২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের রণাঙ্গন প্রায় প্রস্তুত। বিজেপি , তৃণমূল দুই যুযুধান শিবিরের লড়াইতে কার্যত ভোট ময়দানের পারদ তুঙ্গে। এমন এক পরিস্থিতিতে নিজের ঘর গোছাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে বিজেপি শিবির। রাজ্য নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে যখন জেরবার বাংলার গেরুয়া শিবির তখন যুব মোর্চা বনাম রাজ্য নেতৃত্বর তরজার খবর সামনে আসছে।
এর আগে মতান্তরের জেরে বাতিল হয়েছিল যুব মোর্চার ২৯ জন জেলা সভাপতির তালিকা। এ বার যুব মোর্চার রাজ্য কমিটি ঘোষণা করার পরে সেখানেও পরিবর্তনের সম্ভাবনা নিয়ে টানাপড়েন শুরু হয়েছে। স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে নতুন কমিটির বৈঠক। যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি সাংসদ সৌমিত্র খান রাজ্য কমিটি ঘোষণা করেন গত রবিবার। ৬ সেপ্টেম্বর নতুন কমিটির বৈঠকও ডাকা হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ সৌমিত্র টুইট করেন, ‘নতুন কমিটির কোনও মিটিং এখন হবে না।’ কিন্তু ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই তা মুছে দেওয়া হয়। যদিও দিল্লি থেকে ফোনে সৌমিত্র বলেন, ‘‘রাজ্য কমিটিতে কিছু নাম সংযোজন হবে। তার পর বৈঠক হবে।’’
যুব মোর্চার রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পদ ঘিরে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে সৌমিত্রের মতান্তরের সূত্রপাত। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের পছন্দ অনুযায়ী প্রকাশ দাস নামে এক জনকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। বিজেপির একটি সূত্রের দাবি, সৌমিত্র, কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, আর এক কেন্দ্রীয় নেতা শিবপ্রকাশ— সকলেরই এ ব্যাপারে আপত্তি ছিল। কৈলাসের পছন্দ ছিল মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ শঙ্কুদেব পাণ্ডা এবং অনুপম হাজরা। অনুপমকে সহসভাপতি করা হলেও শঙ্কুকে কমিটিতেই রাখা হয়নি। সদ্য ঘোষিত রাজ্য কমিটি কেন্দ্রীয় নেতাদের সকলের পছন্দ হয়নি।
আরও পড়ুন: ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে মেট্রো চালুর সম্ভাবনা, থাকছে টোকেন, স্টেশন বন্ধ কনটেনমেন্ট জোনে
সৌমিত্রকে দিল্লিতে তলব করে সে কথা জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতেই ৬ তারিখের বৈঠক বাতিল করা হয়েছে। বিজেপির একটি সূত্রের দাবি, রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পদে শঙ্কুর নাম যুক্ত করার পরে বৈঠক ডাকা হবে। দিলীপ ঘোষ অবশ্য এ দিন বলেন, ‘‘কোনও সংযোজন হবে কি না, আমি জানি না। কেন্দ্রীয় নেতাদের কারও সঙ্গে এ বিষয়ে আমার কোনও কথা হয়নি।’’
এর আগে গত শুক্রবার সৌমিত্র যুব মোর্চার ২৯টি জেলার সভাপতির নামের তালিকা প্রকাশ করেন। তা নিয়েও দিলীপ-সৌমিত্র মতান্তরের জেরে তা বিজেপির মিডিয়া হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দিয়েই এক মিনিটের মধ্যে মুছে দেওয়া হয়। সৌমিত্র দাবি করেন, ‘‘ওটাই যুব মোর্চার ২৯টি জেলার সভাপতির নামের চূড়ান্ত তালিকা।’’ অন্য দিকে, দিলীপ বলেন, ‘‘ওটা চূড়ান্ত তালিকা নয়। তা ছাড়া, ওটা প্রকাশ করার ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত কিছু ত্রুটিও হয়েছে। তাই তুলে নেওয়া হয়েছে। পরে তালিকা চূড়ান্ত করে প্রকাশ করা হবে।’’
সৌমিত্র তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন মুকুলের হাত ধরে। ফলে এই দ্বন্দ্বকে দিলীপ-মুকুল সংঘাত হিসেবেও দেখছেন অনেকেই। শঙ্কুদেব যুব মোর্চার পদাধিকারী হলে রাজ্য বিজেপির গোষ্ঠী সমীকরণে মুকুলের পাল্লা ভারী হবে বলেও তাঁদের অভিমত।
বিষয়টি সামনে আসতেই শুক্রবার টুইটে বিজেপি নেতৃত্বকে বিঁধলেন তৃণমূল সাংসদ ও অভিনেত্রী নুসরাত জাহান।
Let's grab some Popcorn to see who wins this intra-party war between @KhanSaumitra and @DilipGhoshBJP. Match referee @KailashOnline please keep us updated!?https://t.co/VeaK5ypeUS
— Nusrat Jahan Ruhi (@nusratchirps) September 4, 2020
আরও পড়ুন: জিএসটি ক্ষতিপূরণ না পেলে কেন্দ্রের ওপরে ভরসাই চলে যাবে, মোদীকে চিঠি দিদির