পৌষ মেলার মাঠে পাঁচিল দেওয়াকে কেন্দ্র করে চাপা অসন্তোষ ছিলই। সোমবার সকালে যেন ভেঙে গেল ধৈর্যের বাঁধ। জেসিবি চড়ে বোলপুরের বহু মানুষ পৌষ মেলার মাঠে পৌঁছন। পাঁচিল এবং দরজা ভেঙে দেন তাঁরা। এই ঘটনার জেরে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হল বিশ্বভারতী।
ঘটনার সূত্রপাত হয় গত পরশুদিন। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পৌষ মেলার মাঠ ঘিরে ফেলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। সেইমত পরশুদিন মাঠে পাঁচিল তোলার কাজ শুরু হয়। অভিযোগ, বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা তখন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঠিকাদার কর্মীদের মারধর করেন। পাঁচিল তোলার কাজ বন্ধ করে দেন। এরপরই সোশ্যাল মাধ্যম থেকে শুরু করে বোলপুর শহরবাসীর মধ্যে পাঁচিল তোলার বিষয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। ‘মেলার মাঠ বাঁচাও’ বলে একটি কমিটিও তৈরি করা হয়।
আরও পড়ুন: অবাধে ঘুরছেন করোনা আক্রান্তের ভাই! বাঁচতে গাছের ডালই ভরসা আম জনতার
গতকাল আবার ‘মেলার মাঠ বাঁচাও’ কমিটির কয়েকজন প্রবীণ ব্যক্তিকে পাঁচিল তৈরির বিরুদ্ধে আন্দোলন করেতে দেখা যায়। তার পরিপ্রেক্ষিতে আবার গতকাল উপাচার্যকে নিজে উপস্থিত থেকে হাজার জন বিশ্বভারতীর কর্মীকে নিয়ে ফের পাঁচিল তৈরির কাজ শুরু করতে দেখা যায়। এরপর আজও বিভিন্ন মাধ্যম থেকে একটি জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছিল। প্রায় ১০ হাজারের বেশি লোক আজ ঘটনাস্থলে জমায়েত করে। অভিযোগ, জমায়েত চলাকালীন নির্মীয়মাণ পাঁচিল এবং বিশ্বভারতীর তরফে তৈরি অস্থায়ী ক্যাম্প ভাঙচুর করা হয়। লুঠপাটও চালানো হয়। এমনকি মেলার মাঠে প্রবেশের যে গেটগুলি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ আগেই বন্ধ করে দিয়েছিল, সেগুলিও ভেঙে ফেলা হয়। বিক্ষোভকারীরা নিজেরাই বুলডোজার নিয়ে এসে সবকিছু উপড়ে ফেলেন বলে অভিযোগ।
তবে সূত্রে খবর, এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই বৈঠকে বসেছেন বিশ্বভারতীর আধিকারিকরা। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।বিশ্বভারতীতে অশান্তি, উত্তেজনার জন্য এদিন সকালে প্রথমে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন ধনখড়। বিশ্বভারতী নিয়ে রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে টুইটারে সরব হন রাজ্যপাল। এরপরই বেলায় তিনি জানান যে, “বিশ্বভারতীর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে সবরকম পদক্ষেপ করা হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”
আরও পড়ুন: রাজভবনে নজরদারি চলছে, পাচার হচ্ছে গোপন নথি, দাবি ধনখড়ের