দল বদলের জল্পনা জিইয়ে রেখে হলদিয়ায় ‘দলতন্ত্র’- র বিরুদ্ধে সোচ্চার শুভেন্দু

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

সরাসরি দলত্যাগ বা বিধায়ক পদ ত্যাগের কোনও ঘোষণা করলেন না। তবে হলদিয়ার সভা থেকে শুভেন্দু অধিকারী বুঝিয়ে দিলেন, তিনি আগামিদিনে কোন পথে চলেছেন। হলদিয়ার ‘অরাজনৈতিক সভা’ থেকে পরোক্ষে রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে ‘বহিরাগত’ তত্ত্ব এবং ‘গণতন্ত্র’ নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করলেন তিনি।

মঙ্গলবার প্রয়াত স্বাধীনতা সংগ্রামী সতীশ সামন্তের জন্মবার্ষিকীর কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন শুভেন্দু। সেখানেই তিনি সরাসরি নাম না করে তৃণমূলের ‘বহিরাগত’ তত্ত্বকে আক্রমণ করেন। তাঁর কথায়, ‘‘জওহরলাল নেহরু প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সতীশ সামন্তকে সব সময় সমীহ করে চলতেন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভারত থেকে যে সব প্রতিনিধি দল গিয়েছিল, সে দলে সতীশ বাবু প্রতিনিধিত্ব করতেন। সতীশ বাবু এগিয়ে গেলেই প্রধানমন্ত্রী উঠে দাঁড়াতেন। সতীশবাবু কখনও জওহরলাল নেহরুকে বহিরাগত ভাবতেন না। আর পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু কখনওই সতীশবাবুকে কখনও হিন্দিভাষী ভাবতেন না। এটাই ভারতবর্ষ।”

শুভেন্দু আরও বলেন, “রাজনৈতিক পথ, মত যা-ই ঘটুক না কেন, যা-ই স্থিতাবস্থা থাকুক না কেন, যে পদে আমরা থাকি না কেন, আমাদের সবচেয়ে বড় পরিচয়, আমরা প্রথম ভারতীয়, তার পরে আমরা বাঙালি।”

নন্দীগ্রাম আন্দোলনের অরাজনৈতিক রূপ তুলে ধরে সেখানকার বিধায়ক বলেন, ‘নন্দীগ্রামের আন্দোলন কোনও একটা দলের ছিল না, কোনও একটা ব্যক্তির ছিল না। সেই আন্দোলন ছিল মানুষের আন্দোলন। তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার তৈরির সময় যে লড়াই হয়েছিল তারই ছোট সংস্কার ছিল নন্দীগ্রাম আন্দোলন। মানুষ জয়যুক্ত হয়েছে’।  অর্থাৎ, তৃণমূলের নেতানেত্রীরা যে ভাবে মমতাকেই নন্দীগ্রাম আন্দোলনের ‘কৃতিত্ব’ দিয়ে থাকেন, সেই দাবিকেই নস্যাৎ করলেন শুভেন্দু।

আরও পড়ুন: অলৌকিক ঘটনা! নদীতে ভেসে আসছে সোনা-রুপোর গয়না, হতবাক বাসিন্দারা

শুভেন্দুর শপথ, ‘আমরা ভাল কাজের জন্য লড়বো। দেশমাতৃকাকে বন্দন করবো। বেকার যুবকের কর্মসংস্থান, কৃষকের অধিকার আর মিলেমিশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাই হবে আমাদের একমাত্র মত আর পথ’।

এর পরই নাম না করে তৃণমূলে রাজ্যে দলতন্ত্র কায়েমের অভিযোগে বিদ্ধ করেন শুভেন্দু অধিকারী। বলেন, ‘সংবিধানে যে ফর দ্য পিপল, বাই দ্য পিপল, অফ দ্য পিপল ভাবনার কথা লেখা রয়েছে তা পশ্চিমবঙ্গে আমাদের ফিরিয়ে আনতেই হবে। কেন ফর দ্য পার্টি, বাই দ্য পার্টি, অফ দ্য পার্টি ব্যবস্থা থাকবে? গণতন্ত্রের পক্ষে মানুষকে নিয়ে এই লড়াইতে আপনাদের সেবক শুভেন্দু অধিকারী থাকবে। আর যারা আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন শুনে রাখুন। আমি অনেক লড়াইয়ের সাক্ষী। এখানে আসতে আমাকে বাধা দেওয়া হয়েছে। বিগত দিনে এখানে আমার ওপর আক্রমণ হয়েছে। একবার নয় নন্দীগ্রাম – হলদিয়া – খেজুরি – জঙ্গলমহল মিলে ১১ বার আমাকে আক্রমণ করেছে। কিন্তু জনশক্তি, যুবশক্তি, মাতৃশক্তি আশীর্বাদ আমাকে ঠিক জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে’।

শুভেন্দু এদিন আরও একবার মনে করিয়ে দেন তিনি মানুষের নেতা, জনতার নেতা। এটাই তাঁর শক্তি। তাই বহু ‘প্রতিকূলতা’কে দূরে ঠেলেও প্রায় ১০ হাজার মানুষ এদিন এসেছেন । তাঁর কথায়,”কেউ উৎসাহে এসেছেন, কেউ অনুপ্রাণিত হয়ে এসেছেন, আবার কাউকে হয়তো বলা হয়েছে শুভেন্দুর অবস্থানটা এখনও স্পষ্ট নয়, তাই যাওয়া যাবে না। কিন্তু না শুনে আপনারা চলে এসেছেন।”

এক প্রকার হুঁশিয়ারি দিয়েই এদিন শুভেন্দু বলেন, তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেসের কোনও পদাধিকারী এই মানুষকে আসতে অনুপ্রাণিত করেনি। তাই তাঁকে ‘ব্যক্তি আক্রমণ’ করে রোখা যাবে না। গণতান্ত্রিক লড়াইয়ে চটে ঘেরা জায়গায় বোতাম টিপে মানুষ জবাব দেবে। কী বলতে চাইলেন শুভেন্দু, ইঙ্গিত স্পষ্ট।

মঙ্গলবারের এই ‘ইঙ্গিতপূর্ণ’ বক্তব্যের পর রাজ্য রাজনীতিতে ওয়াকিবহালরা দাবি করছেন, শুভেন্দুর বিজেপি-তে যোগ দেওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। তাঁদের দাবি, চলতি সপ্তাহেই বিজেপি-তে যোগ দিতে পারেন। যদিও শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ মহল থেকে সে বিষয়ে পাকাপাকি কিছু জানানো হয়নি।

আরও পড়ুন: শনিবার শাহের উপস্থিতিতে বিজেপিতে যোগ শুভেন্দুর! আগেই বরাদ্দ হল কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা এবং বুলেটপ্রুফ গাড়ি

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest