বন সহায়ক নিয়ে কারসাজি, চুরি করে বিজেপিতে গিয়েছে: নাম না করে রাজীবকে বিঁধলেন মমতা

অভিযোগ, অনেক জায়গাতেই বনবস্তিবাসীরা চাকির পাননি। অথচ শহরাঞ্চলের বাসিন্দারাও অনেকে চাকরি পেয়েছেন।
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

দুর্নীতিতে অভিযুক্তরাই বিজেপিতে যাচ্ছেন। দলত্যাগীদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ছিলই। এ বার রাজ্যের প্রাক্তন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তদন্তের হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বন সহায়ক পদে নিয়েোগের ব্যাপারে রাজীব দুর্নীতি করেছেন বলে অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। বুধবার আলিপুরদুয়ার প্যারেড গ্রাউন্ডে কর্মিসভা থেকে মমতার আশ্বাস, বন সহায়ক পদে প্রকৃত চাকরির দাবিদার কেউ বঞ্চিত হলে পুনর্বিবেচনা করা হবে। গুড়াপের সভা থেকে অভিযোগের জবাব দিয়েছেন রাজীব। বলেছেন, ‘‘তিনি স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগের জন্য বোর্ডের হাতে তুলে দিয়েছিলেন।’’

এদিন আলিপুরদুয়ারের সভার অন্তিম লগ্নে মুখ্যমন্ত্রী হঠাৎ রাজ্যের বন দফতরের বন সহায়ক পদে নিয়োগ নিয়ে হওয়া সমস্যার কথা তুলে ধরেন। তখনই তিনি নাম না করে প্রাক্তন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে বিরাট কেলেঙ্কারির অভিযোগ তোলেন। মমতা এদিন বলেন, ‘‌যে ছেলেটা আমাদের থেকে চলে গেছে, সে বন সহায়ক পদে নিয়োগ নিয়ে কিছু কারসাজি করেছে। আমাকে অনেকে এই অভিযোগ করেছে। আমরা সেটা তদন্ত করে দেখছি।’‌

রাজীবের নাম না করেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরও কটাক্ষ, ‘‌ওই ছেলেটা বাইরে গিয়ে এখন অনেক বড় বড় কথা বলে। কিন্তু ও বন সহায়ক পদে নিয়োগ নিয়ে কী করেছে সেটা ওঁরা কাছে আগে জিজ্ঞাসা করুন। চুরি করে এখন বিজেপি–তে চলে গিয়েছে। কারণ, বিজেপি তো এখন ওয়াশিং মেশিন। কালো চোরগুলি বিজেপি–তে যায় আর ফর্সা হয়ে বেরিয়ে আসে। এটাই বিজেপি দলের কাজ। সব চোর, গুন্ডা, ডাকাতদের দলে নেয় আর বলে তৃণমূলকে হারাও। তৃণমূলকে অত সহজে হারানো যাবে না। তৃণমূলই ক্ষমতায় ফিরবে।’‌

আরও পড়ুন: শীতলতম ফেব্রুয়ারি! তাপমাত্রা নেমে এল ১১.৪ ডিগ্রিতে, দার্জিলিংয়ে ২ ডিগ্রি

সম্প্রতি উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন বনাঞ্চলে বন সহায়ক পদে নিয়োগ করা হয়েছে। নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, বনবস্তির বাসিন্দাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই যাঁরা স্বেচ্ছায় বন-জঙ্গল রক্ষার কাজ করছেন, সুবিধা পাবেন তাঁরাও। কিন্তু এই নিয়োগ নিয়েই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। আলিপুরদুয়ারের চিলাপাতা রেঞ্জ, জলপাইগুড়ির খুনিয়া রেঞ্জ, ময়নাগুড়ির রামশাই রেঞ্জ, গরুমারা নর্থ রেঞ্জ-সহ অধিকাংশ জায়গায় প্রতিবাদ-বিক্ষোভও হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, অনেক জায়গাতেই বনবস্তিবাসীরা চাকির পাননি। অথচ শহরাঞ্চলের বাসিন্দারাও অনেকে চাকরি পেয়েছেন।

প্রবীর ঘোষাল, বৈশালী ডালমিয়া, রথীন চট্টোপাধ্যায়, পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়দের সঙ্গে সম্প্রতি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন রাজীবও। তার পরে এই প্রথম রাজনৈতিক কোনও জনসভায় যোগ দিলেন তৃণমূল নেত্রী। আলিপুরদুয়ারের প্যারেড গ্রাউন্ড থেকে রাজীবকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কেউ কেউ এদিক ওদিক দৌড়ে বেড়াচ্ছে। যেতে দিন। যে বেশি দুর্নীতি করেছে, সে তো পালাবেই। আমি সবাইকে জানি, কে কী করেছে। ওদের লম্ফ-ঝম্ফ সব বন্ধ হয়ে যাবে। বিধানসভার পরে দেখব।’’

রাজীবের পাশাপাশি দলত্যাগীদের নিশানা করে মমতা বলেন, ‘‘যাঁরা লোভী এবং যাঁরা ভোগী, আমরা তাড়ানোর আগেই তাঁরা চলে গিয়েছেন বিজেপিতে। চলে যান। কেউ কেউ ভয়ে পালাচ্ছে। বিজেপিতে গিয়েছ তো? যখন লেজে আগুন দিয়ে দেবে, তখন লোকে বলবে লেজপোড়া বিজেপি।’’

মমতার অভিযোগের পরেই রাজীব বলেছিলেন, গুড়াপের সভা থেকে জবাব দেবেন। সেই সভা পাল্টা তৃণমূলের দিকেই অভিযোগ তুলে বলেছেন, ‘‘কোন কোন তৃণমূল নেতার কাছ থেকে সুপারিশ এসেছিল, সেই সব তথ্য আমার কাছে আছে। প্রয়োজনে সব দিয়ে দেব।’’

আরও পড়ুন: বিজেপি নাকি ‘‌তৃণমূলের বি–টিম’‌? প্রশ্ন উঠতেই দরজা বন্ধ করল গেরুয়া শিবির

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest