Site icon The News Nest

নাম না করে অধিকারীদের ‘নতুন’ নন্দীগ্রামে ধুয়ে দিলেন মমতা

WhatsApp Image 2021 01 18 at 7.27.05 PM

একবার আলাদা করে কারও নাম করলেন না। তবে নন্দীগ্রামের মাটিতে দাঁড়িয়ে অধিকারীদের (বিশেষত, শুভেন্দু অধিকারীকে) ছত্রে ছত্রে বিঁধলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নন্দীগ্রামের তেখালির বিশাল জনসভা থেকে তাঁর মন্তব্য, ‘‘রাজনীতিতে একদল ভোগী। একদল ত্যাগী। যারা ত্যাগ করতে জানে, তারা মায়ের কোল, আম্মার কোল ছাড়ে না। হাজার মার মারলেও তারা প্রতিবাদ করবে।’’

তার পরেই তিনি বলেন, ‘‘আর এক দল আছে। যারা লোভী। যাদের প্রচুর সম্পত্তি। প্রচুর টাকা। সেই টাকাও আছে ঢাকা। সেই টাকা যাতে বাইরে বেরিয়ে না পড়ে, সে জন্যই সব কারবার।’’ নন্দীগ্রাম থেকেই ২০২১-এ জেতার পালা শুরু হল বলে জানিয়ে মমতা বলেন , ‘‘নন্দীগ্রামে তৃণমূলের নতুন জন্ম হল।’’

এদিন মমতা বুঝিয়ে দিলেন নন্দীগ্রাম বিশেষ কোনও পরিবারের দাস নয়। নন্দীগ্রাম মানুষের গ্রাম। নন্দীগ্রাম মাটির গ্রাম। যারা নিজেদের সম্পদ অক্ষুন্ন রাখতে একটা ‘বিভেদকামী’ দলের ছায়ায় থাকতে চায় তারা কাপুরুষ। রাজনীতিতে কৌশল থাকে। কিন্তু নিজেদের ধান্দায় সপরিবারে যখন কোনও দল একটি ভিন্নদলের পতাকা তলে আশ্রয় নেন , কিংবা আশ্রয় নেবার পরিকল্পনা করে । তখন তাদের মানুষ চিনে ফেলে। তাদের আস্ফালনে লোকে তখন মনে মনে হাসে।

আরও পড়ুন: শুভেন্দুর ডেরায় মাস্টারস্ট্রোক মমতার, নন্দীগ্রামে নিজেই প্রার্থী হবেন বলে ঘোষণা

মমতা বলেছেন, ‘‘বিজেপি বলছে, টিএমসি করলে জেলে। নয়তো ঘরে। অর্থাৎ, বিজেপি করলে সব কালো সাদা হয়ে যাবে। ওয়াশিং পাউডার বিজেপি! তা যারা গিয়েছো, তারা যাও। তোমরা প্রধানমন্ত্রী হও। তোমরা রাষ্ট্রপতি হও। আমায় কেউ চোর বলতে পারে। খারাপ কথা বলতে পারে। আমি কারও সম্পর্কে একটাও খারাপ কথা বলব না!’’

সম্প্রতি যাঁরা তৃণমূল ছেড়ে গিয়েছেন, তাঁদের নিয়ে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘কেউ কেউ ইধার-উধার করছে। অত চিন্তা করার কারণ নেই। তৃণমূলের জন্মদিনে তো তোমরা ছিলে না! তখন তো এই নন্দীগ্রাম থেকে প্রার্থী হয়েছিল অখিল গিরি। দ্বিতীয় হয়েছিল। প্রথম হয়েছিল সিপিএম।’’

বেশ কয়েক বছর পর নন্দীগ্রামে জনসভা করলেন মমতা। ভিড়ে উপচে-পড়া সেই সভা থেকে মমতা যেমন ঘোষণা করেছেন, আগামী নির্বাচনে তিনিই নন্দীগ্রাম থেকে লড়বেন, তেমনই বার বার বলেছেন, নন্দীগ্রামকে তিনি ভোলেননি। নন্দীগ্রামের সঙ্গে তাঁর ‘আত্মার টান’ রয়েছে।

মমতা আরও জানিয়েছেন যে, তিনি নন্দীগ্রাম নিয়ে বইও লিখেছেন। স্লোগান লিখেছেন, ‘ভুলতে পারি নিজের নাম, ভুলব না কো নন্দীগ্রাম’। মমতা বলেছেন, ‘‘কী করে ভুলব রক্তস্নাত সেই দিনগুলোর কথা। আজ তো নন্দীগ্রাম অনেক উন্নত হয়েছে। কিসান মাণ্ডি হয়েছে। কর্মতীর্থ হয়েছে। কলেজ হয়েছে। মাল্টি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল হয়েছে। অনেক কিছুই হয়েছে।’’

তবে অনেকে বলছেন, অধিকারী পরিবার যদি নিজেদের দল বানাতেন তাহলে আলাদা কথা ছিল। কিন্তু তারা যা করেছে তাতে বাংলার মানুষ তাদের ক্ষমা করবে না। এটা গদ্দারী। তৃণমূলে থেকে কেউ যদি বিজেপিতে ইট পেতে রাখে তা মেনে নেওয়া মানুষের কাছে কঠিন। যাদের পিছনে সিবিআই কিংবা ইডি রয়েছে, তারা বেশিরভাগই মোদীর দলে নাম লিখিয়েছেন।

তৃণমূল ফেরত বিজেপি নেতাদের চাপে অপেক্ষাকৃত পুরনো বিজেপি নেতাদের অবস্থা সঙ্কটে। অভিমান করা ছাড়া তাদের হাতে আর কিছু নেই। একটা কথা মানতেই হবে যে, তৃণমূল বাংলার পার্টি। কিন্তু বিজেপি গোবলয়ের পার্টি। তৃণমূল, সিপিএম কিংবা কংগ্রেস আলাদা করে বিদ্বেষের কথা বলে না। সকলকে নিয়ে চলার কথা বলে। বিজেপির ইউএসপিই হল বিদ্বেষ।

বিজেপির ‘অধার্মিক’ নেতাদের সৌজন্যে দেশের বাইরে ঐতিহ্যময় হিন্দুধর্ম ‘বিদ্বেষধর্ম’ ও ‘অসহিষ্ণু’ ধর্ম বলে চিহ্নিত হচ্ছে। হিন্দুধর্ম কোনও দলের ধর্ম নয়। এটা এদেশের হিন্দুরা না বুঝলে আগামীতে তাদের অবস্থা যে কি করুন হবে, তা এখনই টের না পেলে ঢের দেরি হয়ে যাবে। এমনটাই মনে করছেন বহু সচেন দেশবাসী ।

আরও পড়ুন: বৃক্ষরোপণ, পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে ২৬ জানুয়ারি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন অযোধ্যায়

 

Exit mobile version