ। মামলা দায়ের করা হয় বারাসত ফাস্ট ট্র্যাক ফোর্থ কোর্টে। প্রায় দেড় বছর ধরে শুনানি চলার পর, বৃহস্পতিবার অনুপম সিংয়ের স্ত্রী মনুয়া ও তার প্রেমিক অজিত রায়কে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। এবং শুক্রবার হল সাজা ঘোষণা৷

এই সাজায় অবশ্য খুশি নন অনুপম সিংহের বাবা-মা। সাজা শোনার পর তাঁরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। বৃহস্পতিবার তাঁরা বিচারকের কাছে ছেলের খুনিদের ফাঁসির সাজা দাবি করেছিলেন। তা না হওয়ায় ভেঙে পড়েছেন তাঁরা। অনুপম সিংহের মা জানিয়েছেন, তাঁরা সুবিচার পাননি।

 

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest