রবিবার দুপুরে ঝাড়গ্রামে ছিল শুভেন্দুর সভা । ‘আন্তরিক জাতীয়তাবাদী গৈরিক অভিনন্দন’ জানিয়ে বক্তব্য শুরু করেন তিনি। আলাদা করে দিলীপ ঘোষের নাম করে তাঁকে সম্মান জানান। ঝাড়গ্রামের মানুষের সঙ্গে নিজেকে একাত্ম করে শুভেন্দু বলেন, অখণ্ড মেদিনীপুরের ভূমিপত্র তিনি।
এর পরই তিনি তৃণমূলকে আক্রমণ করেন। তৃণমূলকে তোলাবাজ ভাইপোর পার্টি বলে চিহ্নিত করেন। বলে দেন– আমফানের টাকা চোর, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা চোর তৃণমূলকে হারাতে হবে। তাঁর টাকা নেওয়ার ফুটেজ সরিয়ে দিয়েছে বিজেপি। আপাতত সিবিআই কিংবা ইডির ঝামেলায় তিনি পড়বেন না বলেও মনে করছেন অনেকে। কারণ সিবিআই জবাবদিহি করে প্রধানমন্ত্রীর অফিসের কাছে।
শুভেন্দু সমবেত জনতাকে মনে করিয়ে দেন, বাম আমলে এখানকার অত্যাচারিতদের পাশে কী ভাবে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। তাঁর ইঙ্গিত, যেন এখনও পরিস্থিতি সেইরকমই চলছে বলে তিনি আবার এখানকার মানুষদের রক্ষার বাসনায় এখানে এসেছেন।
আরও পড়ুন: শেষকৃত্যের সময় ভেঙে পড়ল শ্মশানের ছাদ! উদ্ধার ১৮টি দেহ, মৃত বাড়ার আশঙ্কা
এর পরেই আক্রমণাত্ম হয়ে ওঠেন তিনি। বলেন, তৃণমূলকে এখানে চারটি আসনেই হারাতে হবে। এখানে দু’টি জেলা পরিষদ তৃণমূল অন্যায় ভাবে দখল করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, বাংলায় এবং দিল্লিতে একই দলের সরকার হবে। বলেন, পিসি-ভাইপোর কোম্পানি তাঁদের অপমান করেছে। এখান থেকে কাঁথির উদ্দেশ্যে চলে যান শুভেন্দু অধিকারী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জঙ্গলমহলে ধাক্কা খেল শুভেন্দুর সভা। মাত্র হাজার-বারোশোর একটি জমায়েতে বক্তব্য রেখেছেন তিনি। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে এটিই জঙ্গলমহলে দিলীপ ঘোষ এবং শুভেন্দু অধিকারীর প্রথম যৌথ সভা ছিল। গোপীবল্লভপুর ২ ব্লকে এই সভার আয়োজন হয়েছিল। সভাটির নাম ‘যোগদানমেলা’ দেওয়া হলেও সে অর্থে যোগদান হয়নি বললেই চলে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, জঙ্গলমহলে ৫০ বছরের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে আরএসএসের। তবে বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় শুভেন্দু তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছেন। জঙ্গলমহলের মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতাই সব। এই কারণেই আজকের জনসভায় লোক ছিল উল্লেখযোগ্য ভাবে কম।
অনেকে বলছেন বিজেপি শুরুটা যেভাবে করেছিল সেটা বেশ ভালো ছিল। কিন্তু দ্রুত কুরসী দখলের নেশায় বাংলার বাইরে থেকে আগত নেতারা সাদা-কালোর মধ্যে ফারাক করেননি। ভোট টানতে পারে এমন নেতা তাদের চায়। তাতে হাজার দুর্নীতি থাকলেও তাদের আপত্তি নেই। সেই হিসাবে এমন নেতা শিকারে বাংলা চষে বেড়াচ্ছেন শাহ-নাড্ডা । পূর্ণ বিজেপি কর্মীরা বলছেন, এইভাবে বিজেপি চললে তাঁর দশ তৃণমূলের মতোই হবে।
আরও পড়ুন: মহিলাদের উপর অপরাধের নিরিখে ফের শীর্ষে উত্তরপ্রদেশ, ভাল জায়গায় মমতার বাংলা