কাটল না বৈশাখীর গোঁসা, মিছিলে নেই শোভন, BJP-র হুঙ্কার পরিণত হল বিড়ম্বনায়

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

জানুয়ারির প্রথম সোমবার শক্তি আস্ফালনের হুঙ্কার দেওয়া হয়েছিল। তা তো হলই না। উলটে বৈশাখী বন্ধোপাধ্যায়ের গোঁসা এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়ের অনুপস্থিতিতে রীতিমতো অস্বস্তি পড়ে গেলেন বিজেপি নেতারা। সেই বিড়ম্বনা এড়াতে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মরিয়া চেষ্টা করলেন তাঁরা।

ভোটের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে সপ্তাহ দুয়েক আগেই রাজ্যে ঘুরে গিয়েছেন অমিত শাহ। ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে দলীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়ার বার্তা দিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু খিদিরপুরে বিজেপি-র পূর্ব নির্ধারিত মিছিলে ঠিক তার উল্টো ছবিটাই ধরা পড়ল। যে মিছিলকে গেরুয়া শিবিরে শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘গ্র্যান্ড’ লঞ্চ হিসেবে ধরা হচ্ছিল, ‘মান-অভিমান দেখাতে গিয়ে’ নিজেরাই তাঁরা তা ভেস্তে দিলেন। তাতে শোভন-বৈশাখীর কতটা ক্ষতি হল, তা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও, নির্বাচনের আগে এই মিছিল বিজেপি-র বিড়ম্বনা বাড়াল।

শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে জনসমর্থন গড়ে তোলার লক্ষ্যে সোমবার রাস্তায় নামলেও, দলীয় সূত্রে খবর, সোমবার বিজেপির এই মিছিলের আসল উদ্দেশ্য ছিল গেরুয়া শিবিরে শোভন-বৈশাখীকে প্রতিষ্ঠা দেওয়া। কারণ দেড় বছর আগে দলে যোগ দিলেও, এখনও পর্যন্ত বিজেপির কোনও কর্মসূচিতে সক্রিয় ভাবে অংশ নিতে দেখা যায়নি তাঁদের। কলকাতা জোনে শোভনকে পর্যবেক্ষক এবং বৈশাখীকে সহ-আহ্বায়ক নিযুক্ত করে গতমাসে সেই গেরো কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেন বিজেপি নেতৃত্ব। আশা ছিল, এর পর হয়ত এই দু’জনকে নিয়ে আর কোনও প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হবে না তাঁদের।

কিন্তু মিছিল ঘিরে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি যখন তুঙ্গে, সেইসময় রবিবার রাতেই তাল কাটে। ভুবনেশ্বর থেকে ফিরেই মিছিলে যোগ দেওয়া নিয়ে বেঁকে বসেন বৈশাখী। কলকাতা জোনের কমিটিতে তাঁর পাশাপাশি শঙ্কুদেব পণ্ডাকে কেন সহ-আহ্বায়কের পদ দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাতেই তাঁদের গোলপার্কের বাড়িতে ছুটে যান দেবজিৎ সরকার, রাকেশ সিংহরা। যান শঙ্কুদেব নিজেও। কিন্তু বৈশাখী সাফ জানিয়ে দেন, শঙ্কুদেব থাকলে মিছিলে অংশ নেবেন না তিনি। বৈশাখী বেঁকে বসায় শোভনের মিছিলে যোগ দেওয়া নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়।

আরও পড়ুন: আগামী ২৪ ঘণ্টায় কলকাতা-সহ সব জেলায় নামবে তাপমাত্রা, শীতের আমেজেই বর্ষবরণ

সোমবার সকাল থেকে হেস্টিংসে বিজেপির কার্যালয়ে ছিলেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়ও সেখানে এসে উপস্থিত হন। সেখানে পালা করে ফোনে শোভন, বৈশাখীর মান ভাঙানোর প্রচেষ্টা শুরু হয় বলে দলীয় সূত্রে জানা যায়। জানা গিয়েছে, শেষমেশ হস্তক্ষেপ করতে হয় এ রাজ্যে বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ-পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেননকেও।

কিন্তু শত চেষ্টা করেও তিন জনের কারও মান ভাঙানো যায়নি। এ দিকে বাইরে তখন আবেগে ভাসছেন বিজেপি সমর্থকরা। তাই শেষমেশ শোভন, বৈশাখী এবং শঙ্কুদেবকে ছাড়াই সাড়ে ৩টেয় মিছিল বার হয়। তাতে যোগ দেন মুকুল, এ রাজ্যে বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহ এবং অন্যান্যরা। প্রথমে মিছিলে না থাকার সিদ্ধান্ত নিলেও, পরে মিছিলে যোগ দেন দেবজিৎও। শোভন-বৈশাখীর মিছিলে না থাকা নিয়ে প্রশ্ন করলে কৈলাস বলেন, ‘‘মিছিলে কে এল, কে না এল, তা বড় কথা নয়। এটা বিজেপির মিছিল। আমার আমন্ত্রণ রয়েছে, তাই যাচ্ছি।’’

সোমবার খিদিরপুরের অরফ্যানগঞ্জ রোড থেকে শুরু হয়ে দক্ষিণ কলকাতার বিস্তীর্ণ অঞ্চল ঘুরে মুরলীধর লেন স্ট্রিটে বিজেপির রাজ্য দফতরে যাচ্ছে বিজেপির মিছিল। লালবাজার থেকে মিছিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, ‘‌৭০টি গাড়ি, এত বিশাল বড় রুট, এত মানুষ নিয়ে মিছিলের জেরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়বে কলকাতা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে করতে রাত হয়ে যাবে।’

এ দিন মিছিল চলাকালীন কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও মুকুল রায়ের গাড়িতে উড়ে আসে জুতো। মিছিলের পথে তৃণমূলের মঞ্চও ছিল। দুই দলের কর্মীদের মধ্যে সামান্য উত্তেজনা তৈরি হয়। তবে দ্রুত পরিস্থিতি সামাল দেয় পুলিশ। বিজেপি-র দাবি, তৃণমূলের কর্মীরা জুতো, ঢিল ছুড়েছে। যদিও তৃণমূল কর্মীদের দাবি, বিজেপির র‌্যালি থেকেই তাদের দিকে জুতো আসে। সেই জুতো তারা ফেরত পাঠিয়ে দেয় বিজেপির র‌্যালির দিকেই।

আরও পড়ুন: ‘তৃণমূলে সবাই চোর হলে তোর বাবা কী?’, নাম না করে শুভেন্দুকে কল্যাণের জবাব

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest