আগামিকাল (বুধবার) মনোনয়নপত্র জমা দেবেন। তার আগে আজ (মঙ্গলবার) নন্দীগ্রামে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পূর্ব মেদিনীপুরের হাইপ্রোফাইল কেন্দ্রে পৌঁছানোর পর কমপক্ষে চারটি সাংগঠনিক বৈঠক সারবেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো।
কৃষিজমি রক্ষার আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর আগমন ঘিরে চূড়ান্ত উন্মাদনায় ফুটছে আন্দোলনের মাটি। দুপুরে তাঁর কপ্টার নন্দীগ্রামের বটতলা হেলিপ্যাড ছোঁয়ার কথা। এদিন রাত পর্যন্ত দলীয় নানা কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। হলদিয়া মহকুমাশাসকের দপ্তরে তাঁর মনোনয়ন। নন্দীগ্রাম থেকে মমতা লড়ছেন বলে বাড়তি উচ্ছ্বাস এখানকার মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছে। প্রচারে মমতা নেমে পড়তেই নন্দীগ্রামেও ঝড় তুলেছে তাঁর দল।
দলনেত্রীকে স্বাগত জানাতে ইতিমধ্যেই অস্থায়ী হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডের আশেপাশে লাগানো হয়েছে ঘাসফুল প্রতীকের বেশ কিছু পতাকা। প্রস্তুত ছোট্ট সভামঞ্চ। সামনের খোলা অংশে কয়েক হাজার মানুষের বসার ব্যবস্থা হয়েছে। নন্দীগ্রাম জমি আন্দোলনের নেতা আবু তাহের জানালেন, নিছকই কর্মীসভায় যোগ দেবেন দলনেত্রী। বুথ কমিটি, অঞ্চল কমিটি, ত্রিস্তর পঞ্চায়েত সদস্য, শিক্ষক সংগঠন, শ্রমিক সংগঠনের প্রায় ৮ হাজার নেতাকর্মীকে এই কর্মীসভায় ডাকা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
নন্দীগ্রামে মমতার সম্ভাব্য নির্বাচনী এজেন্ট তথা জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি শেখ সুফিয়ান বলেন, ‘আজ কমপক্ষে চারটি সাংগঠনিক বৈঠক করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ৫ মার্চ সরকারিভাবে নন্দীগ্রাম থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে ঘোষণা করার পর এই প্রথম নন্দীগ্রামে আসছেন তিনি।’
ইতিমধ্যে সভাস্থলের চারপাশে মোতায়েন হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। তবে এখনও কেন্দ্রীয় বাহিনী সেভাবে না আসায় সিভিক ভলেন্টিয়ার আর পুলিশ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সামাল দিচ্ছে সবটা। তবে অন্যান্য সময় দলনেত্রীর সভাকে কেন্দ্র করে রাস্তাঘাট যেভাবে দলীয় পতাকায় মুড়ে ফেলা হত, এখন তা আর নজরে আসছে না। তৃণমূল সূত্রে খবর, নির্বাচন কমিশনের কড়াকড়িতেই এ সবে রাশ টানা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘দিদি’কে টক্কর দিতে ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলেন ‘মোদীদাদা’
যদিও নন্দীগ্রামের সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডের কাছেই গোটা ছয়েক বড়বড় ফ্লেক্স ঝুলছে যেখানে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেওয়া ক্যাপশান জ্বলজ্বল করছে ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’। সেই সঙ্গে তৃণমূল নেত্রীর সাদামাটা একটি প্রমাণ সাইজের কাটআউট রয়েছে নন্দীগ্রাম শহরের প্রবেশ পথে। এছাড়াও চৌরঙ্গী রোডে ঢোকার মুখেও একই ধরনের কাটআউট রয়েছে।
তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, শিবরাত্রির দিন (আগামিকাল) হলদিয়ায় মনোনয়নপত্র জমা দেবেন মমতা। ইতিমধ্যে নন্দীগ্রামে কোন বাড়িতে থাকবেন, তা বেছে নেওয়া হয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত এক সেনাকর্মীর বাড়িতে নির্বাচনের সময় থাকবেন তৃণমূল সুপ্রিমো। যিনি রীতিমতো আপ্লুত।নন্দীগ্রাম থেকে কলকাতায় ফিরে দলের ইস্তেহার প্রকাশের কথা তৃণমূলনেত্রীর।
সেই কেন্দ্রে তাঁর প্রতিপক্ষ বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। যিনি পাঁচ বছর আগে তৃণমূলের টিকিটেই জিতেছিলেন। এবারও তিনিই জিতবেন বলে চূড়ান্ত আত্মবিশ্বাসী শুভেন্দু। এমনকী মমতাকে ন্যূনতম ৫০,০০০ ভোটে হারাবেন বলেও দাবি করেছেন।
যদিও রাজনৈতিক মহলের মতে, মুখে সেই দাবি করলেও আদতে মমতাকে হারানোর কাজটা বেশ কঠিন। মমতার ব্যক্তিগত একটা ক্যারিশ্মা আছেই। পাশাপাশি শুধু নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়েও বড়সড় চাল দিয়েছেন মমতা। সেই পরিস্থিতিতে ‘ইগোর’ লড়াইয়ে মমতা এক ইঞ্চিও জমি ছাড়বেন না বলে মত রাজনৈতিক মহলের।
আরও পড়ুন: আচ্ছে দিনে রান্নার গ্যাসের দাম ‘ডবল’, পেট্রল-ডিজেলের দাম বেড়েছে সাড়ে পাঁচ গুণ