‘করোনা’ আতঙ্ক! জ্বরে আক্রান্ত বৃদ্ধের মৃত্যু, মেডিকেল কলেজ চত্বরে ২ ঘণ্টা পড়ে থাকল দেহ

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

কলকাতা: জ্বর নিয়ে ভর্তি হতে আসা এক বৃদ্ধের মৃত্যু হল মেডিকেল কলেজ চত্বরে। মৃত্যুর পর রাস্তার উপরই দেহ পড়ে রইল ঘন্টা দুয়েক। আতঙ্কে ধারেকাছে ঘেঁষলেন না কেউ।

করোনা অতিমারির বর্তমান পরিস্থিতিতে সদ্য কোভিড হাসপাতাল হিসেবে কাজ শুরু করা কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে বৃহস্পতিবার দুপুরে যা ঘটল, সাম্প্রতিক অতীতে তার নজির খুঁজে পাচ্ছেন না স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত অনেকেই। শ্বাসকষ্টের রোগী এক বৃদ্ধের মৃত্যুর পরে হাসপাতালের প্রশাসনিক কার্যালয়ের কাছে ঘণ্টাখানেক পড়ে রইল তাঁর দেহ। বৃদ্ধ আদৌ করোনায় মারা গিয়েছেন কি না, সেটা না-জেনেই সংক্রমণের আশঙ্কায় তাঁকে ছুঁয়ে দেখলেন না কেউ। করোনা সংক্রমণের প্রথম দিকে এম আর বাঙুরে এমন অব্যবস্থার অভিযোগ উঠেছিল। তা থেকে স্বাস্থ্য ভবন কোনও শিক্ষা নিয়েছে কি না, এ দিনের ঘটনায় সেই গুরুতর প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।

বৃদ্ধের ছেলের আরও প্রশ্ন, কলকাতা মেডিক্যাল যে হেতু কোভিড হাসপাতাল, তাই কেউ করোনায় আক্রান্ত হলেও তো পরিষেবা পাওয়ার কথা। সেখানে কেন সংক্রমণের আশঙ্কায় কেউ রোগীকে ছুঁয়ে দেখবেন না?

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রের খবর, ডায়রিয়া এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা হওয়ায় এ দিন বৃদ্ধকে প্রথমে বেলেঘাটা আইডি-তে নিয়ে গিয়েছিলেন ছেলে। সেখান থেকে তাঁকে পাঠানো হয় কলকাতা মেডিক্যালে। হাসপাতালের প্রশাসনিক কার্যালয়ের এক আধিকারিক জানান, বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ বাবাকে নিয়ে প্রথমে সুপার স্পেশ্যালিটি ব্লকের (এসএসবি) ফিভার ক্লিনিকে যান ছেলে। সেখান থেকে রোগীকে জরুরি বিভাগে ভর্তির টিকিট করার জন্য বলা হয়। সেই পর্ব মিটিয়ে ‘সিভিয়র অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইলনেস’ (সারি) থাকা রোগীদের জন্য নির্দিষ্ট গ্রিন বিল্ডিংয়ে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যান বৃদ্ধ। 

আরও পড়ুন: খসে পড়ছে একে একে নক্ষত্র! প্রয়াত বিশিষ্ট সাহিত্যিক দেবেশ রায়

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এসএসবি ব্লক থেকে জরুরি বিভাগে বাবাকে পাঁজাকোলা করে নিয়ে যাচ্ছিলেন ছেলে। আবার জরুরি বিভাগ থেকে গ্রিন বিল্ডিংয়ের পথেও ওই ভাবে যাচ্ছিলেন। গ্রিন বিল্ডিংয়ে যাওয়ার পথে প্রশাসনিক কার্যালয় এবং ইডেন বিল্ডিংয়ের মাঝের রাস্তায় বৃদ্ধকে নামিয়ে ছেলে যখন জিরোচ্ছিলেন, সেই সময়েই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। সূত্রের খবর, ইডেন বিল্ডিং লাগোয়া ফুটপাতে প্রায় ঘণ্টাখানেক পড়ে ছিল বৃদ্ধের দেহ। হাসপাতালের একাধিক কর্মী এলেও কেউই মরদেহের কাছে যাওয়ার সাহস করেননি। সব মিলিয়ে প্রায় ঘন্টা দুয়েক পড়েছিল দেহটি। তারপর মৃতের ছেলে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন তাঁর বাবাকে। একটি শববাহী  গাড়ির ব্যবস্থা করে দেহ হাসপাতাল থেকে বের করে নিয়ে চলে যান তিনি।

কিন্তু কেন অসুস্থ রোগীকে এক বিভাগ থেকে অন্য বিভাগে পাঁজাকোলা করে নিয়ে যেতে হবে, কেনই বা  কোভিড হাসপাতাল চত্বরে এ ভাবে মৃতদেহ পড়ে থাকবে এবং সর্বোপরি হাসপাতাল কর্মীদের একাংশ কী ভাবে এত ‘অমানবিক’ হতে পারেন— সেই সব প্রশ্নের উত্তর মেলেনি  কর্তৃপক্ষের তরফে।

হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের আধিকারিকদের বক্তব্য, সমস্যা আরও রয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, মৃতদেহ প্যাকিং করার লোক পাওয়া যাচ্ছে না। চিকিৎসাধীন রোগীদের খাবার দেওয়া, তাঁদের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে পরিজনেদের অবহিত করা, এ সব প্রশ্নে পরিজনেদের অভিযোগের তালিকা দীর্ঘতর হচ্ছে।

আরও পড়ুন: কোভিড মোকাবিলা নিয়ে বিল গেটসের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স নমোর, ভ্যাকসিন নিয়ে জরুরি আলোচনা

Gmail 1
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest