বাবা পুলিশকর্মী। তাও উঁচু তলার নয়। চেয়েছিলেন মেয়ে আইপিএস অফিসার হবে। কিন্তু বাবার সেই ইচ্ছে মেয়ের মানসিক চাপের কারণ হয়ে উঠেছিল। চাপ নিতে না পেরে মঙ্গলবার দুপুরে ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে ১৩ বছরের এক কিশোরী।
আমহার্স্ট স্ট্রিটের পুলিশ আবাসনে থাকা কিশোরী অদ্রিজা মণ্ডলের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে নেমে এমনটাই মনে করছেন তদন্তকারীরা। কিশোরীর সুইসাইড নোটেও মিলেছে একই ইঙ্গিত।
আরও পড়ুন : এরকমও হয়! রোগীর পেট কেটে নগদ ৩২ হাজার টাকা বের করলেন ডাক্তার
আমহার্স্ট স্ট্রিট থানা চত্বরের পুলিশ আবাসনের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এ দিন দুপুরে তাঁরা উপর থেকে ভারী কিছু পড়ার আওয়াজ শুনতে পান। বাইরে বেরিয়ে দেখা যায়, ১০ তলা আবাসনের নীচে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে ওই আবাসনেরই বাসিন্দা অদ্রিজা মণ্ডল। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তদন্তকারীরা সাদা কাগজে কালো কালিতে হাতে লেখা একটি চিরকুট পেয়েছেন। তলায় অদ্রিজার স্বাক্ষর। ইংরেজিতে লেখা ওই চিরকুটকে সুইসাইড নোট বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। সেখানে ওই কিশোরী অবসাদে মৃত্যুর কথা লিখেছে।
বউবাজারের একটি স্কুলে পড়ত সে। লেখাপড়ায় ভালই ছিল। বড় হয়ে আইপিএস হওয়ার ইচ্ছে ছিল অদ্রিজার। কিন্তু করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ স্কুল। ফলে পড়াশোনার ক্ষেত্রে অনলাইনই ভরসা। মোবাইলেও অনেকটা সময় কাটাত সে। কিন্তু ইদানীং নাকি এইভাবে পড়াশোনা করে পরীক্ষা দিতে ভাল লাগছিল না কিশোরীর। কারণ তার মনে হচ্ছিল, এভাবে পড়লে তার স্বপ্নপূরণ হবে না। সেসব নিয়ে মায়ের সঙ্গে কথা কাটাকাটিও হয়েছিল বলে খবর। মায়ের কাছে বকাও খেয়েছিল। তারপরই মঙ্গলবার এই কাণ্ড ঘটে।
চিঠির এই বয়ান থেকে তদন্তকারীদের ধারণা, পড়াশোনার চাপ, পরীক্ষার ফল আশানুরূপ না হওয়া এবং কোথাও কিশোরীর উপর আইপিএস হওয়ার চাপই তার মানসিক অবসাদের কারণ ছিল। তদন্তকারীরা যদিও শুধুমাত্র ওই চিঠির উপর ভরসা করতে চাইছেন না। তাঁরা কিশোরীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি ময়নাতদন্তের রিপোর্ট-সহ সব দিক খতিয়ে দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চান।
আরও পড়ুন : গাছের সঙ্গে বিয়ে! ধুমধাম করে প্রথম বিবাহবার্ষিকী পালন করলেন দুই সন্তানের মা