প্রয়াত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। বয়স হয়েছিল ৭৮। বুধবার গভীর রাতে দক্ষিণ কলকাতায় একটি বেসরকারি নার্সিং হোমে তাঁর মৃত্যু হয়। হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন তিনি। রাতেই প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে টুইট করে সভাপতির প্রয়াণের কথা জানানো হয়।সোমেন মিত্রের প্রয়াণে বাংলার রাজনীতিতে একটা অধ্যায়ের অবসান হল। মৃত্যুকালে স্ত্রী ও এক পুত্রকে রেখে গিয়েছেন প্রবীণ এই কংগ্রেস নেতা।
আমহার্স্ট স্ট্রিটের ‘ছোড়দা’ নামে কংগ্রেস রাজনীতিতে বেশি পরিচিত ছিলেন সোমেনবাবু। প্রয়াত বরকত গনিখান চৌধুরীর শিষ্য বলা হত তাঁকে। অধুনালুপ্ত শিয়ালদহ কেন্দ্র থেকে বেশ কয়েক বার বিধায়ক হয়েছিলেন। ২০০৭-’০৮ সালে কংগ্রেস ছেড়ে প্রথমে প্রগতিশীল ইন্দিরা কংগ্রেস গঠন করেন সোমেনবাবু। তার পরে যোগ দেন তৃণমূলে। ডায়মন্ডহারবার কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের সাংসদ হয়েছিলেন ২০০৯ সালে। আবার ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটের আগে কংগ্রেসে ফিরে আসেন তিনি।
আরও পড়ুন : ভারতীয় পাইলট হিসাবে প্রথম রাফাল ওড়ালেন কাশ্মীরের ছেলে হিলাল আহমেদ রাঠের
দক্ষিণ কলকাতার নার্সিং হোমে থাকাকালীন সোমেনবাবুর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজখবর করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত রবিবার ফোন করে সোমেনবাবুর স্বাস্থ্যের খোঁজ নেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে ফুল পাঠিয়ে তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনাও করেন। সোমেনবাবুর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় ছিল লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরীরও।
WBPCC President Somen Mitra has breathed his last, a short while ago. As we struggle to come to terms with this immense loss, all our prayers and thoughts are with Dada’s family.
May his soul rest in peace ? pic.twitter.com/6T207fyt2A
— West Bengal Congress (@INCWestBengal) July 29, 2020
পুরো নাম সোমেন্দ্রনাথ মিত্র। তবে তাঁকে পরিচিতি দিয়েছিল সোমেন মিত্র নাম। আর কংগ্রেসের অন্দরে ছোড়দা। রাজনীতিতে হাতেখড়ি ছাত্রবেলায়, ছাত্র রাজনীতির পথ ধরে ষাটের দশকের শেষে কংগ্রেসে যোগ দেন। তারপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাননি সোমেন মিত্র।
২০০৯-র লোকসভা ভোটে মমতা সব থেকে বড় চমক দেন সোমেনকে লোকসভায় নিয়ে গিয়ে। তৃণমূলের টিকিটে ছোড়দা ভোটে লড়েন ডায়মন্ডহারবার আসন থেকে। হারিয়ে দেন ৪ বারের সাংসদ সিপিএমের শমীক লাহিড়িকে। কিন্তু ২০১৪-য় ফের তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে ফেরেন সোমেন। তার আগে দেন সাংসদ পদে ইস্তফা। ২০ বছর পর ২০১৮-র ২২ সেপ্টেম্বর ফের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হন তিনি। আমৃত্যু সেই পদেই ছিলেন তিনি।
২০১১-য় ৩৪ বছর পর রাজ্যে ঘটে রাজনৈতিক পালাবদল। সিপিএমকে সরিয়ে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। ২০০৯ সালে সোমেন তাঁর প্রগতিশীল ইন্দিরা কংগ্রেস মিশিয়ে দেন তৃণমূলের সঙ্গে। সেই তৃণমূল, শোনা যায়, যার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমেনের জন্যই কংগ্রেস ছেড়েছিলেন। প্রদেশ সভাপতি নির্বাচনের লড়াইয়ে তৎকালীন যুব কংগ্রেস নেত্রী মমতাকে হারিয়ে দেন সোমেন। এরপর কংগ্রেস ছাড়েন মমতা। নির্বাচনে বিপর্যয়ের দায় নিয়ে সোমেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন ১৯৯৮ সালে।
আরও পড়ুন : Friendship Day 2020: বন্ধুত্ব হোক আরও দৃঢ়, জেনে নিন দিনটি সম্পর্কে অজানা নানা তথ্য…