সরকার বা প্রশাসন কীভাবে চালাতে হয় তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে শেখা উচিত নরেন্দ্র মোদীর— শুক্রবার একটি টুইটে রাজ্যের ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পের সঙ্গে কেন্দ্রের ‘আয়ুষমান ভারত’–এর তুলনা টেনে এভাবেই প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন টুইটে অভিষেক বলেন, ‘জাতি–ধর্ম–বর্ণ–শ্রেণি নির্বিশেষে পশ্চিমবঙ্গের সকল মানুষ এই পরিষেবায় উপকৃত। এটা আবার প্রমাণিত হল যে আজ যা বাংলা ভাবে তা আগামীকাল ভাবে ভারত।’ অভিষেক শুক্রবার টুইটারে লিখেছেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে নরেন্দ্র মোদীজি শিখে নেওয়া শুরু করতে পারেন, প্রশাসন কী ভাবে চালাতে হয়। এটাই সবচেয়ে ভাল সময়’।
আরও পড়ুন: AUS vs IND: আদানি গ্রুপের কয়লাখনি নিয়ে প্রতিবাদ সিডনির মাঠে, ঋণ দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন
স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সম্প্রসারণ ঘটিয়ে রাজ্যের সব নাগরিককে সরকারি স্বাস্থ্যবিমার আওতায় আনার কথা বৃহস্পতিবারই ঘোষণা করেছিলেন মমতা। অন্য কোনও রাজ্যের সরকার বা কেন্দ্রীয় সরকারও এই রকম সিদ্ধান্ত এখনও গ্রহণ করতে পারেনি। মমতার সরকারের এই সিদ্ধান্তকেই হাতিয়ার করেছেন অভিষেক। স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় সবাইকে নিয়ে আসার এই সিদ্ধান্ত দেখে মোদীর শিক্ষা নেওয়া উচিত বলে তিনি লিখেছেন।
প্রধানমন্ত্রী মোদী থেকে শুরু করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা থেকে শুরু করে বিজেপির অন্য নেতারা— সবাই পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে বার বার আক্রমণ করেছেন আয়ুষ্মান প্রসঙ্গে। ‘সঙ্কীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থে’ বাংলার মানুষকে মমতা কেন্দ্রের প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করছেন বলে তাঁরা তোপ দেগেছেন।
বৃহস্পতিবার মমতা ফের সে সব তোপের পাল্টা জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেন। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প যে সবাইকে বিমার আওতায় আনবে, আয়ুষ্মানে যে তা হয় না, সে কথা তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন। শুক্রবার অভিষেকও সেই সব কথাই আরও বিশদে লিখেছেন টুইটে।
স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প ২০১৬ সালে চালু হয়েছিল বাংলায়, কেন্দ্রের আয়ুষ্মান ভারত চালু হয়েছিল ২০১৮ সালে। মনে করিয়ে দিয়েছেন অভিষেক। স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় সবাই আসবেন, কেন্দ্রের প্রকল্পে তা হবে না— এ কথাও অভিষেক লিখেছেন। দুই প্রকল্প সম্পর্কে তুলে ধরা সেই তথ্যের ভিত্তিতে কেন্দ্রকে খোঁচা দিয়ে অভিষেক লিখেছেন, ‘এই তুলনা এটাই প্রমাণ করে যে, বাংলা যা আজ ভাবে, ভারত তা ভাবে কাল’।
তৃণমূল সাংসদ টুইটে এই তথ্যগুলি তুলে ধরেছেন— স্বাস্থ্যসাথী পরিষেবার সূচনা হয় ২০১৬–র ডিসেম্বর মাসে আর আয়ুষমান ভারত চালু হয় ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে। যেখানে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের ১০০ শতাংশ দেয় রাজ্য সরকার, সেই তুলনায় আয়ুষমান ভারতের জন্য মাত্র ৬০ শতাংশ অর্থ দেয় কেন্দ্র। পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি মানুষ স্বাস্থ্যসাথীর সুবিধা পান। কিন্তু দেশের যে সব রাজ্যে আয়ুষমান ভারত চালু হয়েছে, সেখানকার প্রতিটি বাসিন্দা সেই প্রকল্পের সুবিধা পান কিনা সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোনও তথ্য নেই কেন্দ্রের কাছে।
আরও পড়ুন: বাংলার বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির ‘ভদ্রলোক’ চেনার কয়েকটি সহজ পদ্ধতি